মঞ্জুরুল হক, জামালপুর

  ১৬ মার্চ, ২০২৩

বদলে গেছে চরাঞ্চলের কিশোরীদের স্বাস্থ্যসেবা

ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশন (ইএসডিও) বাস্তবায়নাধীন, সুখী জীবন প্রকল্প বদলে দিয়েছে জামালপুর চরাঞ্চলের দুই উপজেলার কৈশোরদের স্বাস্থ্যসেবার মান। প্রকল্পের আওতায় যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ে সঠিক তথ্য, অধিকারভিত্তিক প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন সহায়তাই মূল লক্ষ্য।

জানা গেছে, জেলায় সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ উপজেলা হলো ইসলামপুর ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা। ব্রহ্মপুত্র ও যমুনার বিভিন্ন এলাকা নদীভাঙন, খরা ও বন্যাপ্রবণ এলাকা হিসেবে পরিচিত। ওই দুই উপজেলার প্রত্যন্ত চর এলাকায় প্রতি বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত হেনে থাকে। দেশের প্রায় এক-পঞ্চমাংশের বেশি কিশোর-কিশোরী। চর এলাকায় তারা বিভিন্ন প্রতিকূল পরিবেশে শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে সমাজে খাপ খাইয়ে প্রাপ্ত বয়সে পদার্পণ করে। তাদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য, সহিংসতা, পুষ্টি, মানসিক স্বাস্থ্য ও বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ ও নানা সমস্যার মুখোমুখি হয়। এতে বেশির ভাগ কিশোর-কিশোরী আঠারো বছরের আগেই বিয়ে করে।

অন্যদিকে পরিবার পরিকল্পনার আধুনিক সেবা ও তথ্য না পাওয়ায় বেশির ভাগ কিশোরী বিয়ের প্রথম বছরেই অপরিকল্পিত গর্ভধারণ করে। ফলে তাদের নানা স্বাস্থ্যঝুঁকির সম্মুখীন হতে হয়।

আরো জানা গেছে, যুবক-যুবতীদের স্বাস্থ্য উন্নয়ন ও জীবনমান উন্নত করার লক্ষ্যে ইউএসএআইডির অর্থায়নে, পাথফাইন্ডার ইন্টারন্যাশনালের কারিগরি সহায়তায়, বাস্তবায়নকারী সংস্থা ইকো সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশন (ইএসডিও) ইসলামপুর ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার সুখীজীবন প্রকল্প ২০২১ সালের মে মাস থেকে কাজ শুরু করে।

প্রকল্পের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. আবদুল বারী সরকার বলেন, কর্ম এলাকায় ১৫-১৯ বছর বয়সি ৩৩০টি দলে ৩৩০০ জন কিশোর-কিশোরকে জীবন দক্ষতা অধিবেশন দেওয়ার মাধ্যমে সজাগ করাসহ ১৯-২৪ বছর বয়সের বিবাহিত যুবক-যুবতী যারা প্রথম মা-বাবা হবেন তাদের প্রথম সন্তান গ্রহণে বিলম্বিত করা এবং প্রথম সন্তান থেকে দ্বিতীয় সন্তানের মাঝে বিরতির বিষয়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা দেওয়া। সেই সঙ্গে পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতির ব্যবহার, খাদ্যপুষ্টি ও অপুষ্টিজনিত রোগপ্রতিরোধ, জেন্ডার, নারীর প্রতিহিংসতা প্রতিরোধ বিষয়ে সচেতনতা তৈরি ও ব্যক্তিগত জীবনেতা চর্চা ও অনুশীলনে উৎসাহিত করা হচ্ছে। প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য।

ইসলামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এ এ এম আবু তাহের বলেন, কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারের মাধ্যমে ওই দুই উপজেলার ৫১টি স্কুলের ২৭৯৯ জন কিশোরীকে আধুনিক স্বাস্থ্য উপকরণ ব্যবহার করে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ে অরিয়েন্টেশন করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রকল্প আওতায় অত্রালাকায় প্রায় দুই বছর ধরে স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে আসায় কিশোর-কিশোরীদের সংখ্যা পরিবার কল্যাণগুলোতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকারি, বেসরকারি ও এলাকার সম্পৃক্ততা থাকলে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বেশি সময় লাগবে না।

ইসলামপুর উপজেলার ৮ নম্বর পলবান্ধা ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমান কমল বলেন, আমার ইউনিয়ন পরিষদে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা করি। সভায় বন্যাকালীন নারী ও কিশোরী সহিংসতা প্রতিরোধে আশ্রয়ণ কেন্দ্রের নারী ও পুরুষদের আলাদা আবাসন টয়লেট, ব্রেস্টফিডিং ব্যবস্থা নিশ্চিত করি। এতে সুখী জীবন প্রকল্প অনেক সহযোগিতা করেছে। এলাকায় কিশোরীদের মানোন্নয়নে এই প্রকল্পের মেয়াদ বাড়াতে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানাই।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close