শ্রীনগর (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি
শ্রীনগরে পদ্মার চরে মাটি লুটেরাদের দৌরাত্ম্য
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে পদ্মা চরের মাটি লুটেরাদের দৌরাত্ম্য চরমে পৌঁছেছে। পদ্মার বুকে জেগে উঠা চরের খাঁস জমির মাটি প্রকাশ্যে কেটে স্থানীয় চেয়ারম্যানের মালিকানাধীন ইট ভাটাসহ অন্যত্র বিক্রি করছে মাটি লুটেরারা।
জানা যায়, স্থানীয় দিপু খান, সোহরাব, আরাফাত, মধ্য কামারগাঁওয়ের কামাল ফকির, ফিরোজ ব্যাপারীসহ একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট বছরের শুকনো মৌসুমে পদ্মার তীর ও চর থেকে মাটি কেটে বিক্রি করে থাকে। এসব লুট করা মাটি ভাগ্যকুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মনোয়ার হোসেন শাহাদাতের মালিকানাধীন কেবিসি নামক ইটভাটাসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করা হচ্ছে। মাটি খেকু কামাল ফকিরের নের্তত্বে শুকনো মৌসুমে প্রতিদিন ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত শ্রমিকরা চরের মাটি কেটে ট্্রলি ভর্তি করে বিক্রি করে বলে জানা গেছে।
সরেজমিন গিয়ে শ্রমিকদের কাছে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আশপাশের ইটভাটায় মাটি দেওয়ার নির্দিষ্ট লোক রয়েছে। প্রতি ট্রলি মাটি তারা ৫০০-৭০০ টাকায় বিক্রি করেন। এছাড়া কামারগাঁও, বাঘড়া বাজার সংলগ্ন পদ্মার তীরবর্তী বিস্তীর্ন চরের একাধিক স্থানে মাটি কাটা হচ্ছে। এসব মাটি একাধিক ট্রলিতে তোলা হচ্ছে।
মাটি কাটায় ব্যস্ত শ্রমিক আজাহারুল (৪৫) ও রাসেল (২৭) বলেন, কামালের নির্দেশে তারা মাটি কাটছেন। ট্রলি প্রতি তারা ২০০ টাকা করে পান। কামাল পান ১০০ করে। বাকি ২০০ টাকা গাড়ির মালিক পান। তারা বেশ কয়েক সপ্তাহ যাবত এভাবে মাটি কাটছেন বলে জানান।
এ সময় লক্ষ্য করা যায়, ২০০ ফুট দূরত্বে একটি ধানের জমি থেকে মাটি কাটা হচ্ছে। জানতে চাইলে কয়েকজন শ্রমিক বলেন, দক্ষিন কামারগাঁওয়ের রিফাত ও কালাম খানের নির্দেশে তারা মাটি কাটার জন্য মজুরি পান। প্রতিদিন শতাধিক ট্রলিভর্তি মাটি ভাগ্যকুল এলাকাসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানান তারা। মাটি লুটেরা সিন্ডিকেটের প্রধান কামাল ফকিরের সাথে কথা বলতে তার মোবাইলে একাধিকবার ফোন করলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
কেবিসি ইটভাটার কর্ণধার ও স্থানীয় ভাগ্যকুল ইউপি চেয়ারম্যান কাজী মনোয়ার হোসেন শাহাদাতের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, পদ্মা নদীর চরের মাটি আমার ইটভাটায় কিনে নিচ্ছি একথাটি সত্য নয়। বরং যারা কেটে নিচ্ছে তাদের ব্যাপারে আমি থানা পুলিশকে অবগত করেছি।
ইউএনও রহিমা আক্তার বলেন, এই বিষয়ে অবগত নই। এখন জানতে পারলাম। চেয়ারম্যানকে বলেছি মাটি কাটা বন্ধ করতে, না করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
"