জহুরুল ইসলাম খোকন, সৈয়দপুর (নীলফামারী)

  ১৩ জানুয়ারি, ২০২২

সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা

কাজে আসছে না ১৫৩ কোটি টাকার যন্ত্রাংশ

২ হাজার ৮৩৩ পদের বিপরীতে বর্তমানে কর্মরত মাত্র ৭০০

নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় দীর্ঘদিন থেকে জনবল সংকটে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক কার্যক্রম। এর ফলে কারখানায় উৎপাদন নেই বললেই চলে। জনবল নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে উৎপাদন বাড়াতে ১৫৩ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি আমদানি করা হয় রেলওয়ের এ বিশাল কারখানায়। স্থাপন করা হয় মূল্যবান যন্ত্রপাতি। কিন্তু জনবল নিয়োগে বাধাগ্রস্ত হয়ে মূল্যবান এসব যন্ত্রপাতি ব্যবহার না হওয়ায় সেগুলো নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। কারখানাটিতে ২ হাজার ৮৩৩টি পদের বিপরীতে বর্তমানে কর্মরত আছেন মাত্র ৭০০ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী।

দেশের বৃহত্তর কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক জয়দুল ইসলাম জানান, জনবল সংকট সত্ত্বেও শ্রমিক কর্মচারীর আন্তরিকতার কারণে প্রতিদিন দুই ইউনিট করে মেরামত করা হচ্ছে। জনবল নিয়োগ দেওয়া হলে এ কারখানা থেকে অনেক কিছুই করা সম্ভব। অতিসত্বর জনবল নিয়োগ দেওয়া না হলে কারখানার উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ার আশাঙ্কা করছেন তিনি।

রেলসূত্র জানায় ২০০৯ সালে কারখানা আধুনিকায়ন করতে একটি প্রকল্প হাতে নিয়ে ১৫৩ কোটি টাকার যন্ত্রাংশ ক্রয় করা হয়। মেরামত করা হয় ব্রডগেজ ও মিটারগেজ, যাত্রীবাহি বগি এবং ওয়াগন। ৪৩ ধরনের মেকানিক্যাল ও ১৩ ধরনের ইলেকট্রিক্যাল প্লান্টস এন্ড মেশিনারিজ প্রতিস্থাপন করা হয়। কিন্তু জনবল সংকট ও দক্ষ কর্মচারীর অভাবে আধুনিকায়নে কোন সুফলই মিলছেনা।

সূত্রটি আরও জানায় কারখানায় ২ হাজার ৮৩৩টি পদের বিপরীতে বর্তমানে কর্মরত আছেন মাত্র ৭০০ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী। বিদ্যুৎ বিভাগে ৪১৩ জনের বিপরীতে কর্মরত রয়েছেন ১৪৯ জন। এর ফলে ক্যারেজ মেরামতের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন মরাত্মক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। প্রতিদিন ৩ ইউনিট ক্যারেজ মেরামতের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও হচ্ছে মাত্র ১টি। কারখানায় ক্যারেজ, ওয়াগন ও লোকমোটিভেট ১ হাজার ২০০ ধরনের খুচরা যন্ত্রাংশ তৈরী হলেও তা বর্তমানে ক্রয় নির্ভর হয়ে পড়েছে।

অন্যদিকে কারখানার মালামাল ক্রমের দরপত্রে জটিলতার কারনে বগি ও ওয়াগন মেরামতের প্রয়োজনীয় মালামালের জোগান সময়মতো হয় না। অনেক সময় ওই জটিলতার কারণে নিম্নমানের মালামালও জোগান দেওয়া হচ্ছে।

রেলওয়ে শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শেখ রোবায়েত হোসেন জানান যতদিন পর্যন্ত জনবল বৃদ্ধি করা না হয় ততো দিন অবসরে যাওয়া দক্ষ শ্রমিকদের চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ দিয়ে উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব। অবসরে যাওয়া দক্ষদের দেখলে নতুনরা অনেক কিছু শিখতে পারবেন এবং উৎপাদন আগের অবস্থায় ফেরানো সম্ভব বলে জানান তিনি। তিনি আরো জানান ১৮৭০ সালে আসাম বেঙ্গল রেলওয়ের স্থাপিত কারখানাটিতে ওই সময় প্রায় ১০ হাজার জনবল ছিল। একারণে উৎপাদনও হয়েছিল লক্ষমাত্রার অধিক। শুধুমাত্র জনবল সংকটের কারণেই উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে এবং রেলওয়ের সার্বিক যাত্রী সেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close