ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ০৬ মার্চ, ২০২৪

হার সবসময়ই বেদনার

তবু ভেঙে পড়ব না : জাকের

এর আগে অনেকবারই বলেছেন খুব বেশি আবেগ কাজ করে না জাকের আলীর। এমনকি জাতীয় দল নিয়েও খুব বেশি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেননি। কিন্তু আসলেই কী জাতীয় দলের হয়ে ‘প্রথমবার’ খেলতে গেলে আবেগ লুকিয়ে রাখা যায়? তার ওপর আবার এমন ইনিংসের পর। সেই উত্তরটা তার চেহারা দেখেই বুঝে নিতে বলেছেন জাকের। অভিষেকটা আগে হলেও মূল জাতীয় দলে খেলার সুযোগটা আগের দিনই প্রথম পেয়েছিলেন জাকের। এর আগে যেবার অভিষেক হয় সেবার এশিয়া কাপের মঞ্চে দ্বিতীয় সারির দল পাঠিয়েছিল বাংলাদেশ। আর মূল দলে প্রথম সুযোগেই ৩৪ বলে ৬৮ রানের বিস্ফোরক একটি ইনিংস খেলে বিশাল লক্ষ্য তাড়া করে দলকে প্রায় জিতিয়ে দিয়েছিলেন জাকের। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। যে কারণে ম্যাচ শেষে ম্লানই ছিল এ তরুণের মুখ।

তার ওপর কদিন আগে বিপিএলের ফাইনালে হেরেছে জাকেরের দল। সবমিলিয়ে জাকেরের অভিব্যক্তি, ‘আমার চেহারা দেখে কিন্তু বুঝতে পারছেন আমি কী রকম আছি। হার সবসময়ই বেদনার। বিপিএলের ফাইনাল হেরে এসেছি। রাতে ঘুম হয়নি। দেশের হয়ে জিততে পারলে আরেকটু ভালো লাগত। আমি ভেঙে পড়ব না। কীভাবে জেতা যায় পরের ম্যাচ। এই ম্যাচে আমাদের পাওয়ার অনেক কিছু আছে।’ খাতা কলম নিয়ে নোট করতে বসলে দল হিসেবে অনেক প্রাপ্তি আছে। তবে এমন ইনিংসের পর জয় না পাওয়ার আক্ষেপ লুকাতে পারেননি জাকের। বলেন, ‘যদি ম্যাচটা জিততে পারতাম, ১০-১২ রান করেও যদি ম্যাচ জিততে পারতাম আমার কাছে বেশি খুশি লাগত। ভালো খেলেছি আলহামদুলিল্লাহ। ম্যাচ জিতলে আরো খুশি হতাম।’

এদিন অবশ্য খেলারই কথা ছিল না জাকেরের। আলিস আল ইসলামের ইনজুরিতে জায়গা মিলে যায় তার। এবার সুযোগ আসতে পেরে তা অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর কাছ থেকে আগেই ইঙ্গিত পেয়েছিলেন তিনি। আর সে অনুযায়ী নিজেকে আগেই প্রস্তুত রেখেছিলেন এ উইকেটরক্ষক-ব্যাটার।

‘আমি সবাইকেই বলতাম, আল্লাহতায়ালা যখন আমার জাতীয় দলে খেলার সময় লিখে রেখেছেন, আমি তখন এমনিতেই খেলতে পারব। আমার সুযোগ এসেছে। মানসিকভাবেও প্রস্তুত ছিলাম। আলিসের যখন ইনজুরি হলো, প্রস্তুত ছিলাম। শান্ত আমার সঙ্গে কথা বলেছিল যে তোর কিন্তু যাওয়ার সম্ভাবনা আছে, মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকিস। আমার সঙ্গে আগেই কথা হয়েছিল। তো আমি প্রস্তুত ছিলাম’, বলেন জাকের।

এই ম্যাচ দেখতে তার বড় বোন স্থানীয় সাংবাদিক শাকিলা ববি তার স্বামী ও সন্তান নিয়ে উপস্থিত ছিলেন। পেশাদার সাংবাদিক শাকিলা পরে সংবাদ সম্মেলনেও অংশ নেন।

সিলেটের স্থানীয় সাংবাদিক শাকিলা ববি। তিনি ক্রিকেটার জাকের আলি অনিকের বোন অন্যান্য সাংবাদিকের কয়েকটি প্রশ্নের পর ভাইকে প্রশ্ন করার সুযোগ পান শাকিলা। সম্পর্কের জায়গা সরিয়ে পেশাদার আদলে তিনি জিজ্ঞেস করেন, আপনি সিলেটের ছেলে। ঘরের মাঠে পারফর্ম করলেন, মানুষ আপনার পক্ষে ছিল। কতটা উপভোগ করেছেন? জাকেরও একদম পেশাদারত্বের ছাপ রাখেন উত্তরে, ‘আমি সবসময় সিলেটের মাঠে খেলতে পছন্দ করি। আমার প্রথম শ্রেণির অভিষেকও এখানে। আমি আগেও বলেছি এই মাঠের আবহ সম্পর্কে আমার ধারণা আছে। উইকেট আলহামদুলিল্লাহ খুবই ভালো ছিল। গুড টু ব্যাট অন।’

২০৭ রান তাড়ায় ১০ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ৪ উইকেটে ৭৮। ওখান থেকে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানো শুরু জাকেরের। রিয়াদ ৫৪ করে ফেরার পর শেখ মেহেদীকে নিয়ে ৬৫ রানের আরেক জুটিতে ম্যাচ নিয়ে এসেছিলেন তিনি। বাংলাদেশের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ৬ ছক্কার রেকর্ডের দিন শেষ ওভারের উত্তেজনায় আনেন ম্যাচ। তবে শেষ ৬ বলে ১২ রানের সমীকরণ না মেলার হতাশা বেশি কাজ করছে তাকে, বাংলাদেশ যে হেরেছে ৩ রানে, রিশাদকে বলেছিলাম চেষ্টা করতে আমাকে স্ট্রাইক দেওয়ার। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ওর উইকেট পড়ে যায়। তারপর আমিও স্ট্রাইক পাই। ৪ বলে ১০ লাগত, আমার আত্মবিশ্বাস ছিল ইনশাআল্লাহ পারব যেহেতু থ্রো আউট দ্য ইনিংস ভালো যাচ্ছিল। সংযোগ হয়নি।

যদি ম্যাচটা জিততে পারতাম, ১০-১২ রান করেও যদি ম্যাচ জিততে পারতাম আমার কাছে বেশি খুশি লাগত। ভালো খেলেছি আলহামদুলিল্লাহ। ম্যাচ জিতলে আরো খুশি হতাম।

সদ্য সমাপ্ত বিপিএল দিয়ে আলোয় আসেন জাকের। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে জায়গা পান জাতীয় দলে। বিপিএলের পর পর শ্রীলঙ্কা সিরিজ হওয়ায় মোমেন্টাম কাজে দিয়েছে বলে মত জাকেরের, এই জিনিসটা কাজে দিয়েছে। বিপিএলের (শেষের) দুই দিনের মধ্যে এখানে খেলা, আমার মনে হয় ওই জিনিসটা কাজে দিয়েছে। ওই আবহ থেকে টি-টোয়েন্টি খেলতে আসা কাজে দিয়েছে। যেহেতু এটা আমার হোমগ্রাউন্ড, এখানকার মাঠ, উইকেট সম্পর্কে ধারণা ছিল।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close