নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৯ মে, ২০২৪

সোলার বিদ্যুৎকেন্দ্র হচ্ছে জামালপুরে

উৎপাদন হবে ৬০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ

নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সরকার জামালপুরে ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার মেগাওয়াট সোলারবিদ্যুৎ উৎপাদন হাব তৈরির পরিকল্পনা করেছে। এ লক্ষ্যে তৈরি হতে যাচ্ছে ‘রিনিওয়েবল এনার্জি পলিসি’। এর মধ্য দিয়ে দেশের মানুষ নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের দিকে ঝুঁকবে। কারণ সোলার বা নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ তুলনামূলক কম দামে উৎপাদন করা যাচ্ছে। ফলে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ খাতের অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানো সম্ভব হবে।

এ বিষয়ে সম্প্রতি এক আলোচনায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব নীরোদ চন্দ্র মণ্ডল বলেন, নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ; বিশেষ করে সোলার রুফটপকে উৎসাহিত করতে আমদানিকৃত প্রযুক্তি ও যন্ত্রাংশের ওপর ট্যারিফ, ডিউটি কমানোর জন্য নতুন পলিসি করা হচ্ছে, এসআরও এর মাধ্যমে এটি শিগগিরই জানানো হবে।

নীরোদ চন্দ্র মণ্ডল বলেন, এরই মধ্যে জামালপুরের ইসলামপুর যমুনা নদীর চরে ২০ হাজার একর জমির ওপর বিশ্বব্যাংক একটি ফিজিবিলিটি স্টাডি (সম্ভাব্যতা যাচাই) সম্পন্ন করেছে। বিশ্বব্যাংক এরই মধ্যে গবেষণা করে একটি ইতিবাচক প্রতিবেদন দিয়েছে। পরিবেশের বিষয়ে ক্রিটিকাল ইস্যুগুলো (জটিল বিষয়) নিয়ে তারা যে স্টাডি করেছে, তার ইতিবাচক ফল পেয়েছি। আমরা আশা করছি, শুধু জামালপুরের এ চরাঞ্চলেই ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারব। এছাড়া বেজা (বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ) জানিয়েছে, চাঁদপুরের হাইমচরের কিছু জায়গায় তারা একটি হাব করতে চায়। তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশে রিনিওয়েবল এনার্জি উৎপাদন করা বেশি সমস্যা নয়, কিন্তু এটি ব্যবস্থাপনা করাটাই আমাদের জন্য বেশি কঠিন। এজন্য যুক্তিসংগত দামে স্টোরেজ তৈরির কাজ চলছে। আশা করি, সমস্যাগুলো দূর করা সম্ভব হবে।

যুগ্ম সচিব জানান, এরই মধ্যে পাওয়ার ডিভিশন নেট মিটারিং নিয়ে একটি সার্কুলার দিয়েছে, যা নেট মিটারিংয়ের সঙ্গে কন্ট্রাডিক্ট করে। সেই কন্ট্রাডিক্টশন বা বৈপরীত্যগুলোকে দূর করার জন্য আমরা কাজ করব। যেমন সিঙ্গেল ফেজ মিটারিং করা যাবে কি না, গাইডলাইনে এমন কিছু বলা নেই। কিন্তু সার্কুলারে আছে সিঙ্গেল ফেজে কেউ করতে চাইলে করতে পারবে। ৭০ শতাংশের একটি বাধা আছে, আমরা কেস টু কেস আলোচনা করে যদি দেখি ডিস্ট্রিবিউশন ও উৎপাদনে প্রভাব পড়বে না, তবে এটিও তুলে দেওয়া হবে। সোলার রুফটপে ৭০ শতাংশের ওপরে ক্যাপাসিটি থাকলে, সেটিরও সুযোগ দেওয়া হবে। ১০ মেগাওয়াটের বেশি (উৎপাদন/সরবরাহ) করা যাবে না, এমন একটি বাধা আছে। এবার সেটিও তুলে দেওয়া হবে।

হাইড্রোজেন এনার্জির বিষয়ে নীরোদ চন্দ্র মণ্ডল বলেন, অনেকেই এ এনার্জির কথা বলেন, কিন্তু এতে আমি আশাবাদী নই। কারণ এতে অনেক জটিলতা আছে। যেমন হাইড্রোজেন উৎপাদন সম্ভব, কিন্তু এটি দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা অনেক কঠিন। কিন্তু ‘ইন্টিগ্রেটেড এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার মাস্টারপ্ল্যানে’ (আইইপিএমপি) রুফটপ পাওয়ার সাপ্লাইয়ে অনেক জোর দেওয়া হয়েছে। বলা হচ্ছে ২০৫০ সালের মধ্যে ১২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্বালানি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও পরিচালক এস এম নাসিফ শামস বলেন, আমাদের মাঝে একসময় অনেক কিছু ধোঁয়াশা ছিল সোলার রুফটপ নিয়ে, সেটি এখন কেটে গেছে। ব্যস্ততম শহরে সোলার রুফটপ ও সবুজায়ন একসঙ্গে করতে হবে। শহরে বাসার ছাদের বহুবিধ ব্যবহার রয়েছে, কীভাবে সবুজায়ন করে একই সঙ্গে ব্যবহার করা যায় সে প্রযুক্তি নিয়ে ভাবতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close