বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা বলেছেন, হামলার ওই ঘটনা আমাদের (কমিশন) বিব্রত করেছে। এর আগে গত মঙ্গলবার এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ নিয়ে সিইসি বলেন, নির্বাচনের উত্তাপ যেন উত্তপ্ত না হয়। তার ওই বক্তব্যের দিনই মির্জা ফখরুলের গাড়িবহরে হামলার পাশাপাশি নির্বাচনী সহিংসতায় দুজন নিহত হয়েছেন।

আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটদের ব্রিফিংয়ের উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরো বলেন, ‘গত মঙ্গলবার আমরা অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে বলেছিলাম যে, সারা দেশে নির্বাচনী কার্যক্রমে কোনো অঘটন ঘটেনি। কিন্তু সেদিনই দুটো ঘটনা ঘটেছে, যেটা আমাদের বিব্রত করেছে, মর্মাহত করেছে। নিহতের ঘটনা আমাদের অত্যন্ত বিব্রত করেছে, ব্যথা দিয়েছে।’

বিএনপি মহাসচিবের গাড়িবহরে হামলার প্রসঙ্গ টেনে তিনি আরো বলেন, ‘ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপি মহাসচিবের গাড়িতে হামলা হয়েছে, যেটা অনাকাক্সিক্ষত এবং আমরা বিব্রত। এটা কখনো কাম্য হতে পারে না। একটা মানুষের জীবন সব নির্বাচনের চেয়ে মূল্যবান। সারা দেশে যে ৩০০টি আসনে নির্বাচন হবে। সেটার যে মূল্য, আমরা মনে করি, একটা মানুষের জীবনের মূল্য তার চেয়ে বেশি। সহিংসতার কারণে সেই জীবন চলে গেল, এটা কারো কাম্য হতে পারে না। এ অবস্থা থেকে আমাদের উত্তরণের পথ খুঁজে বের করতে হবে।’

সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মী, প্রার্থী, ভক্ত, শুভাকাক্সক্ষী সবার প্রতি অনুরোধ, আপনারা ধৈর্যশীল আচরণ করবেন। নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলুন। কারো নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবেন না। একে অন্যের গণতান্ত্রিক অধিকার, মৌলিক অধিকারের প্রতি সম্মান দেখাবেন। যেকোনো উত্তেজনাকর, উদ্বেগজনক নির্বাচন পরিপন্থী ও অনাকাক্সিক্ষত কার্যাবলি পরিহার করবেন এবং নিজেরাই তা প্রতিহত করবেন।’

বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশ্য করে কে এম নুরুল হুদা বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। মানুষকে আশ্বস্ত করতে হবে যে, নির্বাচন সহিংসতার জায়গা নয়, ভোটাধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগের জায়গা। ধৈর্য ও একে অন্যের প্রতি সম্মান দেখিয়ে নির্বাচন পরিচালনা করতে হবে।

একাদশ সংসদ নির্বাচন অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, এবারের নির্বাচন বৈশিষ্ট্যপূর্ণ তো বটেই, সবদিক দিয়ে আলাদা নির্বাচন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আগের কোনো নির্বাচনের সঙ্গে তুলনা করা যায় না। প্রতিটি কেন্দ্রে গড়ে প্রায় ছয়জন প্রার্থী, সারা দেশে এক হাজার আটশর বেশি প্রার্থী মাঠে থাকবেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

এ সময় নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম, বেগম কবিতা খানম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ উপস্থিত ছিলেন।

"