‘অশুভ দানব’ তাড়াতে ৫ বছরের শিশুকে পুড়িয়ে ছাই!
সেই মধ্যযুগের কালো জাদু কিংবা ডাইনি বিদ্যার চর্চা এখনো ফুরিয়ে যায়নি। কালো জাদুর তেমনই এক চর্চা ‘ভুডু’। এই বিদ্যা চর্চা করতে গিয়ে মাত্র ৫ বছর বয়সী এক মেয়েকে বেঁধে পুড়িয়ে দেওয়া হলো। উদ্দেশ্য, ওই শিশুর ভেতরে থাকা ‘দানবটাকে’ বের করে আনা। বাচ্চাটাকে এমনভাবে পোড়ানো হয়েছে যে তার দেহাবশেষ খুঁজে পাওয়াও দুষ্কর হয়ে পড়েছে। তার দেহটি প্রায় ছাই হয়ে গেছে।
সম্প্রতি এই ঘটনা ঘটেছে আমেরিকার ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যে। এ ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে দুই বোনকে। একজন পেগি লাবোসেরে (৫১) অন্যজন র্যাচেল হিলাইরে (৪০)। বাচ্চাটি বাজে ব্যবহার করত। কিছু উল্টো-পাল্টাও মনে হতো। এতে তাদের বিশ্বাস জন্মে যে, মেয়েটার ওপর কোনো দানব ভর করেছে। ওটা বাস করতে তার মধ্যে। মানুষকে স্তম্ভিত করেছে ঘটনাটি। সেখানেই শেষ নয়। বাচ্চাটির আট বছর বয়সী ভাইয়ের মাথাটা মেশেটি দিয়ে কেটে ফেলার হুমকি দিয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
নৃশংস ঘটনার বিস্তারিত জানায় ভাই। সে বলে, ছোট বোনটাকে অন্তত দুইবার বিশেষ আয়োজনের মধ্যে রশিতে ঝোলাতে হয়। তার মুখ আগুনে পোড়ানো হয়। বিশাল একটি সূঁচের মতো ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার হাতও কেটে ফেলা হয়েছিল। তার রক্ত দিয়ে নানা আঁকিবুকি করা হয়েছে।
এদিকে, ম্যাসাচুসেটসের ইস্ট ব্রিজওয়াটারের দুই বাসিন্দা তাদের ছোট বোনকে অত্যাচারের তথ্য অস্বীকার করেছেন। এ ধরনের কোনো কাজই করেনি বলে দাবি তাদের। পুলিশ জানায়, মেয়েটার মা হাইতি থেকে আসা এক হেয়ার স্টাইলিস্ট।
আসলে দুই অভিযুক্ত বোনের মধ্যে লাবোসিরে তার কাছে চুলের পরিচর্যার জন্যে যেতেন। মেয়েটার মা-ই নাকি ‘ভুডু’র মাধ্যমে ভূত তাড়ানোর অনুরোধ করেন। মায়ের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না আনা হলেও তার মানসিক চিকিৎসার দরকার আছে বলে মনে করে পুলিশ।
আদালতে দুই বোন জানিয়েছে, তারা ‘পরিচ্ছন্নতার গোসল’ করিয়েছেন বাচ্চাটিকে। এর আগেও নিজের পরিবার ও বন্ধুদের এই গোসল করিয়েছিলেন। এ কাজে অনেক সময়ই বিশেষ প্রার্থনা, ইউক্যালিপটাসের তেল ও সমুদ্র থেকে আনা লবণ দেহে মাখতে হয়। বিশেষ তেল পোড়াতেও হয়। আর অনেক সময়ই অশুভ আত্মা বেরিয়ে যাওয়ার পর বাচ্চাদের দেহ পুড়ে যায়, জানান দুই বোন।
ভুডু এক বিশেষ চর্চা যা শত শত বছর আগে দেখা যেত ক্যারিবিয়ানদের মধ্যে। প্রাথমিকভাবে হাইতিতে এর চর্চা শুরু হয় বলে জানা যায়। সেখানে একে ‘ভুদোউ’ বলা হয়।
পিডিএসও/তাজ