reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ৩০ নভেম্বর, ২০২২

পাসের হারের চেয়েও শিক্ষার মান উন্নয়ন গুরুত্বপূর্ণ

এসএসসি এবং এইচএসসি- প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ এই দুটি পাবলিক পরীক্ষা। এর যেকোনো একটি দুর্বল হলেই শিক্ষাব্যবস্থা আর মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে না। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার প্রথম ধাপ হলো প্রাথমিক শিক্ষা। এটি মানসম্মত হলে শিশুদের শিক্ষার ভিত্তি মজবুত ও টেকসই হয়। ফলে শিক্ষার পরবর্তী স্তরগুলো মানসম্মত করা অনেকাংশে সহজ হয়, শিক্ষার্থীদের মানসিক দৃঢ়তা, মানসিক শক্তি বৃদ্ধি পায়, যা শিশুর বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এসএসসি এবং এইচএসসি স্তর শিক্ষার্থীরা ভালোয় ভালোয় পার করতে পারলে তাদের জন্য উচ্চ শিক্ষা স্তরে প্রবেশ করাও সহজ হয়ে যায়। গত সোমবার প্রকাশিত হলো এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল। এবার সংক্ষিপ্ত সিলেবাস ও প্রশ্নপত্রে সুবিধা থাকা এবং সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের কারণে পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করেছে শিক্ষার্থীরা। এমনকি বিষয়ভিত্তিক ফলেও; বিশেষ করে বাংলা, ইংরেজি ও গণিতের মতো কঠিন বিষয়েও তারা ৯০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়েছে। এতে সার্বিক ফলাফলে জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যাও বেড়েছে। ফলাফলে ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের এগিয়ে যাওয়ার চিত্রও দেখা গেছে। গত কয়েক বছর ধরেই এসএসসিতে পাসের হারের দিক থেকে ছাত্রীরা এগিয়ে রয়েছে। এটা সত্যিই আশাবাদী হওয়ার মতো খবর যে, প্রতি বছরই মেয়েরা পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করছে। এ বছর সব শিক্ষা বোর্ডে উত্তীর্ণ ছাত্রের চেয়ে ৩ হাজার ৫২৭ জন বেশি ছাত্রী উত্তীর্ণ হয়েছে এবং ছাত্রের চেয়ে ২৭ হাজার ২৯০ জন বেশি ছাত্রী জিপিএ ৫ পেয়েছে। ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে উত্তীর্ণ ছাত্রের চেয়ে ৬২ হাজার ৮১ জন বেশি ছাত্রী উত্তীর্ণ হয়েছে এবং ছাত্রের চেয়ে ২৮ হাজার ৮৪৫ জন বেশি ছাত্রী জিপিএ ৫ পেয়েছে।

প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করেছে ৮৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ শিক্ষার্থী, যা গতবারের চেয়ে কম। এবার ১১টি শিক্ষা বোর্ডে ১৯ লাখ ৯৪ হাজার ১৩৭ শিক্ষার্থী মাধ্যমিক ও সমমানের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। দীর্ঘ অপেক্ষার পর স্কুলের গ-ি অতিক্রম করা এই শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১৭ লাখ ৪৩ হাজার ৬১৯ জন পাস করেছে। এর মধ্যে ৯টি সাধারণ বোর্ডে ৮৮ দশমিক ১০ শতাংশ, মাদ্রাসা বোর্ডে ৮২ দশমিক ২২ শতাংশ এবং কারিগরি বোর্ডে ৮৯ দশমিক ৫৫ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। আর ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬০২ জন জিপিএ ৫ পেয়েছে। এই হিসাবে এবার পাসের হার কমেছে ৬ দশমিক ১৪ শতাংশ পয়েন্ট। আর পূর্ণাঙ্গ জিপিএ পাওয়া শিক্ষার্থী বেড়েছে ৮৬ হাজার ২৬২ জন। আগেরবার এই পরীক্ষায় পাস করেছিল রেকর্ড ৯৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ, জিপিএ ৫ পেয়েছিল ১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৪০ জন। আমরা লক্ষ্য করছি যে, বছর বছর ছকে বাঁধা পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে লাখ লাখ শিক্ষার্থী চমকপ্রদ ফলাফল করছে। তবে এটা অবশ্যই ভালো কিছু। কিন্তু মূল কথা হলো শিক্ষার্থীরা প্রকৃত শিক্ষা অর্জন করতে পারছে কি-না সেটাই দেখার বিষয়। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা; দেশ ও সংস্কৃতি সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান অর্জন করতে পারছে কি-না সে বিষয়ে শিক্ষক ও অভিভাবকদের লক্ষ্য রাখা উচিত। পাসের হার ও জিপিএ ৫ বৃদ্ধির চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো শিক্ষার মান বৃদ্ধি, শিক্ষাব্যবস্থাপনার গুণগত মান উন্নয়ন। সেটাই লক্ষ্য থাকা উচিত সবার।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close