reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০২ জুন, ২০২৩

ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা জরুরি

যতই দিন যাচ্ছে, ততই বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই এবার আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী, যা সংখ্যার দিক থেকে গত বছরের প্রথম ৫ মাসের তুলনায় প্রায় ৬ গুণ। গত বছর এ সময় ডেঙ্গুতে মৃত্যুশূন্য থাকলেও এবার তা ১৩ জন। বর্ষা শুরু হলে এডিসের ঘনত্ব আরো বাড়তে পারে- এমনটাই আশঙ্কা করেছেন কীটতত্ত্ববিদরা। সাধারণত জুন থেকে সেপ্টেম্বর ডেঙ্গুর মৌসুম। এ সময় বৃষ্টির জমে থাকা পানিতে এডিস মশার লার্ভা সৃষ্টি হয়। তাই এ সময়টাকে ডেঙ্গুর জীবাণু বহনকারী এডিস মশার প্রজননকাল ধরে নেওয়া হয়। এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু জ্বরের প্রাদুর্ভাব বাড়ে। এবার মৌসুমের আগেই ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগী দিন দিন বাড়ছেই।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, চলতি বছরে জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ২২ জন। তাদের মধ্যে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ হাজার ৭২৬ জন। আর এ সময়ের মধ্যে মারা গেছেন ১৩ জন। বছরের শুরুতে জানুয়ারি মাসে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৫৬৬ জন। তাদের মধ্যে মারা যান ছয়জন। এ ছাড়া ফেব্রুয়ারিতে ১৬৬ জন ভর্তি হয়, মৃত্যু হয় তিনজনের। মার্চে কারো মৃত্যু না হলেও হাসপাতালে ভর্তি হয় ১১১ জন। এপ্রিলে ভর্তি হয় ১৪৩ জন আর মৃত্যু হয় দুজনের। মে মাসে মৃত্যু হয়েছে দুজনের আর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৩৬ জন। ঢাকা মহানগরীর পর দেশে সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী কক্সবাজারে। সেখানে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মধ্যে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে বলে স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে। এরই মধ্যে ডেঙ্গুর বিস্তার ঠেকাতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। রোগীর চাপ কমাতে এখন থেকেই প্রস্তুতি গ্রহণের কথা বলা হচ্ছে। প্রতিটি হাসপাতালে নতুন নির্দেশনা দেওয়া আছে। স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ চলমান রয়েছে। ডেঙ্গু পরীক্ষার ফি সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা ও সরকারি হাসপাতালগুলোতে ১০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এদিকে ডেঙ্গুর প্রকোপকে অত্যন্ত অ্যালার্মিং বলেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম। গত বুধবার এজন্য নগরবাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে ডেঙ্গুকে সামাজিকভাবে প্রতিরোধ করতে হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। তিনি বলেছেন, ‘ডেঙ্গুকে আমরা প্রতিরোধ করতে চাই। কারণ শুধু কীটনাশক প্রয়োগ করে এডিস মশার বিস্তার রোধ করা সম্ভব নয়।’

কোনো কোনো রোগ আমরা সামান্য চেষ্টাতেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। প্রয়োজন শুধু সচেতনতা। অথচ এ ক্ষেত্রে আমাদের গাফিলতি ও অলসতা লক্ষ করা যায়। মূলত ডেঙ্গু প্রতিরোধে সবার আগে সচেতন হতে হবে নগরবাসীকেই। তাদের সিটি করপোরেশনের কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে হবে। ঘরের কোথাও যেন পানি জমে না থাকে সে বিষয়ে লক্ষ রাখতে হবে। একই সঙ্গে এডিস মশা নির্মূলে সারা বছর কাজ করতে হবে সিটি করপোরেশনকে। এজন্য কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। তা ছাড়া ডেঙ্গুর প্রতিরোধে জনসচেতনতা তৈরি, ডেঙ্গুর প্রাথমিক লক্ষণগুলো সম্পর্কে মানুষকে ওয়াকিবহাল করা ও ডেঙ্গু হলে করণীয় সম্পর্কে প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close