রাজধানীতে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের অর্ধেকেই ভুগছেন শ্বাসকষ্ট ও শ্রবণ সমস্যায়। শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি তারা থাকেন ভয়াবহ মানসিক চাপেও। কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল জানিয়েছে এ তথ্য। যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাফিক ব্যবস্থাকে আধুনিক করতে পারলেই মুক্তি পাবে সড়কের দায়িত্বে থাকা এসব মানুষ। আর শব্দদূষণ থেকে বাঁচতে ইয়ারপ্লাগ ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

রাতে ঘুমের মধ্যে হঠাৎ জেগে ওঠা, ঘরের ভেতর উচ্চশব্দে কথা বলা ও কানে কম শোনাসহ নানা রোগে ভুগছেন রাজধানীর এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কর্তব্যরত বেশির ভাগ ট্রাফিক পুলিশ। শুধু রাজধানীতেই প্রায় সাড়ে তিন হাজার ট্রাফিক সদস্য রয়েছেন সড়কে শৃঙ্খলার দায়িত্বে। রোদ-বৃষ্টি কিংবা ঝড়ে রাস্তায় দায়িত্ব পালন করতে হয় তাদের। বিশেষ করে ঢাকার ধূলিদূষণ আর অতিরিক্ত শব্দদূষণের সবচেয়ে বেশি শিকার ট্রাফিক বিভাগের দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা।

একজন ট্রাফিক পুলিশ জানান, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে আমরা হৃদযন্ত্র ও শ্রবণসহ নানা শারীরিক সমস্যায় পড়ি। রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিন শ্বাসকষ্ট, শ্রবণশক্তি লোপ ও হৃদরোগজনিত সমস্যা নিয়ে আসেন প্রায় দেড়শতাধিক ট্রাফিক পুলিশ।

কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. ফারহানা ইসলাম শান্তা জানান, যারা সমস্যা নিয়ে আসেন তাদের সংখ্যা ১০০ থেকে ১৫০ এর মতো থাকে প্রতিদিন। সপ্তাহে এই সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়ে যায়। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেশির ভাগ ট্রাফিক পুলিশই শ্রবণশক্তি ও হৃদরোগের ঝুঁকির পাশাপাশি মানসিক সমস্যায় ভুগছেন।

নাক-কান-গলা রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সাহমুদুল হাসান বলেন, যারা ট্রাফিক বিভাগে কাজ করে তারা উচ্চরক্তচাপসহ ডায়াবেটিস রোগে ভোগেন। রাতের বেলায় যখন বাসায় যান ঘুম কম হয়। যখন তারা ডিউটিতে থাকেন তখন ইয়ার মাফলার পড়ার মাধ্যমে এ সমস্যার প্রতিরোধ করা যেতে পারে। যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা বলেন, দেশে ট্রাফিক বিভাগকে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন করা সময়ের দাবি। নইলে ঝুঁকিতে থাকবে ট্রাফিক পুলিশ।

বুয়েটের সহকারী অধ্যাপক সাইফুন নেওয়াজ বলেন, বাইরের দেশে ট্রাফিক পুলিশকে টিশার্ট পরে ডিউটি পালন করতে দেখা যায়। আমাদের দেশেও পোশাকের কিছুটা ফ্লেক্সিবিলিটি আনা যায়। এছাড়া তাদের কিছু ডিভাইস দিতে পারি, যার মাধ্যমে গাড়ির কাগজপত্র ঠিক আছে কিনা দেখতে পারবেন।

"