ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি

  ০৯ মে, ২০২৪

পরিচয়পত্রে নাম বিভ্রাটে সুবিধাবঞ্চিত বীর মুক্তিযোদ্ধা

জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি কার্ড) নাম বিভ্রাট নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ভূরুঙ্গামারী উপজেলার এক বীর মুক্তিযোদ্ধা। প্রায় দুই আগে নির্বাচন অফিসে নাম সংশোধনের জন্য আবেদন করেন তিনি। কিন্তু দীর্ঘদিনেও তা সংশোধন না হওয়ায় বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তার পরিবারের সদস্যরা।

ভূরুঙ্গামারী সদর ইউনিয়নের আঙ্গারীয়া গ্রামের এ বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম শ্রী তরনীকান্ত রায়। তার ডাক নাম ললিত। পিতার নাম মহেন্দ্র কান্ত রায়। ভারতীয় মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় তার নম্বর ৪০৪৯৩, বাংলাদেশ বেসামরিক গেজেটে তার নং-১১৮৫ এবং লাল মুক্তি বার্তায় তার নং-৩১৬০৪০৫৪৯। এসব তালিকায় তার নাম রয়েছে তরনীকান্ত রায়। শুধু তাই নয়, তার জন্মনিবন্ধন এবং ১৯৭২ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য এ বীর মুক্তিযোদ্ধার টেবুলেশন শিটে (নম্বরপত্রে) নাম রয়েছে তরনীকান্ত রায়।

জানা যায়, জাতীয় পরিচয়পত্রে তরনীকান্ত রায়ের পরিবর্তে ভুলবশত তার ডাক নাম ললিত বর্মণ অন্তর্ভুক্ত হয়। প্রথম দিকে জাতীয় পরিচয়পত্রের গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারেননি তিনি। পরে জাতীয় পরিচয়পত্রে নামের বিভ্রাট নিয়ে বিপাকে পড়লে তিনি সব প্রমাণপত্র, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার, ইউপি চেয়ারম্যান ও প্রধান শিক্ষকের প্রত্যয়নপত্রসহ নির্বাচন অফিসে নাম সংশোধনের আবেদন (ক্রমিক নং এনআইডিসিএ ১১৮৪৮৩৫১) করেন। দীর্ঘ দুই বছরেও তা সংশোধন না হওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তার পরিবারের সদস্যরা। তরনীকান্ত বলেন, আমি গৃহঋণের জন্য আবেদন করেছি। কিন্তু নাম বিভ্রাটের কারণে গৃহঋণ পাচ্ছি না। শুধু তাই নয়, নাম বিভ্রাটের কারণে আমি অন্য কোনো সুবিধাও পাচ্ছি না। স্ত্রী, তিন ছেলে, ছেলের বউ, ও নাতি-নাতনি নিয়ে তার সংসার।

তরনীকান্ত রায়ের স্ত্রী জয়ন্তী রানী বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্রে নাম সংশোধন করতে না পারায় আমার স্বামী চিন্তায় চিন্তায় অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করেন না। তার কিছু হয়ে গেলে আমাদের কী হবে? প্রতিবেশী শংকর বিশ্বাস (৫০), আয়নাল হক (৬০) ও বিসাদী বর্মণ (৪৫) জানান, তরনীকান্তের ডাক নাম ললিত। তরনীকান্ত ও ললিত একই ব্যক্তি। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সদ্য সাবেক কমান্ডার মহি উদ্দিন আহমেদ জানান, তিনি একজন প্রকৃত ফ্রিডম ফাইটার (এফএফ)। ৬নং সেক্টরের অধীন ঠাকুরগাঁওয়ে তিনি যুদ্ধ করেছেন। তিনি জানান, ভুলবশত জাতীয় পরিচয়পত্রে তার ডাক নাম ললিত বর্মণ হয়েছে। এটা সংশোধনের জন্য আমি প্রত্যয়নপত্র দিয়েছি।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সাইফ আহমেদ নাসিম মোবাইল ফোনে বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি। এ বিষয়ে কিছুই বলতে পারছি না। পরে বিষয়টি দেখে জানাব। তবে উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পুরো নাম সংশোধনের বিষয়টি তাদের এখতিয়ারে নেই। এটা জাতীয় নির্বাচন কমিশন কার্যালয় থেকে করা হয়ে থাকে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম ফেরদৌস বলেন, এ বিষয়ে আমাকে কেউ অবগত করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close