বলরাম দাশ অনুপম, কক্সবাজার

  ০৭ ডিসেম্বর, ২০২২

বদলেছে কক্সবাজার কারাগারের চিত্র

বদলে গেছে কক্সবাজার জেলা কারাগারের চিত্র। শুধু কারাগারের বাইরের চিত্র নয়, ভেতরের সার্বিক চিত্রটিও বদলে গেছে বর্তমান সময়ে। কক্সবাজার জেলা কারাগারে কাঠামো ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের ছোঁয়ায় বদলে দিয়েছে কারা অভ্যন্তরের ভেতরে বাইরের সামগ্রিক চিত্র। কারা অভ্যন্তরের সামগ্রিক উন্নয়নের চিত্র ও স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে খুশি কারাবন্দিরা। এক কথায় বলতে গেলে গত চার পাঁচ মাসে আগের চেয়ে অনেক পরিবর্তন এসেছে কারাগারে।

নতুন জেল সুপার মো. শাহ আলম খানের তত্ত্বাবধানে পরিবর্তন এসেছে বলে জানা গেছে। বিশেষ করে বন্দি সাক্ষাৎ, বন্দিদের খাবারের মান, বন্দির স্বজনদের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলা, বন্দিদের জামিন, চিকিৎসা, বিনোদনসহ কারাগারের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। সম্প্রতি জামিনপ্রাপ্ত একাধিক বন্দি এবং তাদের স্বজন ও দর্শনার্থীদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

কক্সবাজার জেলা কারা প্রশাসনের কঠোরতায় মাদক কারবার নেই বললেই চলে। বন্ধ করা হয়েছে কারাভ্যন্তরে নগদ টাকার ব্যবহার। কারা ক্যান্টিনে নির্ধারিত মূল্য তালিকা ঝুলিয়ে পিসির মাধ্যমে ন্যায্যমূল্যে কারা ক্যান্টিন থেকে মালামাল ক্রয় নিশ্চিত করা হচ্ছে। কারা ক্যান্টিনে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে কারারক্ষী বাছাই ও নিয়োজিত করায় শতভাগ সচ্ছতা এসেছে। খাবারের মান ও পরিমাণ নিয়মিত তদারকি এবং পরীক্ষার পর বন্দিদের সরবরাহ করা হচ্ছে। বন্দিদের সিট বণ্টন, আবাসন ব্যবস্থায় হয়রানি বা অর্থের লেনদেনও বন্ধ। কারাগারের মান নিয়ে সন্তুষ্ট বলে জানিয়েছেন সদ্য জামিনে কারামুক্ত বেশ কয়েকজন বন্দি। তাদের মতে, কক্সবাজার জেলা কারাগারে বেড়েছে মান, বেড়েছে স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ ও কারাবন্দিদের জন্য সুদক্ষ ব্যবস্থাপনা।

আদালত থেকে জামিনের পর কারাগার থেকে মুক্তি পান টেকনাফের বাসিন্দা ওমর আলী, আবু সিদ্দিক, মো. গোলামুর রহমান ও আবুল কাসেম। তারা জানান, কারাগারে গত চার পাঁচ মাসে চোখে পড়ার মত পরিবর্তন এসেছে। নতুন জেল সুপার মো. শাহ আলম খানের তদারকির কারণে কারাগারে খাবারের মানও বেড়েছে বলে দাবি তাদের। তারা বলেন, জেল সুপার নিজে নিয়মিত খাবারের মান তদারকি করেন এবং প্রতিদিনের খাবারের স্বাদ নিজে পরীক্ষা করে বন্দিদের সরবরাহের ব্যবস্থা করেন। জেল সুপারের অনুপস্থিতে অধ্বস্তন কর্মকর্তারা খাবারের মান পরীক্ষা করে বন্দিদের বণ্টন করে দেন। অধিকাংশ সময় জেল সুপার নিজে উপস্থিত থেকে খাবার বণ্টন করান। বন্দিরা কারা কর্তৃপক্ষের আন্তরিক এ সেবাই মুগ্ধ।

ডেপুটি জেলার মো. মনির হোসেন জানান, বন্দিদের সিট বণ্টন, আবাসন ব্যবস্থায় নেই কোনো হয়রানি বা অর্থের লেনদেন। বন্দিদের বিনোদনের জন্য ভিতরে উন্মুক্ত স্থানে এলইডি বড় মনিটরের সংযোজন করা হয়েছে। যার মাধ্যমে বন্দিদের প্রতিদিন বিকেলে এক ঘণ্টা করে মোটিভেশনাল প্রোগ্রাম চালু রয়েছে এবং বন্দিদের বিনোদনের জন্য নাটক, গান ইত্যাদি পরিবেশন করা হয়। পাশাপাশি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বন্দিদের সকল কাজে নিশ্চিত করা হচ্ছে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসন।

কারাগারের সুপার মো. শাহ আলম খান বলেন, কারাগারে বিশৃঙ্খলা নিয়ে সমালোচনা ছিল। আমি যোগদানের পর প্রথমে নজর দিয়েছি শৃঙ্খলা ফেরানোর কাজে। বন্দিদের স্বজনের দেখা সাক্ষাতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত ও দর্শনার্থীদের সঙ্গে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভালো ব্যবহার নিশ্চিত করা হচ্ছে। বন্দিদের বিনোদনে উন্মুক্ত স্থানে এলইডি বড় মনিটর সংযোজন করে নাটক, গান ইত্যাদি পরিবেশন করা হয়। সেখানে প্রতিদিন বিকেলে এক ঘণ্টা করে মোটিভেশনাল প্রোগ্রাম চালু রয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close