আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ট্রাম্পের চুক্তি মানতে ফিলিস্তিনকে চাপ
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘শতাব্দীর সেরা চুক্তি’ মেনে নিতে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের ওপর চাপ প্রয়োগ করছে কয়েকটি আরব দেশ। সংবাদ সংস্থা কুদস নেট নিউজের বরাত দিয়ে মধ্যপ্রাচ্য পর্যবেক্ষণকারী ব্রিটিশ সংস্থা মিডলইস্ট মনিটর এ খবর জানিয়েছে। কয়েক দশকের মার্কিন রীতির ব্যত্যয় ঘটিয়ে ২০১৭ সালের ৬ ডিসেম্বর জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী স্বীকৃতির ঘোষণা দেন ট্রাম্প। বিক্ষোভে ফেটে ফিলিস্তিনিরা। স্বীকৃতির প্রতিবাদে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ হয়। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ভোটাভুটির পর এই স্বীকৃতি প্রত্যাখ্যান করে একটি প্রস্তাব পাস হয়। পিএলওর পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয় ইসরায়েলের সঙ্গে আর কোনো শান্তি আলোচনায় মার্কিন মধ্যস্ততা মানবে তারা। মাহমুদ আব্বাসের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো জানিয়েছে, চাপ প্রয়োগকারী দেশের মধ্যে সৌদি আরব ও জর্ডান অন্যতম। দেশগুলো চুক্তির ব্যাপারে মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার সময় সবুজ সংকেত দিয়েছে। ট্রাম্পের দাবি, এই চুক্তি হলে মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকট শেষ হয়ে যাবে।
একই সূত্র কুদস নেট নিউজকে বলেছে, আরব দেশগুলোর এমন অবস্থানে আব্বাস ‘বিস্মিত’ হয়েছেন। তিনি এরই মধ্যে চুক্তির ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনকে বর্জন করার দাবি করে আসছেন। আরব দেশগুলোর এমন চাপ দেওয়াকে আব্বাস ফিলিস্তিনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বলেও মনে করছেন। এর আগে গাজার ওপর আব্বাস প্রশাসনের নেওয়া শাস্তিমূলক ব্যবস্থারও বিরোধিতা করেছিল এসব আরব দেশ।
সূত্র দাবি করেছে, গাজার মানবিক পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় অর্থ সরবরাহ করার বিনিময়ে ট্রাম্পের চুক্তি মেনে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে সৌদি আরব। ২০০২ সালের আরব-ইসরায়েল শান্তি আলোচনার ভিত্তিতে ওই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পিএলও কর্মকর্তা। ২০০২ সালে সৌদি আরব প্রস্তাবিত ওই শান্তি আলোচনার প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, সব আরব রাষ্ট্র ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেবে। বিনিময়ে ১৯৬৭ সালের যুদ্ধের পর দখল করা সব ফিলিস্তিনি এলাকা থেকে ইসরায়েল নিজেদের প্রত্যাহার করে নেবে। এর আগে ২০১৭ সালের জুলাই মাসে ইসরায়েলের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম হারেৎজ এই চুক্তি ফাঁস করার দাবি করে।
পত্রিকাটি জানায়, ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মধ্যে স্বাক্ষরিত ‘শতাব্দীর সেরা চুক্তি’ (ডিল অব দ্য সেঞ্চুরি) স্বাক্ষরিত হয়েছে।
‘ডিল অব দ্য সেঞ্চুরি’তে দুই রাষ্ট্রের প্রস্তাব করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, দখলকৃত গাজা উপত্যকা চলে যাবে মিসরের অধীনে। আর দখলকৃত পশ্চিম তীরের একাংশে থাকবে জর্ডানের রাজনৈতিক কর্তৃত্ব। পশ্চিম তীরের অবশিষ্ট অংশ শাসন করবে ইসরায়েল। এখানে বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের ইসরায়েল রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।
"