তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি

  ১৫ আগস্ট, ২০২০

ডিজে শাকিলের অপকর্মের চাঞ্চল্যকর তথ্য

রিশান গ্রুপের চেয়ারম্যান ডিজে শাকিল

সিরাজগঞ্জের তাড়াশের রিশান গ্রুপের আলোচিত চেয়ারম্যান বাংলাদেশের প্রতারক চক্রের মূল হোতা ডিজে শাকিল গ্রেফতার হবার পর তার নানা অপকর্মের চাঞ্চল্যকর তথ্য বেড়িয়ে আসছে। তার এই অপকর্ম সফল করার জন্য গড়ে তোলেন দেশব্যাপী বিশাল দালাল চক্র। আর এই দালালরাই পার্টিদের বিভিন্ন ধরনের লোভ দেখিয়ে নিয়ে আসত অফিসে। বড় পার্টি আসলে তাদের আপ্যায়ন করা হতো রাজকীয়। ডিজে শাকিল তার সহযোগীদের সঙ্গে গ্রেফতার হবার পর মুখ খুলতে শুরু করেছেন—কিভাবে প্রতারিত, অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এমনকি তার দালালদের করা মিথ্যা মামলায় এলাকা ছাড়া হয়েছে।

ভুক্তভোগী তাড়াশ উপজেলার বারুহাস গ্রামের আব্দুস সালাম জ্যোতি জানান, আমার ছেলের বন্ধুর সাথে দালাল চক্রের সদস্যের পরিচয় হয়। রেলওয়ের সহকারী স্টেশন মাস্টারের চাকরি দেবার কথা বলে ৯ লাখ টাকায় রফা হয় এবং আমার মাধ্যমে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। কিছুদিনের মধ্যে একটি ভাইভা কার্ড হাতে দিয়ে ১২ লাখ টাকা দাবি করেন। একদিন পরেই ঢাকায় গিয়ে প্রার্থী জহির আহম্মেদের কাছ থেকে কার্ডটি নিয়ে নেওয়া হয়। আর বলা হয়, ভাইভা দিতে হবে না, টাকা দাও সরাসরি নিয়োগ হবে। তখন রেলওয়ে ঢাকার অফিসে খোঁজ নিলে জানা যায়, এ ধরনের কোনো নিয়োগ নাই। পরে টাকা ফেরত চাইতে গেলে অকর্থ্য ভাষায় গালাগালি করে টাকা না দিয়ে তাড়িয়ে দেয়। অনেক চেষ্টা করেও টাকা উঠানো সম্ভব হয়নি।

প্রাপ্ত তথ্য আরও জানা যায়, ওই সব দালালদের মাধ্যমে চাকরি দেবার নাম করে নাটোর বনপাড়ার বুলবুল আহম্মেদের কাছ থেকে ৫ লাখ, নাটোর নিচা বাজার এলাকার সৈকতের কাছ থেকে ৯ লাখ, মথুরাপুরের মনির কাছ থেকে ৪ লাখ, সোলাপাড়ার শরিফুলের কাছ থেকে ৪ লাখ ও সোলাপাড়ার নুরুলের কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এই সমস্ত দালালের মধ্যে মানুষের মধ্যে গ্রহণযোগ্য স্কুলের শিক্ষক কলেজের প্রভাষক মাওলানাসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যক্তির আগমন ঘটে।

উল্লেখ্য, ১২ আগস্ট বগুড়া ডিবি পুলিশের ইনসপেক্টর ইমরান আহমেদ তুহিনের নেতৃত্বে ডিবির একটি চৌকস টিম ডিজে শাকিলকে ২ সহযোগীসহ গ্রেফতার করে। ডিবি ইনসপেক্টর বলেন, ডিজে শাকিল চাকরি বাজার পত্রিকায় ইন্টারন্যাশনাল লোন সার্ভিসের নামে একটি বিজ্ঞাপন দিলে তাতে আকৃষ্ট করেন বগুড়ার আমায়রা এগ্রো ফার্মের সত্বাধিকারী আমানত উল্লাহ তারেক ও অভি এগ্রো ফার্মের সত্বাধিকারী আশিক দৌলয়ারাকে। তাদেরকে লোন পাইয়ে দেবার নাম করে ১৪ লাখ ৩৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন ডিজে শাকিল। প্রমাণ স্বরুপ তাদেরকে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সাড়ে চার কোটি টাকার ২টি চেক দেন। পরবর্তীতে তারা জানতে পারেন চেকগুলো ভুয়া ও এবং তারা প্রতারণার শিকার হন।

বগুড়া পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা জানান, প্রতারক চক্রের ওই তিন সদস্যকে গ্রেফতারের সময় তাদের অফিসের কম্পিউটার, কয়েকটি ফাইল এবং ১২শ ১ কোটি ৭২ লাখ ১০ হাজার টাকার ভুয়া চেক জব্দ করা হয়। এ প্রতারক চক্র তিন শতাধিক ব্যাংক লোন দেওয়ার নামে বিভিন্ন অনলাইনে ভুয়া বিজ্ঞপ্তি ছাড়ে। তারা সামরিক বাহিনী, সরকারি প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন মিডিয়ার নিয়োগপত্রসহ আইডি কার্ডের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করতেন।

তিনি আরও বলেন, প্রতারণার কাজ করতে তারা ২২টি নিউজ পেপার, ১২টি ফেসবুক আইডি এবং ৩৫টি ফেসবুক পেজ তৈরি করেছে।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
চাঞ্চল্যকর তথ্য,ডিজে শাকিল,অপকর্ম,তাড়াশ,রিশান গ্রুপ,দালাল
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close