করোনাভাইরাস মানুষের ওপর কী ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে সেটি নিয়ে প্রতিনিয়ত নতুন তথ্য যোগ হচ্ছে। এ ভাইরাসের কারণে মানবদেহে এমন কিছু প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে যেটির প্রভাব বেশ মারাত্মক। করোনাভাইরাসের সঙ্গে সম্পর্কিত নতুন রোগেরও সন্ধান মিলছে। এর নাম হচ্ছে মাল্টিসিস্টেম ইনফ্লেমেটরি সিনড্রোম। এপ্রিল মাসে সর্ব প্রথম ব্রিটেন এবং আমেরিকায় অনেক শিশুর মধ্যে এই রোগ ধরা পড়ে। এটি মূলত শিশুদের মধ্যেই বেশি দেখা যায়, এমনটাই বলছেন চিকিৎসকরা।

বিবিসি নিউজের এক প্রতিবেদনে গতকাল বৃহস্পতিবার বলা হয়, ব্রিটেনে এই রোগ শনাক্ত হবার পরে দেখা গেছে এই রোগে আক্রান্ত কিছু শিশুর মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রয়েছে। গত ১৫ এবং ২৭ মে বাংলাদেশে দুটি শিশুর মধ্যে এই রোগের উপস্থিতি পাওয়া যায়। বিরল এই রোগে আক্রান্ত দুটি শিশু ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। আক্রান্ত দুই শিশুর মধ্যে একজনের বয়স তিন মাস এবং আরেক শিশুর বয়স দুই বছর দুই মাস। ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, দুজন শিশুরই যথাক্রমে পাঁচ ও সাত দিন ধরে ১০২ এবং ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট জ্বর ছিল। এর সঙ্গে ছিল ডায়রিয়া, চোখ ও ঠোঁট লাল হয়ে যাওয়া এবং পায়ের হালকা ফোলা ভাব।

চিকিৎসকরা বলছেন, এই রোগে শিশুদের আক্রান্ত হবার আশঙ্কা বেশি। তারা পরামর্শ দিচ্ছেন, যেহেতু এই রোগটি করোনাভাইরাসের সঙ্গে সম্পর্কিত, সেজন্য মহামারির সময় শিশুদের প্রতি খেয়াল রাখা উচিত।এই রোগের লক্ষণগুলো কী? যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোলের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে শিশুদের মধ্যে যদি নিচের লক্ষণগুলো থাকে তাহলে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। ১. জ্বর থাকবে। ২. পেটে ব্যথা। ৩. ডায়রিয়া। ৪. বমি। ৫. ঘাড়ে ব্যথা। ৬. শরীরে র‌্যাশ। ৬. চোখ লাল হয়ে যাওয়া। ৭. বেশি ক্লান্ত অনুভব করা।

তবে সব শিশুর ক্ষেত্রে একই রকমের উপসর্গ নাও থাকতে পারে বলে সতর্ক দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল। সংস্থাটি বলেছে আরো কিছু উপসর্গ থাকতে পারে এই রোগের ক্ষেত্রে। এগুলো হচ্ছেÑ শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা, বুকে চাপ ও ব্যথা অনুভব করা, জেগে থাকতে কষ্ট হওয়া এবং ঠোঁট এবং মুখ নীলাভ হয়ে যাওয়া। চিকিৎসকরা বলছেন, এই রোগ থেকে শিশুদের রক্ষার করার উপায় হচ্ছে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের কাছ থেকে দূরে থাকা। করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য যেসব স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে, ঠিক একই ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে মাল্টিসিস্টেম ইনফ্লেমেটরি সিনড্রোমের ক্ষেত্রেও। ঢাকা এভারকেয়ার হাসপাতালের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সেখানে যে দুটি শিশুর ক্ষেত্রে মাল্টিসিস্টেম ইনফ্লেমেটরি সিনড্রোমের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে, তারা সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে গেছে।

"