দ্রুত সময়ের মধ্যে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনী কর্তৃক গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাবে বাংলাদেশ। এরই মধ্যে চারটি আন্তর্জাতিক সংস্থা সংঘটিত গণহত্যার স্বীকৃতি দিয়েছে বলে জানিয়েছেন নেদারল্যান্ডের সাবেক সংসদ সদস্য ও মানবাধিকার কর্মী হ্যারি ভ্যান বোমেল। শুক্রবার (২৬ মে) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব আয়োজিত ইউরোপিয়ান প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাংবাদিকদের মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।

হ্যারি ভ্যান বোমেল বলেন, ‘বাংলাদেশের নাগরিকদের সঙ্গে এক হয়ে আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে গণহত্যার বিষয়ে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনে সফল হব বলে আমাদের বিশ্বাস। বাংলাদেশে এসে আমরা ঢাকা ও চট্টগ্রামে বিভিন্ন শ্রেণির প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। ঢাকায় ডাচ রাষ্ট্রদূতের সঙ্গেও এ ব্যাপারে আমাদের সাক্ষাৎ হয়েছে। আর্মেনিয়ায় গণহত্যার স্বীকৃতি পেতে ১০০ বছর লেগেছে। আশা করি, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে অত সময় লাগবে না। আমরা ফিরে গিয়ে আমাদের দেশের রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলব। বাংলাদেশে এসে যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, তা শেয়ার করব তাদের সঙ্গে। যাতে করে ডাচ পার্লামেন্ট এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়। আমরা ডাচ মিডিয়া, ইউকে মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলব। প্রয়োজন হলে আমরা বাংলাদেশে আবার আসব।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করলে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ত্বরাণ্বিত হবে।’

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি সালাহ্উদ্দিন মো. রেজার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক। সূচনা বক্তব্য দেন যুগ্ম-সম্পাদক শহীদুল্লাহ শাহরিয়ার। এতে আরো বক্তব্য দেন জেনোসাইড স্টাডিজের অধ্যাপক ড. অ্যান্থনি হল্সল্যাগ, ফ্রেন্ড অব বাংলাদেশ অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত যুক্তরাজ্যের সিনিয়র সাংবাদিক এবং জেনোসাইড গবেষক ক্রিস ব্ল্যাকবার্ণ, ইবিএফ নেদারল্যান্ড শাখার সভাপতি ও প্রবাসী সংগঠন বাংলাদেশ সাপোর্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান বিকাশ চৌধুরী বড়ুয়া, ইবিএফ যুক্তরাজ্য শাখার সভাপতি আনসার আহমেদ উল্লাহ, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি চৌধুরী ফরিদ, আমরা ৭১-এর প্রধান সমন্বয়ক হেলাল ফয়েজী, প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার দত্ত প্রমুখ।

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি সালাহ্উদ্দিন মো. রেজা বলেন, ‘বাংলাদেশে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি একটি গ্লোবাল ইস্যু। এ ব্যাপারে ইবিএফের ভূমিকা প্রশংসনীয়। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সাংবাদিকদের কাছ থেকেও এ ব্যাপারে সহযোগিতা প্রয়োজন।’

ক্রিস ব্ল্যাকবার্ন বলেন, ‘একাত্তরের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে সাংবাদিকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তাদের লেখনীর মাধ্যমে বিশ্বের কোথায় কী অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে, তা মানুষ জানতে পারেন।’

অনুষ্ঠানে প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন এম নাসিরুল হক, মো. শহীদুল ইসলাম, নাজিমুদ্দীন শ্যামল, নূর উদ্দিন আলমগীর, হামিদুল ইসলাম, শামসুদ্দিন ইলিয়াস এবং মিজানুর রহমান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি কলিম সরওয়ার, সাংস্কৃতিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন হায়দার, ক্রীড়া সম্পাদক এম সরওয়ারুল আলম সোহেল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক খোরশেদুল আলম শামীম, কার্যকরী সদস্য মো. আইয়ুব আলী এবং মঞ্জুরুল আলম মঞ্জু প্রমুখ।

"