নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৬ আগস্ট, ২০২০

করোনার ভুয়া রিপোর্ট জালিয়াতি

সাবরিনা-আরিফসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

করোনার ভুয়া রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগে প্রতারণার মামলায় জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা চৌধুরী ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আরিফুল হক চৌধুরীসহ আটজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গতকাল বুধবার ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে দুপুরের পর এ চার্জশিটটি দাখিল করেন ডিবি পুলিশের পরিদর্শক লিয়াকত আলী। চার্জশিটে সাবরিনা ও আরিফকে মূল হোতা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বাকিরা প্রতারণা ও জালিয়াতি করতে তাদের সহযোগিতা করেছে। মামলায় অভিযুক্ত অন্য আসামিরা হলেন আবু সাঈদ চৌধুরী, হুমায়ূন কবির হিমু, তানজিলা পাটোয়ারী, বিপ্লব দাস, শফিকুল ইসলাম রোমিও ও জেবুন্নেসা। অভিযুক্তদের মধ্যে হিমু, তানজিলা ও রোমিও দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে।

গত ২৩ জুন সাবরিনার স্বামী আরিফ চৌধুরীসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। ২৪ জুন আরিফ চৌধুরী ও সহযোগী সাঈদ চৌধুরীর দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকা মহানগর হাকিম আদালত। তাদের জিজ্ঞাসাবাদেও বেরিয়ে আসে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। তবে ১৫ জুলাই আরিফুলের ফের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। ১৬ জুলাই রিমান্ডে মুখোমুখি হন আরিফ-সাবরিনা। স্বামীর সামনে সাবরিনা বলেন, ‘আরিফের জন্যই আজ এই অবস্থা।’

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, অভিযোগপত্রে আরিফ ও সাবরিনাকে মূল হোতা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বাকিরা প্রতারণা ও জাল জালিয়াতি করতে তাদের সহযোগিতা করেছে। তদন্তে জেকেজি হেলথকেয়ারের কম্পিউটারে ১ হাজার ৯৮৫টি ভুয়া রিপোর্ট ও ৩৪টি ভুয়া সার্টিফিকেট পাওয়া গেছে। জানা গেছে, স্বাস্থ্য অধিদফতরের অনুমোদন নিয়ে করোনাভাইরাসের স্যাম্পল সংগ্রহ ও পরীক্ষা করা শুরু করেছিল জেকেজি হেলথকেয়ার। কিন্তু করোনাভাইরাস পরীক্ষার প্রচুর চাহিদা থাকায় প্রতারণা শুরু করে জেকেজি সংশ্লিষ্টরা।

অর্থ আদায়ের অনুমতি না থাকলেও অর্থের বিনিময়ে নমুনা সংগ্রহ করত তারা। সেসব নমুনা কোনো ল্যাবে না পাঠিয়ে নিজেরাই অনুমানের ওপর ভিত্তি করে পজিটিভ বা নেগেটিভ রিপোর্ট দিয়ে দিত। এছাড়া করোনাভাইরাসের নেগেটিভ সার্টিফিকেটের চাহিদা থাকায় অর্থের বিনিময়ে ভুয়া ল্যাব সার্টিফিকেট তৈরি করে দিত। গোয়েন্দা সূত্র জানায়, সাবরিনা আরিফ চৌধুরী প্রথমে নিজের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করলেও জেকেজির জালিয়াতি শুরু করার বিষয়ে সবকিছু জানতেন। এমনকি জেকেজি হেলথকেয়ার ছাড়ার আগ পর্যন্ত তিনি জালিয়াতির অর্থের ভাগও নিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, গত ২৩ জুন জেকেজির সিইও আরিফসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। এ ঘটনায় তেজগাঁও থানায় প্রতারণা ও জাল জালিয়াতির অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। মামলার তদন্তে জেকেজির চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনার নাম এলে গত ১২ জুলাই তাকেও গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলাটি প্রথমে থানা পুলিশ তদন্ত করলেও পরে তা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। জেকেজির জালিয়াতি সামনে আসার পর স্বাস্থ্য অধিদফতর জেকেজির সঙ্গে করা তাদের চুক্তি বাতিল করে। অপরদিকে ডা. সাবরিনাকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close