এ এফ এম মমতাজুর রহমান, আদমদীঘি (বগুড়া)

  ২৩ জানুয়ারি, ২০২৩

সান্তাহারে ট্রেনের টিকিট নিয়ে ভোগান্তি

যাত্রী বাড়লেও আসন কম

পশ্চিম বগুড়ায় অবস্থিত ব্রিটিশ আমলে নির্মিত সান্তাহার রেলওয়ের বৃহৎ স্টেশন। এটি বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রেলওয়ে স্টেশন। এ জংশন স্টেশন দিয়ে প্রতিদিন শত শত যাত্রী এবং আন্তঃনগর ট্রেন, মেইল ট্রেন, সাধারণ মেইল, মালামাল গাড়িসহ প্রায় ৩০টি ট্রেন চলাচল করে। রেলওয়ের পশ্চিম জোনের গুরুত্বপূর্ণ প্রথম শ্রেণির রেলস্টেশন হওয়া সত্ত্বেও সান্তাহার স্টেশনের জন্য আন্তনগর ট্রেনগুলোতে চাহিদার তুলনায় আসন বরাদ্দ কম। এতে ঢাকাসহ বিভিন্ন রুটে যাতায়াতকারী যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

সান্তাহার জংশন স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, সান্তাহার জংশন স্টেশন হয়ে দিন ও রাতে ঢাকাসহ অন্যান্য রুটে আন্তঃনগর মোট ২০টি ট্রেন চলাচল করে। এর মধ্যে ঢাকাগামী আন্তঃনগর একতা, দ্রুতযান, লালমনি, নীলসাগর ও রংপুর এক্সপ্রেস এবং খুলনাগামী সীমান্ত, রূপসা ও রাজশাহীগামী বরেন্দ্র ও তিতুমীর এক্সপ্রেস এবং মিটার গেজের উৎপত্তিস্থল সান্তাহার থেকে বুড়িমাড়ী পর্যন্ত চলে করোতোয়া আন্তঃনগর ও সান্তাহার থেকে দিনাজপুর চলে দোলনচাপা আন্তঃনগর।

সান্তাহার একটি ঐতিহ্যবাহী জংশন স্টেশন এবং নওগাঁ ও বগুড়া জেলার মোহনা। নওগাঁ ও বগুড়া জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত ট্রেন যাত্রী সান্তাহার স্টেশন থেকে ট্রেনে বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করে। আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর যাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও বরাদ্দকৃত আসন কম থাকায় টিকিট প্রাপ্তি নিয়ে দিন দিন জটিলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সান্তাহার স্টেশনের বুকিং অফিস সূত্রে জানা যায়, ঢাকাগামী একতা এক্সপ্রেসে আসন সংখ্যা ৫০টি এর মধ্যে শোভন চেয়ার কাউন্টারে ২৫টি, অনলাইনে ২২টি, দুটি কাউন্টারে এসি অনলাইনে একটি। লালমনি এক্সেপ্রেসের আসন সংখ্যা ৫০টির মধে শোভন চেয়ার ২৫টি (কাউন্টারে), ২০টি অনলাইনে, এসি কাউন্টারে তিনটি, অনলাইনে দুটি। নীলসাগরের শোভন চেয়ার ৭২টি, কাউন্টারে ২৫টি, অনলাইনে ২২টি, এসি কাউন্টারে আটটি অনলাইনে চারটি ও কাউন্টারে একটি বার্থ, একটি অনলাইনে। দ্রুতযানে আসন সংখ্যা ১০৭টির মধ্যে শোভন চেয়ার ৫০টি কাউন্টারে, ৫০টি অনলাইনে, এসি কাউন্টারে দুটি, অনলাইনে একটি, কাউন্টারে একটি বার্থ, একটি অনলাইনে।

রংপুর আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেনের আসন সংখ্যা ৪৫টির মধ্যে শোভন চেয়ার ২০টি কাউন্টারে, ২০টি অনলাইনে, এসি কাউন্টারে তিনটি, অনলাইনে দুটি। কড়িগ্রাম আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেনের আসন সংখ্যা ৭৮টির মধে শোভন চেয়ার ৩০টি কাউন্টারে, ৩০টি অনলাইনে, এসি কাউন্টারে আটটি, অনলাইনে সাতটি, কাউন্টারে দুটি বার্থ, একটি অনলাইনে। পঞ্চগড় আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেনের আসন সংখ্যা ১১৯টির মধ্যে শোভন চেয়ার ৫০টি কাউন্টারে, ৫০টি অনলাইনে, এসি কাউন্টারে আটটি, অনলাইনে সাতটি, কাউন্টারে চারটি বার্থ। ঢাকাগামী সাতটি আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেনের আসন সংখ্যা ৫১৩টি, অথচ প্রতিটি ট্রেনের যাত্রী সংখ্যা তিন শতাধিকের অধিক। চাহিদার তুলনায় আসন বরাদ্দ একেবারে নগন্য। যাত্রীরা দূর-দূরান্ত থেকে ঢাকা যাওয়ার আশায় কাউন্টারে এসে টিকেট না পাওয়ায় ফিরে যেতে হয়।

বুকিং মাস্টার জানান, ওনলাইন চালু হওয়ার পর থেকে অগ্রিম টিকিট দুইথেকে তিন দিনের মধ্যে বিক্রি হয়ে যায়। ফলে আসনের অতিরিক্ত প্রায় প্রতিটি ট্রেনের ৫০ থেকে ১০০টির অধিক টিকিট বিক্রয় হয়ে যায়। যার ফলে ওইদিন যত্রীরা টিকেট না পাওয়ার কারণে অনেকেই আসন বিহীন টিকেট ক্রয় করে বিভিন্ন গন্ত্যবে যাতায়াত করে।

যাত্রীরা জানান, আসনবিহীন টিকেট ক্রয় করে, ট্রেনের কামড়ার মাঝ পথে দাঁড়িয়ে থাকা হকারদের দৌরাত্ম্যের কারণে কষ্টকর হয়ে পরে। পুলিশ প্রসাশন থাকলেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়না। ঢাকাগামী ট্রেন চালু হওয়ার পর তুলনামূলক নিরাপদ যাত্রার কারণে অধিকাংশ লোকজন ট্রেনে যাতায়াত করে। এছাড়া বাসের তুলনায় ট্রেনের টিকিট মূল্য কম হওয়ায় ট্রেন যাত্রীদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

প্রধান স্টেশন মাস্টার আহসান হাবিব জানান, সান্তাহার একটি ঐতিহাসিক জংশন স্টেশন অথচ এখানে আসন সংখ্যা অপ্রতুল। যাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে সান্তাহার জংশন স্টশনে প্রতিটি ঢাকাগামী আন্তঃনগর ট্রেনের জন্য ৩০০ আসন অথবা সান্তাহারের জন্য একটি করে অতিরিক্ত কোচ বরাদ্দ করা হলে এ সমস্যার কিছুটা সমাধান করা সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close