শরীয়তপুর প্রতিনিধি

  ০৬ আগস্ট, ২০২০

রক্ষা বাঁধে ভাঙন, সুরেশ্বও দরবার শরিফে আতঙ্ক

পদ্মা নদীর প্রবল স্রোতে নদীর তলদেশ থেকে জিওব্যাগ ও সিসি ব্লক সরে যাওয়ার কারণে পদ্মা নদীর তলদেশে গর্ত হয়ে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। এতে সুরেশ্বর দরবার শরিফ রক্ষা বাঁধের প্রায় ৬০ মিটার পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে। দরবার শরিফ ও আশপাশের লোকজন ভাঙনের ভয়ে আতঙ্কে আছেন বলে জানিয়েছে শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড।

সরেজমিন সুরেশ্বর এলাকার স্থানীয় তাজেন নেছা ও মজিবর রহমান বয়াতি জানান, পদ্মা নদীর প্রবল স্রোতে নদীর তলদেশ থেকে জিওব্যাগ ও সিসি ব্লক সরে গিয়ে পদ্মা নদীর তলদেশে গর্ত হয়ে সুরেশ্বর দরবার শরিফ ও আশপাশে ভাঙন শুরু হয়। ফলে ঐতিহাসিক সুরেশ্বর দরবার শরিফ রক্ষা বাঁধের প্রায় ৬০ মিটার জায়গা পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। গত এক সপ্তাহ ধরে এ ভাঙন শুরু হলে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন রোধে তিনটি স্থানে প্রায় ৩ হাজার ৭০০ জিওব্যাগ ও ৪ হাজার সিসি ব্লক ডাম্পিং করেছে। সেখানে ডাম্পিং কাজ এখনো চলছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, আরো ৩০ হাজার জিওব্যাগ ডাম্পিং করা হবে। ২০০৭ ও ২০১২ সালে সুরেশ্বর দরবার শরিফ ও আশপাশে ভাঙন দেখা দিলে পানি উন্নয়ন বোর্ড ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে ভাঙন রোধে সুরেশ্বর দরবার শরিফ ও আশপাশে ৮৫০ মিটার স্থায়ী রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়। চলতি বর্ষা মৌসুমে পদ্মার পানি বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে ওই বাঁধে পুনরায় ভাঙন দেখা দেয়। দরবার শরিফ ও আশপাশের লোকজন ভাঙন আতঙ্কে রয়েছেন। সেখানের লোকজন দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করছে। সারাক্ষণ আতঙ্কের মধ্যে দিন পার করছেন। অনেকেই একাধিকবার ভাঙনের কবলে পড়ে ভিটেমাটি সহায়-সম্বল হারিয়ে নতুন জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন।

ভাঙনকবলিত লোকজন পদ্মার পাড়ে বসে পদ্মা নদীর উত্তাল ঢেউ দেখছেন। তারপরও ভয়ভীতি উপেক্ষা করে নিজের ভিটায় বসে আছেন। ডাম্পিং করে ভাঙন রোধ করতে না পারলে সুরেশ্বর দরবার শরিফ ও বহু বাড়িঘর এবং স্থাপনা পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। তাই ওই এলাকায় স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য স্থানীয়রা সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।

সুরেশ্বর এলাকার ইলিয়াছ খান বলেন, এ পর্যন্ত ভাঙনের কারণে আমার বাড়িঘর পাঁচবার বিলীন করে নিয়েছে পদ্মা। নতুন করে সুরেশ্বর এলাকায় বাড়ি করে বসবাস করছি। এটুকু নিয়ে গেলে কোথায় যাব কী করব জানি না। ভাঙন রোধ করতে না পারলে এই এলাকা পদ্মায় বিলীন হয়ে যাবে।

সুরেশ্বর দরবার শরিফের প্রধান মোতাওয়াল্লি সৈয়দ শাহ সুফি কামাল নুরী বলেন, গত কয়েক বছর বেড়িবাঁধের জন্য আমরা শান্তিতে ছিলাম। পদ্মার ভাঙনে দরবার শরিফ এলাকায় বেড়িবাঁধের কিছু অংশ বিলীন হয়ে গেছে। আমরা আতঙ্কে আছি। শেষ রক্ষা হবে কিনা জানি না।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ফরিদপুর অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবদুল হেকিম বলেন, ভাঙন রোধে গত কয়েক দিনে জিওব্যাগ ও সিসি ব্লক ডাম্পিং কাজ চলছে। এরই মধ্যে প্রায় ৩৭ হাজার জিওব্যাগ ও ৪ হাজার সিসি ব্লক ডাম্পিং করা হয়েছে। ডাম্পিং কাজ চলমান রয়েছে। শুকনো মৌসুমে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close