নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৬ জুন, ২০১৯

৬০ কোটি টাকা কর পরিশোধ

প্রথম মেলায় বৈধ হলো ৬০ হাজার ভরি স্বর্ণ

প্রথমবারের মতো আয়োজিত স্বর্ণ মেলায় প্রথম দুই দিনে ব্যবসায়ীরা প্রায় ৬০ কোটি টাকা কর পরিশোধ করে ৬০ হাজার ভরি স্বর্ণ বৈধ করেছেন। শীর্ষে রয়েছে ভেনাস, আমিন ও ডায়মন্ড জুয়েলার্স। বংশ পরম্পরায় স্বর্ণ বেচাকেনা করে এলেও আয়কর ফাইলে এতদিন শুধু টাকার অংকে মজুদ স্বর্ণের তথ্য দিতেন ব্যবসায়ীরা। যেখানে উল্লেখ থাকত না পরিমাণ। এতে স্বর্ণের উৎস ও মজুদ নিয়ে নানা প্রশ্ন ও হয়রানির মুখে পড়তো হতো জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের। পদ্ধতিগত এই ভুলের অবসান করে স্বর্ণের প্রকৃত মজুদ জানা এবং যথাযথ রাজস্ব আদায়ে প্রথমবারের মতো এনবিআরের এই স্বর্ণ মেলার আয়োজন। স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের অপ্রদর্শিত স্বর্ণ বৈধ করতে রাজধানীতে গত রোববার শুরু হয়ে এই স্বর্ণ মেলা শেষ হয়েছে গতকাল। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আয়োজনে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের বলরুমে এই মেলা হয়। এতে সহায়তা দেয় বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। মেলায় শুধু স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা কর দিয়ে স্বর্ণ বৈধ করার সুযোগ পান।

বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির সহ-সভাপতি এনামুল হক খান বলেন, স্বর্ণের মজুদ সরকারি কিংবা বেসরকারিভাবে বলুন, কোনো জরিপ নেই। জুনের পর থেকে আমরা জানতে পারব দেশে কী পরিমাণ স্বর্ণ আছে। এই ব্যবসায় একটা স্বচ্ছতা আসবে এবং সরকারের টার্গেট ৪০০ কোটি টাকা এই খাত থেকে আসবে। তবে প্রত্যন্ত অঞ্চলের জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের জন্য জেলা পর্যায়ে মেলা আয়োজন এবং অপ্রদর্শিত স্বর্ণ বৈধ করার জন্য আরো সময় চেয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির সাবেক সভাপতি দিলীপ কুমার রায় বলেন, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে খবরটি পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। তাই আমরা সময় বৃদ্ধির জন্য আবেদন জানিয়েছি। মেলা ঘুরে দেখা গেছে, কর অঞ্চলের বিভিন্ন বুথের পাশাপাশি মেলায় সোনালী ও বেসিক ব্যাংকের দুটি বুথ ছিল। ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের পাশাপাশি বাংলা গোল্ডেরও একটি বুথ ছিল। ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড অলংকার প্রদর্শন করছে। তবে বিক্রি করেনি। আর বাংলা গোল্ড স্বর্ণের মান পরীক্ষা ও হলমার্ক করে থাকে। অনেক ব্যবসায়ীকে কর পরিশোধ করে স্বর্ণ বৈধ করতে দেখা গেছে।

গত ২৮ মে দেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ী ও স্বর্ণালংকার প্রস্তুতকারীদের কাছে অঘোষিত বা অবৈধভাবে থাকা স্বর্ণের মজুদ ঘোষণায় আনার সুযোগ দিয়েছে এনবিআর। এই সুযোগ ৩০ জুন পর্যন্ত থাকবে। তবে স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা যাতে সহজেই এই সুযোগ নিতে পারেন, সেজন্য এই অভিনব মেলার আয়োজন করা হয়েছে। তিন দিনের এই মেলায় স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা নির্দিষ্ট ফরম পূরণ করে পে-অর্ডারের মাধ্যমে কর দিতে পারবেন। এভাবে মেলায় এসেও ‘কালো’ স্বর্ণ ‘সাদা’ করা যাবে।

কোম্পানি করদাতার ক্ষেত্রে কোম্পানির মুখ্য কর্মকর্তা, ফার্মের ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনা অংশীদার ও ব্যক্তিমালিকানাধীন করদাতাদের ক্ষেত্রে করদাতাকে নির্দিষ্ট ফরমে সই করতে হবে। ফরমে ঘোষিত মজুদের বিবরণ ও করের তথ্য থাকতে হবে। কোনো করদাতা যদি হালনাগাদ রিটার্ন দাখিল না করেন, তাহলে সর্বশেষ করবর্ষের দাখিলকৃত রিটার্নে থাকা সমাপনী মজুদ ঘোষণা দিতে হবে। যদি কোনো করদাতা কখনোই রিটার্ন দাখিল না করে থাকেন, তাহলে কোনো সমাপনী মজুদ থাকবে না, বরং পুরো মজুদই ঘোষণার আওতায় আসবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close