খুলনা ব্যুরো

  ১৪ মে, ২০২২

নিলামের বাইরে অতিরিক্ত সরকারি গাছ কর্তন

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার গাজীরহাট ইউনিয়নের মাঝিরগাতি হতে সোনাকুড় সড়কের পাশে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে নিলামের বাইরে অতিরিক্ত সরকারি গাছ কর্তনের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনা তদন্তে সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অতিরিক্ত গাছ কর্তনের সত্যতা পেয়েছে বলে বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানায়। ঘটনা তদন্তে উপজেলা প্রশাসন তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ৩১ মার্চ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে গাজীরহাট ইউনিয়নের মাঝিরগাতী থেকে সোনাকুড় সড়কের পার্শ্বে অবস্থিত মরা, শুকনা, ঝুঁকিপূর্ণ শিশু গাছসমূহ (যেখানে যে অবস্থায় আছে) প্রকাশ্যে নিলাম হয়। একই দিন নিলাম মূল্যায়ন কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে এস এম হাবিবুর রহমান তারেক নামের এক ব্যক্তিকে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়।

নিলাম মূল্যায়ন কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাকে ২ লাখ ৬৬ হাজার টাকা জমা দেওয়ার জন্য নোটিশ জারি করা হয় এবং ৫ এপ্রিল থেকে ৫ মে’র মধ্যে ৩৩৭ টি শিশু গাছ কর্তনের আদেশ প্রদান করেন। সে মোতাবেক তিনি উল্লেখিত নিলামের টাকা যথাযথ কর্তৃপক্ষকে প্রদান করেন।

অভিযোগ উঠেছে, উক্ত ঠিকাদার নির্ধারিত মরা, শুকনা, ঝুঁকিপূর্ণ শিশু গাছ কর্তনের পাশাপাশি নিলামের বাইরে অতিরিক্ত মূল্যবান গাছ কাটা শুরু করেন। বিষয়টি এলাকাবাসীর গোচরীভূত হলে তারা উপজেলা চেয়ারম্যান এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেন। যার প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (১২ মে) উপজেলা বন কর্মকর্তাসহ সরকারের কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থা দিনভর অনুসন্ধান করে অতিরিক্ত মূল্যবান সরকারি গাছ কাটার সত্যতা নিশ্চিত করেন।

উপজেলা বন কর্মকর্তা সৈয়দ আবুল বাশার বলেন, আমরা নিলামের গাছগুলো সংখ্যার মাধ্যমে চিহ্নিত করে দিয়েছিলাম। এর বাইরে অতিরিক্ত ২০ টি গাছ কাটার প্রমাণ পেয়েছি।

নিলামের বাইরে অতিরিক্ত গাছ কাটার বিষয়টি নিয়ে জানতে চাওয়া হলে উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ মারুফুল ইসলামকে বলেন, সরকারি নিয়ম কানুন মেনে আমরা উল্লেখিত সড়কের পার্শ্বে অবস্থিত মরা, শুকনো, ঝুঁকিপূর্ণ শিশু গাছ সমূহ কাটার প্রকাশ্য নিলামে ডাকের ব্যবস্থা করি। বিভিন্ন লোক মারফত জানতে পারি নিলামের বাইরে অতিরিক্ত মূল্যবান সরকারি গাছ কাটা হচ্ছে। বিষয়টি জানার পর সরকারি বিধি মোতাবেক সরেজমিনে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি নিশ্চিত করেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাহবুবুল আলম বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে দেখা যায় যে, অতিরিক্ত গাছ কাটা হয়েছে। এ অভিযোগে ইতোপূর্বে আমরা দুই বার বাঁধা দিয়েছি। নিলামের বাইরে অন্য গাছ কাটলে তার দায়ভার ঠিকাদারকে নিতে হবে। আমরা সরকারের স্বার্থ রক্ষা করবো।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরও জানান, অধিকতর তদন্তের জন্য উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলিমুজ্জামান মিলনকে আহ্বায়ক, উপজেলা প্রকৌশলী আবু তারেক সাইফুল কামাল ও উপজেলা বন কর্মকর্তা সৈয়দ আবুল বাশারকে সদস্য করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ৫ কার্যদিবসের মধ্যে সরেজমিনে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের সুস্পষ্ট মতামত প্রদান করতে বলা হয়েছে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
সরকারি গাছ,দিঘলিয়া
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close