নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২১ নভেম্বর, ২০১৯

রেমিট্যান্সের বিপরীতে প্রণোদনা আরো সহজ হলো

প্রবাসীদের রেমিট্যান্সের বিপরীতে নগদ সহায়তা দেওয়ার কার্যক্রম আরো সহজ করল সরকার। রেমিট্যান্স গ্রহণের জন্য আগে পাঁচ দিনের মধ্যে কাগজপত্র জমা দেওয়ার নিয়ম থাকলেও, এখন থেকে সংশ্লিষ্টরা ১৫ দিনের সময় পাবে। গতকাল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ এ-সংক্রান্ত নতুন নীতিমালা প্রকাশ করেছে।

এরই মধ্যে জাতীয় বাজেটের ঘোষণা অনুযায়ী প্রবাসী বাংলাদেশীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের বিপরীতে নগদ সহায়তা দেওয়া শুরু হয়েছে। দেশে বৈধ উপায়ে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের (প্রবাসী আয়) ওপর ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। অক্টোবর থেকে এই কার্যক্রম শুরু হলেও চলতি বছরের জুলাই থেকেই এই বিশেষ প্রণোদনা পাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের গুরুত্ব বিবেচনায় দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমজীবী মানুষের কষ্টার্জিত বৈদেশিক আয় বৈধ উপায়ে দেশে পাঠাতে উৎসাহিত করতে রেমিট্যান্সের বিপরীতে সরকার প্রণোদনা/নগদ সহায়তার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ সুবিধা ওয়েজ আর্নার্স রেমিট?্যান্সের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।

জানা যায়, বিদেশ থেকে পাঠানো প্রবাসী বাংলাদেশিদের রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে রেমিট্যান্স আহরণকারী ব্যাংক প্রযোজ্য বিনিময়হারে টাকায় রূপান্তরিত অর্থ প্রচলিত বিধিবিধান পরিপালন করে উপকারভোগীর হিসাবে জমা/উপকারভোগীকে প্রদানের সময় ওই অর্থের ওপর ২ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা প্রদান করবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তির আওতায় পরিচালিত বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউস/ব্যাংকের মাধ্যমে অর্থ পাঠাতে হবে। একজন প্রবাসীর রেমিট্যান্সের ওপর প্রতিবারে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৫০০ ডলার/সমমূল্যের অর্থের জন্য কোনোপ্রকার কাগজপত্র ছাড়াই প্রণোদনা সুবিধা পাওয়া যাবে।

১৫০০ ডলারের বেশি লেনদেনে প্রাপককে রেমিট্যান্স প্রেরকের বৈধ কাগজপত্র (যেমনÑ পাসপোর্টের কপি এবং বিদেশি নিয়োগদাতা কর্তৃক প্রদত্ত নিয়োগপত্রের কপি/বিএমইটি প্রদত্ত সনদপত্রের কপি, ব্যবসায় নিয়োজিত ব্যক্তির ক্ষেত্রে ব্যবসার লাইসেন্সের কপি ইত্যাদি) রেমিট্যান্স প্রদানকারী ব্যাংক শাখায় দাখিল সাপেক্ষে নগদ সহায়তা পাওয়া যাবে। বিধিবহির্ভূতভাবে নগদ সহায়তা গ্রহণের প্রমাণ পাওয়া গেলে পরে তারা এ সুবিধাপ্রাপ্য হবে না এবং প্রদত্ত অর্থ তার কাছ থেকে আদায় করা হবে। বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে পূর্ববর্তী এক বছরের প্রবাসী আয় আহরণের গড় মাসিক অঙ্কের ভিত্তিতে তিন মাসের জন্য প্রয়োজনীয় নগদ সহায়তার অনুমিত পরিমাণের তহবিল সরকারি বরাদ্দ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক ইমপ্রেস্ট আগাম আকারে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের অনুকূলে হস্তান্তর করবে।

জানা যায়, রেমিট্যান্স আহরণকারী ব্যাংক নগদ সহায়তা প্রদানের জন্য একটি পৃথক টাকা হিসাব পরিচালনা করবে। প্রাপকের হিসাব রেমিট্যান্স আহরণকারী ব্যাংক ভিন্ন অন্য কোনো ব্যাংকে হলে রেমিট্যান্স আহরণকারী ব্যাংক ২ শতাংশ নগদ সহায়তাসহ বিইএফটিএন, আরটিজিএস, এনপিএসবি বা এমএফএসের মাধ্যমে প্রাপকের হিসাবে জমা করবে। বেনিফিশিয়ারির মোবাইল ফোনে তার অনুকূলে রেমিট্যান্সের টাকা জমা হওয়ার মেসেজ/লেনদেনের রসিদ প্রদান করবে। ওই মেসেজে/লেনদেনের রসিদে সরকার প্রদত্ত নগদ সহায়তার পরিমাণ পৃথকভাবে উল্লেখ থাকতে হবে। শর্ত মোতাবেক প্রাপক রেমিট্যান্স গ্রহণের দিন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল না করলে পরবর্তী ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে তা উপস্থাপন করলে রেমিট্যান্স প্রদানকারী ব্যাংক তাকে প্রাপ্য নগদ সহায়তা প্রদান করবে। আগের নীতিমালায় এটি পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে জমা দেওয়ার নিয়ম ছিল। এটি বর্তমানে আরো সহজ করা হলো।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close