আবু ইউসুফ, রানীনগর (নওগাঁ)

  ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০

রানীনগরে ৩০ বছর ধরে শেকলবন্দি নিপেন

রানীনগর উপজেলার কালীগ্রাম ইউনিয়নের ভান্ডারা গ্রামে নিপেন চন্দ্র পাল নামের এক মানসিক রোগীকে প্রায় ৩০ বছর ধরে ঘরবন্দি করে রেখেছে তার পরিবার। একসময় চিকিৎসা করতে পারলেও বর্তমানে অর্থাভাবে নিপেনকে ঘরের মধ্যে পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। বর্তমানে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে পরিবারটি। সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, নিপেনের বয়স ৪২ বছর। উপজেলার ভান্ডারা গ্রামের মৃত নরেশ চন্দ্র পালের দ্বিতীয় সন্তান। স্কুলে পড়ার সময় ১২ বছর বয়সের পর থেকে নিপেনের মধ্যে অস্বাভাবিক আচার-আচরণ লক্ষ্য করা যায়। একপর্যায়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে নিপেন। গরিব পরিবার হওয়ার পরও অনেকবার নিপেনের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু বর্তমানে আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় আর চিকিৎসাসেবা নিপেনের ভাগ্যে জুটছে না। নিপেনকে বাইরে ছেড়ে দিলেই মানুষকে মারধর, গালাগাল, ঘরবাড়ি ভেঙে দেওয়াসহ নানা ধরনের অত্যাচার করে। এ কারণে পায়ে শিকল পরিয়ে একটি মাটির অন্ধকার ঘরের মধ্যে নিপেনকে আটকে রাখে তার পরিবার। বিয়ে করালে হয়তো নিপেন ভালো হতে পারে এ ধারণা থেকে নিপেনকে বিয়ে দেয় তার পরিবার। বর্তমানে নিপেনের ঘরে সাত বছরের একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। বয়স্ক মা সম্প্রতি বয়স্ক ভাতা পাওয়া শুরু করলেও নিপেনের পরিবার সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা পায়নি।

নিপেনের স্ত্রী শিখা রানী পাল বলেন, আগে পাগলামি কম থাকলেও দিন দিন তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অর্থের অভাবে আমার স্বামীর চিকিৎসা করাতে পারছি না। সরকারিভাবে সহায়তা পেলে উন্নত চিকিৎসা করানো যেত। এতে হয়তো আমার স্বামী স্বাভাবিক হয়ে উঠতে পারে।

কালীগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বাবলু বলেন, আমি নিপেনের বিষয়টি শুনেছি। তাদের জন্য কিছু করার চেষ্টা করব। ইউএনও আল মামুন বলেন, খোঁজখবর নিয়ে নিপেনের চিকিৎসার ব্যবস্থা ও তার পরিবারকে সহায়তার প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close