আন্তর্জাতিক ডেস্ক
‘ট্রাম্পের মন্তব্যে হতাশ’ রাষ্ট্রদূতের পদত্যাগ
ইউরোপীয় মিত্রদের নিয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যে হতাশ হয়ে পদ ছেড়ে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন এস্তোনিয়ার মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস ডি মেলভিল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের এক পোস্টে বন্ধুদের সঙ্গে কথোপকথনে তিনি নিজের অবসরের সিদ্ধান্ত এগিয়ে আনার কথা জানিয়েছেন বলে খবর ফরেন পলিসি ম্যাগাজিনের। ট্রাম্পের নীতিতে অসন্তোষ জানিয়ে এর আগেও বেশ কজন রাষ্ট্রদূত পদত্যাগ করেছিলেন; ২০১৫ সাল থেকে এস্তোনিয়ায় মার্কিন দূতের দায়িত্ব পালন করা মেলভিলের নামও সেই মিছিলে যুক্ত হলো, জানিয়েছে বিবিসি। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অধীনে কাজ করবেন না জানিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারিতে পদত্যাগ করেছিলেন পানামার মার্কিন রাষ্ট্রদূত জন ফিলে। তারও মাসখানেক আগে পদ ছেড়েছিলেন সোমালিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র মিশনের দায়িত্বে থাকা এলিজাবেথ শেকেলফোর্ড।
যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকারকে তার অগ্রাধিকার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ায় প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে চলে যাচ্ছেন, সেসময়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসনকে দেওয়া পদত্যাগপত্রে শেকেলফোর্ড এমনটাই বলেছিলেন বলে দাবি করেছিল ফরেন পলিসি ম্যাগাজিন। ফেসবুকে বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনায় মার্কিন প্রেসিডেন্টের সাম্প্রতিক বেশ কিছু মন্তব্য নিয়ে হতাশার কথা জানান মেলভিলও।
প্রেসিডেন্ট যেমনটা বলেন, আমাদের মাটির ব্যাংকে আক্রমণ করে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সুবিধা নিতে চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন কিংবা উত্তর আমেরিকার মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নাফটার মতো নেটোও খুব বাজে এগুলো কেবলমাত্র তথ্যগতভাবে ভুলই নয়, আমার যে চলে যাওয়ার সময় হয়েছে, এগুলো তার প্রমাণও ফেসবুকের কথোপকথনে বলেন এস্তোনিয়ার মার্কিন দূত।
ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশের কূটনীতিক মিশনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করা মেলভিল রুশ, জার্মান ও ফরাসি ভাষায় পারদর্শী। তিন দশকের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এ কূটনীতিককে বছর তিনেক আগে এস্তোনিয়ার দায়িত্ব দেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্রও মেলভিলের পদ ছেড়ে দেওয়ার খবর নিশ্চিত করেছেন। ৩৩ বছর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন শেষে ২৯ জুলাই থেকে অবসর নেওয়ার ইচ্ছার কথা আজ দিনের শুরুতে জানিয়েছেন এস্তোনিয়ার মার্কিন রাষ্ট্রদূত, বলেন মুখপাত্র।
মেলভিল উদ্বেগ জানালেও ইউরোপীয় মিত্রদের সমালোচনার পথ ছাড়েননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ওয়াশিংটন থেকে নিউজার্সির ব্যক্তিগত গলফ ক্লাবের দিকে উড়াল দেওয়ার পথে শুক্রবারও ন্যাটোর সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে একহাত নিয়েছেন তিনি। বলেছেন, সামরিক জোটে জার্মানি, স্পেন ও ফ্রান্সের মতো দেশগুলোর চাঁদার পরিমাণ বাড়া উচিত।
তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যা করছে তা ন্যায্য নয়। যুক্তরাষ্ট্র যা দিচ্ছে তা অন্য যে কারো তুলনায় অনেক বেশি অসামঞ্জস্যপূর্ণ, এয়ারফোর্স ওয়ানে ওঠার আগে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন ট্রাম্প। ব্রাসেলসে ন্যাটোর শীর্ষ সম্মেলনের দুই সপ্তাহ আগে ট্রাম্পের এ মন্তব্য মিত্রদের আরো শঙ্কিত করবে বলে ধারণা পর্যবেক্ষকদের। পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপ ও ইরানের পরমাণু চুক্তি থেকে সরে আসায় এমনিতেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইউরোপের দূরত্ব বাড়ছে। ন্যাটোর চাঁদা নিয়ে ট্রাম্পের অবস্থান সামরিক জোটটির মধ্যে অস্বস্তির ছায়া আরো দীর্ঘ করে তুলবে বলে শঙ্কা পশ্চিমা বিশ্লেষকদেরও।
"