আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আবার রাজনৈতিক সংকটের মুখে জার্মানি?
সরকারের অস্তিত্ব কি বাঁচাতে পারবেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল? শরণার্থী-সংক্রান্ত নীতিকে কেন্দ্র করে সরকারি জোটের চাবিকাঠি আপাতত এক শরিকের হাতে। তবে আপসের সম্ভাবনা বাড়ছে।
শরণার্থী ও অভিবাসন নীতিকে কেন্দ্র করে জার্মানির ইউনিয়ন শিবিরের দুই দল সিডিইউ ও বাভেরিয়ার সিএসইউ দলের মধ্যে কোন্দল গত সপ্তাহেই চরমে উঠেছিল। সিএসইউ শরণার্থী-সংক্রান্ত নীতি আরো কড়া করতে চাইছে। অন্য কোনো দেশে শরণার্থীরা নিজেদের নথিভুক্ত করলে জার্মানির সীমান্তে তাদের বিদায় করতে চায় তারা। দলের দাবি, ইউরোপীয় আইনের কাঠামোর মধ্যেই এ পদক্ষেপ সম্ভব। অন্যদিকে সিডিইউ নেত্রী ও চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল জার্মানির একক পদক্ষেপের বদলে এক ইউরোপীয় সমাধানসূত্র চাইছেন। দ্রুত সেটা সম্ভব না হলে কমপক্ষে কিছু দ্বিপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে তিনি আপাতত পরিস্থিতি সামাল দিতে চান। তিনি এই লক্ষ্যে দুই সপ্তাহ সময় চেয়ে নিয়েছেন। জুন মাসের শেষে ইইউ শীর্ষ সম্মেলনের আগেই বেআইনি অনুপ্রবেশ রুখতে তিনি ইতালি, অস্ট্রিয়াসহ কয়েকটি রাষ্ট্রের সঙ্গে জরুরি শীর্ষ বৈঠক ডাকতে চলেছেন বলে শোনা যাচ্ছে। নিজের সিডিইউ দল এ উদ্যোগে সম্মতি দিলেও সিএসইউ দল তাকে সেই সময় দেবে কি নাÑতা এখনো স্পষ্ট নয়।
আগামী অক্টোবর মাসে বাভেরিয়ায় রাজ্য নির্বাচনের আগে ভোটারদের মন জয় করতে সিএসইউ এমন চরম মনোভাব দেখাচ্ছে বলে এ দলের বিরুদ্ধে সমালোচনা উঠছে। তা ছাড়া সিএসইউ নেতা ও জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্স্ট সেহোফার এবং বাভেরিয়ার মুখ্যমন্ত্রী মার্কুস স্যোডারের মধ্যে ক্ষমতার লড়াইও এ সংঘাতের জন্য দায়ী বলে অনেকে মনে করছেন। তার ওপর সেহোফার ও ম্যার্কেলের ব্যক্তিগত সম্পর্কও তলানিতে এসে ঠেকেছে বলে শোনা যাচ্ছে। এমনকি সেহোফার নাকি দলীয় এক বৈঠকে স্পষ্ট বলেছেন, তিনি আর ‘ওই মহিলার সঙ্গে কাজ করতে পারছেন না’। সংবাদমাধ্যমের একাংশে তার এই ‘বিতর্কিত মন্তব্য’ প্রকাশিত হয়েছে। সেহোফার এমনকি মন্ত্রী হিসেবে নিজের ক্ষমতা প্রয়োগ করে ম্যার্কেলকে অমান্য করে একাই শরণার্থীদের সীমান্তে বিদায় করার সিদ্ধান্ত কার্যকর করার হুমকি দিয়েছেন। গতকাল সোমবার দুই দলই আলাদা আলাদা বৈঠকে আগামী পদক্ষেপ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেবে। রোববার ম্যার্কেল নিজের দলের কয়েকজন শীর্ষপর্যায়ের নেতার সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেছেন। মিউনিখে সিএসইউ দল নিজেদের সিদ্ধান্তে অটল থাকবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। তবে জোটে ভাঙন এড়াতে তারা হয়তো ম্যার্কেলকে দুই সপ্তাহ সময় দিতে রাজি হবে বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করছে।
"