কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি

  ১০ জানুয়ারি, ২০২৪

কসবায় পূর্ব শত্রুতার জের

ঘরে ঢুকে কিশোরীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা

ছবি: সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় ঘরের দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে ছুরিকাঘাতে হোসনে আরা (১৪) নামে এক মাদরাসা ছাত্রীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় মেয়েকে রক্ষা করতে গিয়ে তার মাও আহত হন। বুধবার (১০ জানুয়ারি) ভোরের দিকে উপজেলার মুলগ্রাম ইউনিয়নের নিমবাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পূর্ব শত্রুতার জেরে পরিপক্ষের লোকজন এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে দাবি করেছেন মাদরাসাছাত্রীর মা নাদিরা বেগম। হোসনে আরা নিমবাড়ী গ্রামের নাসির মিয়ার মেয়ে। সে স্থানীয় একটি মাদরাসায় অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত।

ছাত্রীর মা নাদিরা বেগমের দাবি, উপজেলার নিমবাড়ী গ্রামের রতন মিয়া, মোস্তফা মিয়া এবং একই বাড়ির শিবা মিয়া ও রুবেল মিয়া হামলা করে তার মেয়ে হত্যার করছে। তবে আগের রহিজ মিয়া হত্যাকাণ্ডের রায়ের মোড় ঘোরাতে হোসনে আরাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে বলে দাবি করেছে অভিযুক্তরা।

এদিকে খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। পরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সোনাহার আলী ও কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাজু আহাম্মদ।

হোসনে আরার মা বলেন, পূর্ব শত্রুতার কারণে বুধবার ভোরে নিমবাড়ী গ্রামের রতন, মোস্তফা, শিবা ও রুবেল মিয়া দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে ঘুমন্ত হোসনে আরাকে ছুরিকাঘাত করে। এ সময় মেয়েকে বাঁচাতে গেলে তাকে ছুরিকাঘাত করে তারা। পরে হোসনে আরাকে উদ্ধার করে কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক একরাম হোসেন তাকে মৃত ঘোষণা করেন।


  • রহিজ মিয়া হত্যাকাণ্ডের রায়ের মোড় ঘোরাতে হোসনে আরাকে হত্যা, দাবি অভিযুক্তদের।
  • মেয়েকে রক্ষা করতে গিয়ে ছুরিকাঘাতে আহন তার মা।

জানা গেছে, নিমবাড়ী গ্রামে আধিপত্য বিস্তারে দীর্ঘ বছর ধরে জমসেদ ভূইয়ার নেতৃত্বে কাবিলের গোষ্ঠি ও সুদন ভূইয়ার নেতৃত্বে পান্ডবের গোষ্ঠির মধ্যে বিরোধ চলছিল। ওই দ্বন্দ্বের জেরে ২০১৭ সালের ৪ অক্টোবর পান্ডবের গোষ্ঠীর রহিজ মিয়া ও ২০২১ সালের ১৩ মার্চ রহিজের বড় ভাই ফায়েজ মিয়া কাবিলের গোষ্ঠীর লোকজনের হাতে নিহত হন। রহিজ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলার রায় ১৫ জানুয়ারি রায় হওয়ার কথা।

অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে রতন মিয়া মোবাইল ফোনে জানান, কাবিলের গোষ্ঠীর লোকজনের করা আগের দুটি হত্যা মামলার রায় ঘোষণা হওয়ার কথা রয়েছে ১৫ জানুয়ারি। ওই রায়ে সাজা হবে ভেবে কাবিলের গোষ্ঠির সাক্কু মিয়ার নেতৃত্বে পরিকল্পিতভাবে হামলা করে। তারা মোটা অংকের টাকার লোভ দেখিয়ে ওই মেয়েটিকে হত্যা করে নিজেদের সাজা থেকে বাঁচাতে ও আমাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা কছে। মেয়েটি সম্পর্কে আমার ভাতিজি হয়। তাকে মারতে যাবো কেন? এটা আমাদের বিরুদ্ধে এটি পরিকল্পিত সাজানো ঘটনা।’

জানতে চাইলে কসবা থানার ওসি রাজু আহাম্মেদ জানান, হোসনে আরার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এলাকায় ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। মেয়েটির পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পিডিএস/আরডি

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ব্রাহ্মণবাড়িয়া,কসবা,হত্যা
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close