সিলেট প্রতিনিধি
সিটি করপোরেশন নির্বাচন
সিলেট আওয়ামী লীগে কামরান বিএনপিতে কে?
সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ তাদের প্রার্থী ঘোষণা করেছে দলের কেন্দ্রীয় সদস্য ও মহানগর সভাপতি বদর উদ্দিন আহমেদ কামরানকে। তবে এখন পর্যন্ত বিএনপি প্রার্থী ঘোষণা করতে পারেনি। সিলেট সিটিতে কে পাচ্ছেন ’ধানের শীষ’ তা নিয়ে দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে রয়েছে নানা কৌতূহল সংশয় ও বিভ্রান্তি। গত বৃহস্পতিবার রাতে সিলেটের কয়েকটি নিউজ পোর্টালে আরিফুল হক চৌধুরী মেয়র পদে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন এমন সংবাদ প্রকাশ করলে স্থানীয় নেতা কর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। আরিফের মনোনয়নের বিষয়টি মানতে নারাজ অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম। তিনি কিছুটা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন দল এখনো প্রার্থী চূড়ান্ত করেনি। আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ঘোষণাও দেয়নি; তারপরও কিছু নিউজ পোর্টাল এই বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশ করেছে। এটা খুবই দুঃখজনক। তিনি বলেন, একটি মহল দলের মধ্যে ফাটল সৃষ্টি করতে এবং নেতাকর্মীদের বিভ্রান্তি ছড়াতে এমন ভুয়া সংবাদ প্রকাশ করেছে। এ নিয়ে সিলেটে বিএনপির কর্মী সমর্থদের মধ্যে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। তবে দলীয় সূত্র বলছে, তিন সিটিতেই বিএনপির প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। খুব শিগগিরই তা ঘোষণা করা হবে। জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সিলেটসহ তিন সিটিতে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করতে বৈঠকে বসে বিএনপির মনোনয়ন বোর্ড। সেখানে সাক্ষাৎকার দেন মনোনয়ন প্রত্যাশী সিলেটের ৬ নেতা। তবে এ নিয়ে দলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। কেন্দ্রীয় বিএনপির এক নেতা জানান, সিটি নির্বাচন নিয়ে বিএনপির নীতিগত একটা সিদ্ধান্ত রয়েছে। মেয়র হিসেবে যারা বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন তাদেরই অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। তবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে আরো কিছুদিন সময় লাগতে পারে।
জানা গেছে, মেয়র পদে সিলেটে থেকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ছয় নেতা হলেন, কেন্দ্রীয় সদস্য বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সিলেট মহানগর সভাপতি নাসিম হোসাইন, সিনিয়র সহসভাপতি আবদুল কাইয়ুম জালালী পংকী, সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম, সহসভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী ও মহানগর যুবদল নেতা ছালাহ উদ্দিন রিমন।
রেজাউল হাসান কয়েস লোদী বলেন, ‘আমরা সিলেটের সব মনোনয়ন প্রত্যাশী বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন না দিতে দলের নীতিনির্ধারকদের অনুরোধ করেছি। কারণ তিনি এখন আর বিএনপির নেতা নন। তিনি আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা রেখে রাজনীতি করেন। দলের কোনো কর্মসূচিতে তাকে পাওয়া যায় না। তাই তার বাইরে দল যাকে মনোনয়ন দেবে আমরা সবাই তার পক্ষ হয়ে নির্বাচনে কাজ করব বলে এসেছি।’
বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছি। চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাক্ষাৎকারও দিয়েছি। দলের পক্ষ থেকে আমাকে বলা হয়েছে, সেখানে অন্য কাউকে প্রার্থী করা হলে আমার অবস্থান কী হবে? আমি বলেছি, দল যাকে মনোনয়ন দেবে, আমি তার পক্ষে কাজ করব।’ দলের নেতারা তাকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন বলেও উল্লেখ করেন আরিফুল।
এ প্রসঙ্গে, সিলেট নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠজন বলে পরিচিত বদরুজ্জামান সেলিম দলীয় একটি সূত্রের বরাত দিয়ে বলেন, ‘বিএনপির সিনিয়র অনেক নেতা আমাকে জানিয়েছেন মেয়র পদে রাজশাহী ও বরিশালে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। তবে সিলেটের ব্যাপারে এখন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি; কাউকে চূড়ান্তও করা হয়নি।’ তিনি আরো জানান, সিলেটের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে লন্ডনে অবস্থানরত দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে কয়েকজন নেতার নাম পাঠানো হয়েছে। আগামী দুই এক দিনের মধ্যে সিলেটে মেয়র পদে দলের চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা করা হবে।
প্রার্থী দিল সিপিবি-বাসদ : এদিকে, সিলেটে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বাসদের সিলেট জেলা শাখার সমন্বয়ক ও সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের আহ্বায়ক কমরেড আবু জাফর। গতকাল শনিবার দুপুরে নগরীর কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদে বাসদ ও কমিউনিস্ট পার্টি সিলেট জেলা শাখার যৌথ কর্মীসভা থেকে মেয়র পদে কমরেড আবু জাফরের প্রার্থিতা ঘোষণা করা হয়।
"