অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, আঞ্চলিক বাণিজ্যে বড় বাধা শুল্ক। তবে কিছুটা অশুল্ক বাঁধাও রয়েছে। সেগুলো দূর করতে চেষ্টা চলছে। এজন্য কানেকটিভিটি বাড়ানো হচ্ছে বলে জানান তিনি।

গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে বিশ্বব্যাংক আয়োজিত দক্ষিণ এশিয়ার বাণিজ্য বাঁধা বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে ‘এ গ্লাস হাফ ফুল: দ্য প্রমিজ অব রিজিওনাল ট্রেড ইউনিয়ন ইন সাউথ এশিয়া’ শীর্ষক এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিশ্বব্যাংক। অনুষ্ঠানে প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করেন বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের প্রধান অর্থনীতিবিদ ও সমন্বয়ক সঞ্জয় কাঠুরিয়া। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান ড. জায়েদি সাত্তার, বিশ্ব ব্যাংকের বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফান।

সঞ্জয় কাঠুরিয়া বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সাফটা চুক্তি রয়েছে। ফলে কোনো শুল্ক থাকার কথা নয়। অথচ এই অঞ্চলেই বেশি শুল্ক রয়েছে। সরাসরি শুল্কের বাইরেও আধা ট্যারিফ রয়েছে। এটাকে বলা যায় কোনো শুল্ক নেই তবুও সবচেয়ে বেশি শুল্ক।

বিশ্বব্যাংকের এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চার ধরনের বাঁধার কারণে বাণিজ্য বাড়ছে না। এর মধ্যে রয়েছে উচ্চ শুল্ক, আধা শুল্ক ও অশুল্ক বাঁধা, কানেকটিভিটি খরচ এবং সীমান্ত আস্থার সঙ্কট।

এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের বাণিজ্য ইউরোপ, আমেরিকা নির্ভর। কারণ সেখানে সুবিধা বেশি পাওয়া যায়। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য আরো বাড়াতে হবে । ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে স্পর্শকাতর তালিকায় থাকা পণ্যের সংখ্যা কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ৪৭ এর মতো কানেকটিভিটি সম্ভব নয়, তবে চেষ্টা চলছে। সাফটা কার্যকরের মাধ্যমে নতুন করে কানেকটিভিটি কার্যকর করা হবে। আমরা চেষ্টা করছি, গতকালও ভারতের সঙ্গে কানেকটিভি বাড়াতে কিছু প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এগুলো বাস্তায়ন হলে আমাদের কানেকটিভিটি আরো বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মানুষের তৈরি বাণিজ্য বাঁধা দূর করতে পারলে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর বাণিজ্য ৩ গুণ বাড়ানো সম্ভব এবং বর্তমানের আঞ্চলিক বাণিজ্য ২৩ বিলিয়ন ডলার থেকে ৬৭ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা সম্ভব হবে।

এতে আরো বলা হয়, বিশ্বে বাংলাদেশের বাণিজ্য এখন ৮৪ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার। অথচ দক্ষিণ এশিয়ায় বাণিজ্য হচ্ছে মাত্র ৭ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের। সারা বিশ্বে যেখানে ১ ট্রিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হচ্ছে, সেখানে গত ২৫ বছরে এ অঞ্চলের বাণিজ্য ২৩ বিলিয়ন ডলারে আটকে আছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য হচ্ছে ৭ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার। এটি ১৮ দশমিক ৯ বিলিয়ন করা সম্ভব বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

"