শাহজাহান চৌধুরী শাহীন, কক্সবাজার

  ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২০

মহেশখালীতে পান চাষ

নতুন স্বপ্নে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা

করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাবে যে পান তাদের মহাভাবনায় ফেলেছিল, এখন প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা কমে আসায় সেই পান ঘিরেই নতুন স্বপ্ন বুনে জীবনযুদ্ধে নেমেছেন মহেশখালীর প্রায় ৩০ হাজার চাষি।

চাষিরা বলছেন, এখন আগের চেয়ে অনেক কম দামে পান বিক্রি করতে হচ্ছে। এ ছাড়া বরজ থেকে পান ভাঙতে যে শ্রমিক খরচ হয় পান বিক্রি করে সেই টাকা উত্তোলন কঠিন হয়ে পড়েছে। তারপরও আগামী বছর পানের দাম পাবেন এমন আশায় নতুন ভাবে চাষাবাদ শুরু করেছেন চাষিরা।

সূত্র মতে, এক বিড়া (৮০টি) বড় পান চলতি বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে বিক্রি হয়েছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়। কিন্তু করোনার সময় সেই পান বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। আর ১৫০ টাকার ছোট পান এখন বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকা দরে। ফলে লোকসানে পড়েছেন পানচাষিরা। এতে মূলধন তুলতেই হিমশিম খাচ্ছেন তারা। তবুও ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য নতুন ভাবে পান চাষ শুরু করেছে পান চাষিরা।

পান ব্যবসায়ী বড় মহেশখালীর মোক্তার আহমদ জানান, করোনাভাইরাসের কারণে পান সরবরাহ না থাকায় মানুষ পান খাওয়া অনেক কমিয়ে দিয়েছে। এ ছাড়া বিদেশে পান রফতানি বন্ধ রয়েছে। উৎপাদিত এলাকায় পানের সরবরাহ বেশি থাকায় সামগ্রিক কারণে বাজারে পানের দাম কম।

এ ছাড়াও উৎপাদন ভালো হলেও বড় যে পান করোনার আগে বিক্রি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা দরে। সেই পান করোনাকালীন যোগাযোগ বন্ধ থাকায় বিক্রি হয়েছে বিড়াপ্রতি ৪০ টাকা থেকে ৫০ টাকায়। চরম ক্ষতিতে পড়েন চাষিরা।

মহেশখালীর শাপলাপুর ইউনিয়নের পানচাষি সরওয়ার আলম জানান, ভোর থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত পান ভাঙতে খাওয়া দাওয়াসহ একজন শ্রমিককে খরচ দিতে হয় ৫০০ টাকা। এখন অবস্থা এমন, পান ভেঙে বিক্রি করে তাতে শ্রমিকের মজুরি হয় না।

দাম কমার বিষয়ে কালারমার ছড়া আবদুর রহিম নামে এক কৃষক জানান, করোনার কারণে দূর-দূরান্ত থেকে পাইকারি ক্রেতারা আসতে পারছেন না। ফলে পান বিক্রয় কমে গেছে।

হোয়ানকের নাছির উদ্দীন নামে আরেক কৃষক জানান, এক বিঘা জমিতে বছরে পান উৎপাদন, রক্ষণাবেক্ষণ ও শ্রমিকের খরচ পড়ে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। সেখানে সর্বনিম্ন ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত পান বিক্রি হয়। এ বছর খরচের টাকা তুলতে কষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

মহেশখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান আকন্দ জানায়, চলতি বছর মহেশখালীতে ১ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে পান উৎপাদন হয়েছে ৪০ হাজার টন। প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পানচাষে জড়িত। করোনার কারণে চাষিরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানান তিনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close