নিজস্ব প্রতিবেদক

  ৩০ জানুয়ারি, ২০২৪

মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী

চালসহ চার পণ্যে শুল্ক কমানোর নির্দেশ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চার নিত্যপণ্যের ওপর শুল্ক কমানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এসব পণ্য হলো- চাল, ভোজ্যতেল, চিনি ও খেজুর। সেই সঙ্গে বাজারে নিত্যপণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশ দেন। এদিন মন্ত্রিসভা অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিতে সুফল পাওয়ায় ‘আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) (সংশোধন) আইন ২০২৪’-এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। এ ছাড়া জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি আইন ২০২৪-এর নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশসহ মন্ত্রিসভার বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, মন্ত্রিসভার চারটি এজেন্ডা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। রুলস অব বিজনেস অনুসারে, বছরে চারবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে আগের তিন মাসের মন্ত্রিসভা বৈঠকের বাস্তবায়ন ও অগ্রগতি জানাতে হয়। প্রথম এজেন্ডা ছিল মন্ত্রিসভা বৈঠকের সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নের অগ্রগতি তুলে ধরা। আমরা সেটা জানিয়েছি।

মন্ত্রিপরিষদ জানায়, পবিত্র রমজানকে সামনে রেখে এই চার পণ্যের ওপর শুল্ক কমানোর জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। তবে এসব পণ্যে শুল্ক কী পরিমাণ কমানো হবে, তা এনবিআর এখন ঠিক করবে।

সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছেন। মন্ত্রিসভার বৈঠকে মন্ত্রীদের কাছ থেকে এ বিষয়ে সবশেষ অবস্থা জেনেছেন তিনি। মন্ত্রীরা কী কাজ করেছেন, তাও তারা বলেছেন। মন্ত্রীদের কাছ থেকে তথ্য শুনে তাতে সন্তোষ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যে যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা যাতে অব্যাহত থাকে।

মাহবুব হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী যে নির্দেশনা দিয়েছেন, মন্ত্রীরা তা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন। সে অনুসারে তারা পদক্ষেপ নিয়েছেন।

নিত্যপণ্য আমদানিতে ঋণপত্র (এলসি) খোলায় কোনো সমস্যা নেই উল্লেখ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, গত বছরের এই সময়ে ৩৭ হাজার ১০৭ টন খেজুর আমদানি হয়েছিল, যেখানে এ বছর একই সময়ে ৪৪ হাজার ৭৩৪ টনের ঋণপত্র খোলা হয়েছে। কাজেই নিত্যপণ্য আমদানি করতে ডলারের সংকট আছে, পরিসংখ্যান কিন্তু এমনটা বলছে না। শুল্ক কতটুকু কমানো হবে, সেটি এখন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সিদ্ধান্ত নেবে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

‘আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) (সংশোধন) আইন ২০২৪’ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, প্রথম যখন আইনটি প্রণয়ন করা হয়, তখন একটির মেয়াদ ছিল দুই বছর। পরে কয়েক ধাপে সেটার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল। সেই মেয়াদ ২০২৪ সালের ৯ এপ্রিল শেষ হওয়ার জন্য নির্ধারিত ছিল। মন্ত্রিসভার বৈঠকে ধাপে ধাপে মেয়াদ বাড়ানোর পরিবর্তে স্থায়ী আইন হিসেবে নীতিগত সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে। এটিকে আর নতুন করে মেয়াদ বাড়াতে হবে না।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ এ আইনটি মন্ত্রিসভায় তুলেছিল। আইনটিতে কোনো পরিবর্তন আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আইনটি পুরোনো। আগে যা ছিল, তা-ই থাকবে। কেবল মেয়াদ দুই বা তিন বছর না বাড়িয়ে স্থায়ী করা হয়েছে।

জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে বলা হয়, এ আইনের অনেক সুফল আছে। অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিতে এ আইন কাজে লেগেছে।

আগে ছিল দুই বছর পর পর মেয়াদ বাড়ানো হবে, তাহলে কেন স্থায়ী করা হচ্ছে, এমন প্রশ্নে মাহবুব হোসেন বলেন, জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, এ আইনটির অনেক সুফল আছে, এ আইনের কারণে এই ক্ষেত্রে তাদের তরফ থেকে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য খুব কাজে লেগেছে, এজন্য তারা আইনটি কন্টিনিউ করতে চাচ্ছেন।

রাজনৈতিকভাবে বিরোধীদের ওপর এ আইনের বেশি প্রয়োগ হচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মন্ত্রিসভা বৈঠকে ওই লাইনে আলোচনা হয়নি, আজ পুরোপুরি আইনশৃঙ্খলা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য, অপরাধীকে শাস্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে এ আইন কার্যকর ভূমিকা রাখতে পেরেছে বলে জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে উপস্থাপন করা হয়েছে, মন্ত্রিসভা সেটিকে গ্রহণ করেছে।

জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি আইন ২০২৪-এর বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিসভায় এ আইনের ভোটিংয়ে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। তখন সংসদে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সময় স্বল্পতার কারণে পাস করা যায়নি। কাজেই ফের এটি সংসদে নিতে মন্ত্রিসভার বৈঠকে তোলা হয়েছিল। সংসদে নেওয়ার জন্য মন্ত্রিসভা চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close