আন্তর্জাতিক ডেস্ক
দ. আফ্রিকায় শ্বেতাঙ্গদের জমি বাজেয়াপ্ত করা হবে
বর্ণবাদ হটিয়ে মানবাধিকার ফিরে পেলেও জমি ও সম্পদের ওপর অধিকার ফিরে পায়নি দক্ষিণ আফ্রিকার কৃষ্ণাঙ্গরা। দেশটির প্রায় সব জমি ও সম্পদের মালিক এখনো মুষ্টিমেয় শ্বেতাঙ্গ। সে অবস্থার অবসান ঘটতে চলেছে এবার। এবার শ্বেতাঙ্গদের জমি বাজেয়াপ্ত করার পালা।
সংবাদ সংস্থাগুলোর খবরে বলা হয়, গত মঙ্গলবার পার্লামেন্টে আনা একটি প্রস্তাব বিপুল ভোটে পাস হয়েছে। কোনো ক্ষতিপূরণ দেওয়া ছাড়াই শ্বেতাঙ্গ কৃষকদের জমি বাজেয়াপ্ত করার ক্ষমতা প্রয়োগ যাতে করা যায়; সেজন্য সংবিধানে পরিবর্তন আনার পক্ষেই এই প্রস্তাব। প্রস্তাবটি ২৪১-৮৩ ভোটের ব্যবধানে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়। প্রস্তাবটি পেশ করেছিলেন র্যাডিক্যাল মার্কসিস্ট রিরোধী দল ইকোনমিক ফ্রিডম ফাইটার্সের নেতা জুলিয়াস মালেমা। শ্বেতাঙ্গপ্রধান একটিমাত্র দল ছাড়া সব দলই প্রস্তাবের পক্ষে। ক্ষমতাসীন দল এএনসি এই প্রস্তাবের প্রধান সমর্থক ও পৃষ্ঠপোষকের ভ‚মিকা পালন করে। নতুন প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা নিজে দক্ষিণ আফ্রিকার জমি মুষ্টিমেয় শ্বেতাঙ্গের কাছ থেকে সংখ্যাগরিষ্ঠ কৃষ্ণাঙ্গ জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার পক্ষপাতী।
পার্লামেন্টে প্রস্তাবটি পেশ করার সময় জুলিয়াস মালেমা বলেন, ‘সমঝোতার দিন শেষ। সময় এখন ন্যায়বিচারের। যেসব দুর্বৃত্ত আমাদের জমি চুরি করে নিয়েছে, কেড়ে নিয়েছে, তাদের কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণ না করে আমাদের জনগণের মর্যাদা পুনরুদ্ধার নিশ্চিত করতে হবে।’
প্রস্তাবটি পাস হওয়ার পর গোটা ব্যাপারটা এখন খতিয়ে দেখবে পার্লামেন্টে সংবিধান সংশোধন ও পর্যালোচনা কমিটি।
ওই কমিটি ৩০ আগস্টের মধ্যে এ বিষয়ে রিপোর্ট দেবে।
৫ কোটি লোকের দেশ দক্ষিণ আফ্রিকা বিপুল প্রাকৃতিক ও খনিজ সম্পদে পরিপূর্ণ এক দেশ। কিন্তু দেশটির সব সম্পদ কুক্ষিগত করে রেখেছে মুষ্টিমেয় শেতাঙ্গ। দেশটির মোট কৃষিজমির ৭২ শতাংশেরই মালিক শ্বেতাঙ্গরা।
এর ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠ কালোদের সিংহভাগকেই চরম দারিদ্র্য, ভ‚মিহীন, বেকারত্ব, আশ্রয়হীন, খাদ্যহীন অবস্থায় দিনাতিপাত করতে হয়। দেশটিতে ধনবৈষম্য সীমা ছাড়িয়ে গেছে। এর ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের খাদ্য ও নিরাপত্তা ভঙ্গুর অবস্থায় চলে গেছে।
প্রসঙ্গত, এর আগে জিম্বাবুয়ের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবের সরকার শ্বেতাঙ্গদের বিশাল বিশাল জমি ও খামার বাজেয়াপ্ত করে পশ্চিমা বিশ্বের ব্যাপক নিন্দা, বিরোধিতা ও অসযোগিতার মুখে পড়ে।
"