মাহাবুব চান্দু, মেহেরপুর
ডাক্তারি বিদ্যা নেই দেন নার্স প্রশিক্ষণ
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা শহরে প্যারামেডিকেল এবং নার্সিং প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট কেন্দ্র খুলে বসেছেন এসএসসি পাশ এক তরুণ ইউসুফ আলী সাজ্জাদ। তার সেই অর্থে কোনো ডাক্তারি বিদ্যা না থাকলেই তিনি প্রশিক্ষনার্থী নার্সদের ক্লাশ নেন। স্বাস্থ্য বিভাগের ১ জন বিসিএস ডেন্টিস্ট ডাক্তারসহ তিনি নিজেইএই প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। তবে এলাকায় প্রশ্ন দেখা দিয়েছেÑ এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটির কী সরকারি অনুমোদন আছে?
শনিবার সরেজমিনে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় ইউসুফ আলী সাজ্জাদ ক্লাস নিচ্ছেন। সামনে ৮ জন বিভিন্ন বয়সের শিক্ষার্থী বসে স্যারের লেকচার শুনছেন। তিনি বিভিন্ন রোগের মেডিকেল টার্মে তার নাম কি এগুলো বোঝাচ্ছেন।
ক্লাসশেষ করে উনার চেম্বারে এলে কথা হয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে।
সাজ্জাদ জানান তিনি ১৯৯৬ সালে দামুড়হুদা পাইলট হাইস্কুল থেকে এসএসসি পাশ করেছেন। তারপর ২০০৪ সালে এমনি একটি প্রতিষ্ঠান ঢাকার আশুলিয়া থেকে ডিএমএফ (ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল ফ্যাকাল্টি) প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এবং তার বাবা নজির আহমেদ বিশ্বাস গ্রাম্য চিকিৎসক ছিলেন। তার কাছে তিনি হাতে-কলমে কিছু কাজ শিখেছেন বলে দাবি করেন। এই প্রশিক্ষক আরো জানান, এখানে আপাতত ২ জন শিক্ষক ক্লাস নিচ্ছেন, ১ জন তিনি নিজেই এবং অপরজন গাংনী হাসপাতালের ড্যান্টিস্ট ডা. সাদিয়া সুলতানা সুমি। ডা. সাদিয়াকে প্রতি ক্লাস বাবদ ৭০০/=টাকা দেন। শুক্র ও শনিবার এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ডা. সাদিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ক্লাস নেন বলে জানান। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির সম্পর্কে ভালো মন্তব্য করেন। কি কি কোর্স এখানে পড়ানো হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে সাজ্জাদ বলেন- তিন বছর মেয়াদী কোর্স ডিএমএফ (ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল ফ্যাকাল্টি), ডিএমএলটি (ডিপ্লোমা ইন ল্যাবরেটরী, ডিএনপি (ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল এ্যাসিস্টেন্ট), ২ বছর মেয়াদে ডিপ্লোমা ইন নার্সিং ট্রেনিং, ১ বছর মেয়াদে ডিপ্লোমা ইন মাদার এ- চাইল্ড হেলথ, বিডিএ (বাংলাদেশ ডেন্টাল এ্যাসিস্টেন্ট। সর্টকোস সমূহঃ এলএমএএফপি (পল্লী চিকিৎসক), বিআরএমপি রেজিস্টার চিকিৎসক ও এলভিপি‘র (পশু চিকিৎসক),
শিক্ষার্থী শারমীন আক্তারজানান ৩১শ টাকা দিয়ে ভর্তি হয়েছেন। দুইবছরের কোর্স শেষ করতে তার ৩৭ হাজার টাকা তিন কিস্তিতে নিতে চেয়েছেন। অভিন্ন কথা বললেন ডিএমএলটির শিক্ষার্থী আসমা খাতুন। এলএমএএফপির শিক্সার্থী চিৎলার আবু হাসান জানান ১৭ হাজার টাকার চুক্তিতে তিনি ভর্তি হয়েছেন। প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ইউসুফ আলী সাজ্জাদ জানান- সাধারণত দুটি বিষয়ে বেশি ছাত্র ছাত্রিভর্তি হয় এখানে। একটি প্যারামেডিকেল অপরটি নার্সিং। প্যারামেডিকেলে ৩৫ হাজার ৫শ এবং নার্সিংএ ৩৩ হাজার ৫শ টাকা নেয়া হয়।
মেহেরপুরের সিভিল সার্জন জি কে এম শামসুজ্জামান এ প্রসঙ্গে জানান- প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে তার জানা নেই। যদি স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের অনুমোদন না থাকে তাহলে প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করতে পদক্ষেপ নেবেন।
"