ডা. সজল আশফাক
সাইনোসাইটিস
সাইনোসাইটিসের মূল উপসর্গ মাথাব্যথা। এ ব্যথা চোখের নিচে এবং কপালে থাকে। এ ছাড়া মুখম-ল ও মাথার বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যথা হতে পারে। কোনো সাইনাসে ইনফেকশন হয়েছে সে অনুযায়ী এ ব্যথার অঞ্চল পরিবর্তিত হয়। তবে ব্যথা নাকের গোড়ায়, ওপরের চোয়ালের ওপরে, চোখের নিচে, কপালে ও মাথার পেছন দিকে যেকোনো স্থানে হতে পারে। ফুলে যেতে পারে চোখের নিচের কিংবা ওপরের অংশের পাতা। চিবুক কিছুটা লাল হয়ে ফুলে যেতে পারে। নাকের ভেতরের পুঁজ একটি নির্দিষ্ট স্থান থেকে বেরিয়ে আসতে দেখা যাবে। নাকের ভেতরের মাংসগুলো ফোলা থাকতে পারে। নাকের হাড় বাঁকা থাকতে পারে। নাকের পেছনে নাসাগলবিল অঞ্চলে অর্থাৎ আলজিভের পেছন থেকে আঠালো ঘন পুঁজ বেয়ে নেমে যাচ্ছে-এমনটি দেখা যাবে। শারীরিক উপসর্গের মধ্যে রয়েছে-গা ম্যাজম্যাজে ভাব, জ্বর, শরীর ব্যথা ইত্যাদি।
চিকিৎসা : শুধু এক্সে করেই সাইনোসাইটিস সম্পর্কে জানা যায়। সাইনোসাইটিস চিকিৎসার উদ্দেশ্য হচ্ছে নাকের মধ্যে সাইনাসের বহির্গমনের রুদ্ধ পথগুলো খুলে দেওয়ার মাধ্যমে সাইনাসের বহির্গমন পথকে সুগম রাখা। সেই সঙ্গে সাইনাসের ইনফেকশন নিয়ন্ত্রণ করা। ইনফেকশনজনিত ব্যথা থাকলে তা কমিয়ে আনা। এসব কিছু করার জন্য যথাযথ অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন পড়ে। নাকে বিশেষ ধরনের ড্রপ দিতে হয়, অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ খেতে হয়। ব্যথার জন্য দেওয়া যেতে পারে ব্যথানাশক।
হঠাৎ তীব্র কিংবা ক্রনিক বা বারবার হওয়া সাইনোসাইটিস যাই হোক না কেন প্রথমে ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করতে হয়। ওষুধে না সারলে অপারেশনের মাধ্যমে চিকিৎসা করতে হয়। একসময় এ সমস্যার জন্য সাইনাস ওয়াশ করা হতো। এখন যথাযথ অ্যান্টিবায়োটিকের জন্য সাইনাস ওয়াশের প্রয়োজনীয়তা কমে এসেছে। এ ছাড়া প্রচলিত সাইনাসের অপারেশনের পরিবর্তে অ্যান্ডোস্কোপিক সার্জারি খুব গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে। সবদিক বিবেচনায় কার্যকর ও রোগীর কম ভোগান্তির জন্য ফাংশনাল অ্যান্ডোস্কোপিক সাইনাস সার্জারি খুবই জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এখন সাইনোসাইটিস নিয়ে অযথা ভুগতে হয় না। তবে সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা না নিলে হতে পারে বিভিন্ন জটিলতা। সুতরাং জটিলতা এড়াতে সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, নাক কান গলা
হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল
"