নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

ঢাকা ঘিরে ছয় বছরে হবে ছয় মেট্রোরেল

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি ২০৩০ সাল নাগাদ ১২৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে ছয়টি মেট্রোলাইন নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে। এই নেটওয়ার্কে ৫১টি এলিভেটেড স্টেশন ও ৫৩টি আন্ডারগ্রাউন্ড স্টেশন থাকবে। ছয়টি লাইন মিলিতভাবে দিনে ৪৭ লাখ যাত্রী পরিবহন করতে পারবে। এরই মধ্যে এমআরটি লাইন-৬-এর দিয়াবাড়ী থেকে মতিঝিল পর্যন্ত অংশ খুলে দেওয়া হয়েছে। এই লাইনে দিন দিন মেট্রোরেলের পরিধি যেমন বাড়ছে, তেমনি সমান তালে বাড়ছে যাত্রীদের প্রত্যাশাও। তাই রাত ৮টা পর্যন্ত ট্রেন চললেও যাত্রীদের এখন দাবি, মধ্যরাতেও চলাচলের। এ ছাড়া চলাচলে সময়ের ব্যবধানও কমানোর বিষয়ে চিন্তাভাবনা চলছে। বাকি রুটগুলোতেও দ্রুত কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। ২০৩০ সাল নাগাদ আগামী ছয় বছরে ছয়টি মেট্রোরেলে ঢাকা ঘিরে চালু থাকবে। বদলে যাবে রাজধানীর পরিবর্তনব্যবস্থা। রুটগুলোর বিস্তারিত তুলে ধরা হলো-

এমআরটি লাইন-১ : দৈর্ঘ্য : ২৬.৬ কিমি রুট : হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর-খিলক্ষেত-কুড়িল-যমুনা ফিউচার পার্ক-বাড্ডা-রামপুরা-মালিবাগ-রাজারবাগ-কমলাপুর এবং কুড়িল থেকে কাঞ্চন সেতুর পশ্চিম পাশ পর্যন্ত। নগর এলাকায় বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত মেট্রোরেল আন্ডারগ্রাউন্ড দিয়ে যাবে।

এমআরটি লাইন-২ : ঢাকা মহানগরী ও আশপাশের এলাকার যানজট নিরসনে গাবতলী থেকে চট্টগ্রাম রোড পর্যন্ত আন্ডারগ্রাউন্ড ও এলিভেটেড সমন্বয়ে প্রায় ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ মেট্রোরেল (ম্যাস রাপিড ট্রানজিট-এমআরটি লাইন-২) নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। জাপান সরকারের সহযোগিতায় জি-টু-জি ভিত্তিতে ‘পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ’ (পিপিপি)-এর আওতায় এটি নির্মাণ করা হবে।

এমআরটি লাইন-৩ : প্রকল্পটি গাজীপুর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত নির্মাণ হবে। এটিকে বলা হচ্ছে মেট্রোরেল বিআরটি। এর নির্মাণ এখন চলছে। মেট্রোরেল নিয়ে সরকারের এই পরিকল্পনার সঙ্গে খানিকটা দ্বিমত জানান বুয়েটের অধ্যাপক ও গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ শামসুল ইসলাম।

এমআরটি লাইন-৪ : ২০৩০ সালের মধ্যে কমলাপুর-নারায়ণগঞ্জ রেললাইনের পাশ দিয়ে প্রায় ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ পাতাল মেট্রোরেল নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

এমআরটি লাইন-৫ : দৈর্ঘ্য : ১৯.৬ কিমি রুট : হেমায়েতপুর- গাবতলী-টেকনিক্যাল-মিরপুর-১-মিরপুর-১০-মিরপুর-১৪-কচুক্ষেত-বনানী-গুলশান-২-নতুন বাজার-ভাটারা।

এমআরটি লাইন-সিক্সের জিএম মোহাম্মদ ইফতিখার হোসেন বলেন, মেট্রো নিয়ে আমরা অভ্যস্ত হচ্ছি, যাত্রী সাধারণকেও অভ্যাস করানোর চেষ্টা করছি। দুটি বিষয় কম্বাইন্ড করে যখন নিরাপদ মনে হবে, তখন ট্রেনের পরিধি ধীরে ধীরে বাড়াচ্ছি। আমাদের টার্গেট আছে, পিকআওয়ারে ১০-১১টি ট্রেন চালাব। অফপিক আওয়ারে ৯-১০টি ট্রেন চালাব। এক স্টেশন থেকে আরেক স্টেশনে ট্রেন চলাচলের ব্যবধান চার থেকে পাঁচ মিনিটে নিয়ে আসব। প্রকল্পের প্রস্তাবনায় যেসব লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল, তাতে যেমন প্রতি ৫ মিনিট পরপর ট্রেন ছাড়া, আটটি কোচের সমন্বয়ে একেকটি ট্রেনসেট করা এবং রাত ১১টা পর্যন্ত যাত্রী পরিবহন, তার সবই করা হবে।

উত্তরা থেকে মতিঝিল ও কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত ২১.২৬ কিলোমিটারের পুরো রুটটি ৪০ মিনিটেরও কম সময়ে ভ্রমণ করে মেট্রোরেল প্রতি ঘণ্টায় ৬০,০০০ যাত্রী বহন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালের ২৪ জুন এমআরটি লাইন-৬ নামে পরিচিত মেট্রোরেল প্রকল্পের নির্মাণ উদ্বোধন করেন। প্রকল্পটির ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। শুরুতে এই প্রকল্পের ব্যয় ছিল প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা। মূলত মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ১.৬ কিলোমিটার বাড়তি অংশ নির্মাণ, প্রতিটি স্টেশনের জন্য নতুন করে জমি অধিগ্রহণসহ বিভিন্ন নতুন অনুষঙ্গ যুক্ত হওয়ায় খরচ বেড়েছে। ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা। মেট্রোরেল প্রকল্প নেওয়া হয় ২০১২ সালে। জাপানের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাইকার সঙ্গে ঋণচুক্তি হয় পরের বছর। মূল কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close