নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

নির্ধারিত দামে বিক্রি হয় না এলপিজি

সরকারিভাবে এলপিজির দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও তা মানা হচ্ছে না বাজারে। গ্রাহকরা প্রতি ১২ কেজির এলপিজির জন্য গুনছেন ১৭৫০ টাকা। সরকারিভাবে ফেব্রুয়ারি মাসের জন্য দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে ১৪৯৮ টাকা। অন্যদিকে বিইআরসি জানুয়ারি মাসের জন্য প্রতি ১২ কেজি এলপিজির দাম ১ হাজার ২৩২ নির্ধারণ করে দেয়। তখন ১ হাজার ৫৫০ টাকার নিচে ১২ কেজির প্রতি বোতল এলপিজি বিক্রি হয়। ফেব্রুয়ারি মাসে দাম নির্ধারণ করার পর এখন বাজারে তা ১৫০০ থেকে সর্বোচ্চ ১৮০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। রাজধানীর রামপুরার বাসিন্দা রুশিয়া মিলি জানান, তিনি গত মাসের শুরুতে এক হাজার ৪০০ টাকায় ১২ কেজির এক বোতল এলপিজি কিনেছেন। মাসের শেষে এসে সেই দাম বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৭৫০। সরকারিভাবে যে দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয় কোনো দিনই তা মানা হয় না। তাহলে কেন লোক দেখানোর জন্য এই দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়- তা জানতে চান তিনি।

রাজধানীর হাতিরপুলের এক খুচরা এলপিজি ব্যবসায়ী জানান, তারাই ডিলারদের কাছ থেকে এক হাজার ৪৫০ টাকার বেশি দামে এলপিজি কিনছেন। এর সঙ্গে প্রত্যেক বোতলের পরিবহন খরচ রয়েছে। সেটি যোগ করলে এলপিজির ক্রয়মূল্য দাঁড়ায় ১ হাজার ৪৮০ টাকা। এরপর তিনি পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, দোকান ভাড়া, কর্মচারী, আমার নিজের সংসার, আমার তাহলে কত বিক্রি করা উচিত?

প্রতি মাসে সরকারিভাবে বিইআরসি এলপিজির দাম নির্ধারণ করে দেয়। আগে সেই দাম যথেষ্ট হচ্ছে না বলে এলপিজি অপারেটররা বিরোধিতা করে। পরে বিইআরসি আরও এক দফা শুনানি করে অপারেটরদের মন রাখে। তখন অপারেটররা দাম ঠিক করে দেওয়ার বিষয়টি মেনে নেন। তবে সেই দামে গ্রাহক এলপিজি পান না।

বিইআরসি জানায়, ডিসেম্বর মাসের জন্য সৌদি আরামকোর প্রোপেন ও বিউটেনের ঘোষিত সৌদি সিপি (কন্ট্রাক্ট প্রাইস) যথাক্রমে প্রতি টন ৬৫০ মার্কিন ডলার এবং ৬৫০ মার্কিন ডলার ছিল। এটি জানুয়ারি মাসে কমে যথাক্রমে ৫৯০ এবং ৬০৯ ডলার হয়েছিল। এবার তা আবার বেড়ে প্রোপেন ও বিউটেনের ঘোষিত সৌদি সিপি (কন্ট্রাক্ট প্রাইস) ৭৯০ মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। দেশের এলপিজির কাঁচামাল প্রোপেন ও বিউটেনের সংমিশ্রণের অনুপাত ৩৫:৬৫।

রাজধানীর মালিবাগের বাসিন্দা হেনা মমতাজ জানান, প্রতি মাসেই এলপিজির জন্য বাড়তি দাম পরিশোধ করতে হচ্ছে। এক মাসের চেয়ে আরেক মাসে এসে দাম বাড়ছে। আমাদের মতো সীমিত আয়ের মানুষের এই চাপ নেওয়া কঠিন। প্রসঙ্গত, প্রতি মাসে এখন এলপিজির চাহিদা রয়েছে এক লাখ ২০ হাজার টন। সে হিসেবে বার্ষিক এলপিজির চাহিদা ২ লাখ ৪০ হাজার টন। ১৪৯৮ টাকার ১২ কেজি এলপিজির দাম ১৮০০ টাকা পর্যন্ত রাখার কারণ জানতে চাইলে ডিলাররা বলছেন, দায় কোম্পানির। কোম্পানি বলছে, ডিলারের বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে প্রায় ১৮টি কোম্পানি এলপিজি গ্যাস বিক্রি করছে। সরকারি দামে এলপিজি সিলিন্ডার কখনো বিক্রি হয়নি বলে বরাবরই অভিযোগ ছিল। সবসময় নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামেই কিনতে হয়েছে গ্রাহকদের, কিন্তু এবার সেটা ‘অতিরিক্ত বেশি’ দামে বিক্রি হচ্ছে। গ্রাহকের কোনো উপায় নেই, বাধ্য হয়েই কিনতে হচ্ছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close