নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

এতিমদের জন্য নির্মিত হচ্ছে ১৯ শিশুনিবাস

১৯টি শিশু নিবাস (সরকারি এতিম খানা) পুনর্নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এগুলো নির্মিত হলে আড়াই হাজার এতিম শিশুর জীবন ঝুঁকিমুক্ত হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এর আগে ১৮টি সরকারি শিশু পরিবার ও একটি ছোটমনি নিবাসের হোস্টেলগুলো বসবাসের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। পরে হোস্টেলগুলো পুনর্নির্মাণ করা অতীব জরুরি বলে মত দেয় সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়।

এসব শিশু নিবাসের হোস্টেল পুনর্নির্মাণের লক্ষ্যে ২৯৬ কোটি ৭২ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘সরকারি শিশু পরিবার এবং ছোটমনি নিবাস নির্মাণ/পুনর্নির্মাণ’ নামে একটি প্রকল্প নিয়েছে সরকার। প্রকল্পটি আগামী ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সম্প্রতি প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি একনেকে অনুমোদন দেওয়া হয়। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারি শিশু পরিবার এবং ছোটমনি নিবাসের শিশুদের নিরাপদ আবাসনের ব্যবস্থা করা, সরকারি শিশু পরিবার এবং ছোটমনি নিবাসের শিশুদের জীবনমান উন্নয়ন নিশ্চিত করা, সরকারি শিশু পরিবার এবং ছোটমনি নিবাসের শিশুদের পরিচর্যা, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, শিক্ষা ও প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের যথাযথ ব্যবস্থা ও প্রশিক্ষিত হয়ে দেশের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারে এ জন্যই এ প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রকল্প বাস্তবায়নে বরাদ্দ অর্থের পুরোটাই সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেওয়া হবে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় সমাজসেবা অধিদফতর ও গণপূর্ত অধিদফতর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।

সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন জানিয়েছেন, সরকার দেশের সব শ্রেণির নাগরিকদের বিষয়ে দায়িত্বশীল। তাই সমাজের এসব অসহায় এতিম শিশুদের অভিভাবকের দায়িত্ব নিয়েছে সরকার। তাদের উন্নয়নে সরকার সব ধরনের উদ্যোগই গ্রহণ করেছে। এর অংশ হিসেবেই এ ধরনের প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে আরো প্রকল্প নেওয়া হবে।

জানা গেছে, ১৯৬১ সালে শিক্ষা দফতর থেকে সরকারি এতিমখানাগুলোর পরিচালনার দায়িত্ব সমাজকল্যাণ পরিদফতরে ন্যস্ত করা হয়। সরকারি এতিমখানাগুলোকে পরবর্তীতে সরকারি শিশু সদন হিসেবে নামকরণ করা হয়। বর্তমানে পারিবারিক পরিবেশে এতিম শিশুদের ছোট ছোট দলে বিভক্ত করে সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান ও সাহচর্য দেওয়ার মাধ্যমে প্রতিপালনের জন্য শিশু সদনগুলোকে সরকারি শিশু পরিবারে রূপান্তরিত করা হয়েছে। ১৯৪৪ সালের এতিমখানা এবং বিধবা সদন আইন, ১৯৭৪ সালের শিশু আইনের বিধান মোতাবেক পিতৃ-মাতৃহীন, পিতৃহীন এতিম ও দুস্থ শিশুদের পূর্ণমর্যাদা প্রদান তাদের অধিকার এবং স্বার্থ সংরক্ষণ বিষয়ে যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে দেশে ৮৫টি সরকারি শিশু পরিবারে ১০ হাজার ৩০০ এতিম ও দুস্থ শিশুদের লালন পালন করা হচ্ছে।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, জাতিসংঘ ঘোষিত শিশু অধিকার সনদ, দেশের সংবিধান ও জাতীয় শিশু নীতিমালায় বর্ণিত বিধান এবং মানবিক ও ধর্মীয় চিন্তা চেতনার অন্যান্য শিশুদের মত পরিত্যক্ত শিশুদের সুষ্ঠুভাবে লালন-পালন ও উন্নয়নের সুযোগ সুবিধা প্রদানের জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়াধীন সমাজসেবা অধিদফতরের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে। পরকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় এতিমখানার হেস্টেলের জন্য ভবন নির্মাণ করা হবে। একই সঙ্গে শিশুদের ব্যবহারের জন্য আসবাবপত্র কেনা হবে। এসব হেস্টেলে বসবাসকারী এতিম শিশুদের দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে এবং তাদের বিছানাপত্রও কেনা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close