ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ২০ মার্চ, ২০২৩

এখন পেসারেতে স্বপ্ন বুনে বাংলাদেশ

আজকের ম্যাচ : আয়ারল্যান্ড বনাম বাংলাদেশ, দুপুর ২টা

বছর দশেক আগে গেলেই দেখা যাবে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। ঘরোয়া ক্রিকেটে একজন পেসারকে দল খুঁজে পেতে হন্য হয়ে ঘুরতে হত। দল না পেয়ে নাম মাত্রমূল্যে খেলেছেন বছরের পর বছর। যে কারণে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন অনেকে। কুঁড়িতে শেষ হয়েছে অনেক সম্ভাবনাময় পেসারদের ক্যারিয়ার। বাংলাদেশ দলের স্পিন বোলিং কোচ রঙ্গনা হেরাথের চোখে আমরা এই মুহূর্তে আমাদের ক্রিকেটের একটি ব্র্যান্ড দেখাচ্ছি। আশা করি আজকের ম্যাচও আমরা একই কাজ করব। আজ আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। এই ম্যাচের জন্য ব্যাটার ও বোলারদের তৈরি থাকার পরামর্শ দিয়েছেন হেরাথ। তিনি বলেন, ‘আমরা জানি না কি ধরনের উইকেট পাব। যেকোনো উইকেটের জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। এটা বোলার ও ব্যাটার সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।’

আইসিসির ইভেন্টে বরাবরই ব্যাটিং সহায়ক উইকেট দেখা যায়। আসন্ন ভারত বিশ্বকাপেও এমনটাই হওয়ার কথা। আর এই আসরের জন্য প্রস্তুত হতে এখন থেকেই ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে খেলার অনুশীলন করা জরুরি। এমন পরিকল্পনা থেকেই হয়তোবা আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যাটিং সহায়ক উইকেট রাখার চেষ্টা করছে বিসিবি। দলের স্পিন কোচ রঙ্গনা হেরাথের কথায় এমনটারই ইঙ্গিত মিলেছে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজে স্পিন বান্ধব উইকেটে খেলা হলেও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে নিখাদ ব্যাটিং উইকেটে খেলা হয়েছে। প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশ ৩৩৮ রান সংগ্রহ করেছিল। ম্যাচ শেষে দুই দলের ক্রিকেটারও বলেছেন এটা ব্যাটিং স্বর্গ ছিল। তবে পরের দুই ওয়ানডেতে কেমন উইকেটে খেলা হবে তা স্পষ্ট করেননি হেরাথ।

তার মতে, দল হিসেবে সাফল্য পেতে হলে ব্যাটার-বোলার সবাইকেই প্রস্তুত করতে হবে। তাই বোলারদের কথাও বিবেচনায় রেখেই উইকেট বানানো উচিত। এ প্রসঙ্গে টাইগার স্পিন কোচ বলেন, আমরা জানি না কি ধরনের উইকেট পাব, বিশেষ করে সামনে যেহেতু বিশ্বকাপ আসছে...। আমাদের যেকোনো উইকেটে খেলার জন্য তৈরি থাকতে হবে। এখানে উইকেট থেকে স্পিনাররা খুব বেশি সাহায্য পায়নি। কিন্তু আমরা এই উইকেটেও ভালো বোলিং করেছি। একটা সময় ছিল স্পিনারদের উপরই নির্ভর করতো বাংলাদেশ। সেই সময়টা বদলেছে অনেক। এখন সমান তালে লড়াই করছেন পেসাররাও। সাম্প্রতিক সময়ে আরো বেশি উজ্জ্বল। হরহামেশাই বদলে দিচ্ছেন বহু ম্যাচের চিত্র। আর পেসারদের এমন পারফরম্যান্স দেখে অনুপ্রাণিত পুরো বাংলাদেশ দলই। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে আগের দিন দারুণ এক জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। প্রতিটি বিভাগেই টাইগাররা ছিলেন দুর্দান্ত। অসাধারণ ব্যাটিংয়ে এসেছে রেকর্ড স্কোর।। এরপর বোলারদের জমাট পারফরম্যান্স। বিশেষ করে পেসারদের। ইবাদত-তাসকিনদের তোপে লড়াইটাও করতে পারেনি আইরিশরা। এর আগে ইংল্যান্ডকে টি-টোয়েন্টিতে হোয়াইটওয়াশ করার পেছনেও কার্যকরী ভূমিকা রেখেছিলেন পেসাররা। উজ্জীবিত সেই পেসারদের উত্থানে এখন প্রেরণা খুঁজছেন ফিল্ডার-ব্যাটাররাও।

পেসারদের প্রশংসা করে বাংলাদেশ দলের স্পিন বোলিং কোচ রঙ্গনা হেরাথ বললেন, ‘আমরা সবাই পেসারদের দ্বারা অনুপ্রাণিত। আমাদের কাছে এখন ভালো ফাস্ট বোলিং আক্রমণ আছে। সামগ্রিকভাবে, আমরা একটি ভালো ব্যাটিং এবং পেস ও স্পিন বোলার রয়েছে। এটা বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য ভালো।’ তথাকথিত স্পিন বান্ধব উইকেট ছেড়ে সিলেটে এবার স্পোর্টিং উইকেট তৈরি করেছে বাংলাদেশ। আর সেখানে সব বিভাগেই জ্বলে উঠেছে টাইগাররা। আসন্ন বিশ্বকাপকে সামনে রেখেই নিজদের চেনা শক্তির জায়গা থেকে বেরিয়ে এমন উইকেট তৈরি করেছে বাংলাদেশ। হেরাথের ভাষায়, ‘আমরা জানি না আমরা কী ধরনের উইকেট পাব, বিশেষ করে বিশ্বকাপে। যে কোনো ধরনের পিচের জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। স্পিনারদের জন্য খুব বেশি সহায়তা ছিল না। কিন্তু এই পিচেও আমরা (স্পিনেও) ভালো বল করতে পেরেছি’ আইরিশদের বিপক্ষে দাপুটে জয় নিয়ে বলেন, ‘আমি মনে করি এটা দলের সব সদস্যদের চমৎকার একটি দলীয় প্রচেষ্টা। বিশেষ করে তৌহিদ ও সাকিব, তারপর মুশফিক এবং ইয়াসিরও। তাদের আক্রমণাত্মক পদ্ধতি ছিল চমৎকার।

এ দিকে সিলেটের আকাশে সকাল থেকে মেঘের ঘনঘটা। গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি পড়ছে সকাল থেকেই। মাঝে কয়েক দফা হয়ে গেল মুষলধারেই। এমন দিনে মনে পড়ে কবিগুরুর সেই কবিতার একটি লাইন, ‘ওগো, আজ তোরা যাস নে ঘরের বাহিরে।’ এমন দিনেই তো বিশ্রাম নেওয়ার মোক্ষম সময়। ছিলেনও সবাই। কেবল একজন ব্যতিক্রম। তিনি টাইগার অধিনায়ক তামিম ইকবাল খান।

মূলত আগের দিনের ব্যর্থতাই যেন তাড়া দিয়েছে তামিমকে। অফ স্টাম্পের বেশ বাইরে থাকা বলে ড্রাইভ করতে যেভাবে খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দিয়েছেন স্টার্লিংয়ের হাতে, তাতে দুশ্চিন্তায় পড়বেনই না কেন? তাই এদিন সকালে প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে আর স্পিন বোলিং কোচ রঙ্গনা হেরাথকে সঙ্গে নিয়ে চলে এসেছেন মাঠে। সঙ্গে ছিলেন দলের লজিস্টিক ম্যানেজার ও তার বড় ভাই নাফিস ইকবালও। টিম বাস থেকে নেমেই ইনডোরে ঢুকে পড়েন তামিম। থ্রো ডাউন ও বোলিং মেশিনে ব্যাটিং করেন প্রায় ঘণ্টাখানেক। মাঝে তাকে অনেকটা সময় নানা পরামর্শ দিলেন কোচ হাথুরুসিংহে। কথা বললেন হেরাথের সঙ্গেও। হয়তো কোথাও ভুলটা হচ্ছে জেনে নেওয়ার চেষ্টা। তবে অনুশীলনে বেশ সাবলীল ব্যাটিং করেছেন তামিম।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close