
বিশ্বব্যাংক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের প্রশংসা

ভালো কাজের প্রশংসা করেন না এমন লোক খুঁজে পাওয়া ভার। আর এই প্রশংসা শুনতে কার না ভালো লাগে। আবার সে প্রশংসা যদি হয় রাষ্ট্র অথবা জাতির। রাষ্ট্রের প্রশংসা তখনই আসে, যখন জাতি বা জাতির কোনো সদস্য তা অর্জন করেন। রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বব্যাংকের প্রশংসা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। এ অর্জনের পেছনে রয়েছে দেশের ১৭ কোটি মানুষের শ্রম ও মেধার জোগান। রয়েছে নেতৃত্ব। অত্যন্ত সাহসী যোগ্যতায় যে নেতৃত্ব দিয়েছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ আর এ কথা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই।
বিশ্বব্যাংক বলছে, এগিয়ে যাওয়া প্রথম ১০ দেশের একটি বাংলাদেশ। সত্যই বটে, অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ। স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে যার উত্তরণ ঘটেছে। এখন একসময়ের তলাবিহীন দেশটির উন্নয়নের প্রশংসায় পঞ্চমুখ বিশ্বনেতারা। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্যে বাংলাদেশ আজ দক্ষিণ এশিয়ার যেকোনো দেশকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে। বিশ্বব্যাংক বলছে, গত এক দশকে এগিয়ে যাওয়া ১০ দেশের একটি বাংলাদেশ। এ সময় বাংলাদেশের চেয়ে ভালো অবস্থানে শুধু চীন। তবে নেতিবাচক বার্তাও যে নেই, তাও নয়। বিশ্বব্যাংক যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সেখানে বলা হয়, বেশ কয়েকটি কারণে চলমান উন্নয়ন টেকসই নাও হতে পারে। এজন্য ব্যাপক সংস্কারের কথাও তারা উল্লেখ করেছে।
এখানে একটি কথা না বললেই নয় যে, যে কাজ করে তার ভুল হবে আর যে কাজ করে না, তার ভুলের কোনো সম্ভাবনাও থাকে না। আমরা দশটি কাজের মধ্যে ছয়টি সঠিক হলেই তাকে ভালো বা গ্রহণযোগ্য বলে ধরে নিতে পারি। যদি আটটি সঠিক হয় তাকে বলব বেশ ভালো। পরবর্তী সময়ে তা শুধরে নিয়ে আরো ভালো করা যেতে পারে। এ বিবেচনায় বাংলাদেশের অবস্থান নিঃসন্দেহে ভালো বা বেশ ভালো। বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ হতে প্রতি বছর প্রবৃদ্ধির দরকার পড়বে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ। এদিকে খেয়াল রাখতে হবে। পাশাপাশি মানবসম্পদ উন্নয়নে স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় বিনিয়োগ আরো বাড়াতে হবে। সক্ষমতা বাড়াতে হবে ব্যবসা-বাণিজ্যের।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনের দিকে চোখ রেখে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, জনগণের দোরগোড়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছে দেওয়া এবং শিক্ষার হার বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বাংলদেশ সঠিক পথেই চলছে। বিশ্বব্যাংক যেসব পরামর্শ বা প্রস্তাবনা দিয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং তা কার্যকর করার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যেই এলডিসি ক্যাটাগরি থেকে উত্তরণের জন্য মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ সূচক এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচক- এ তিন সূচকের যেকোনো দুটি অর্জনের শর্ত থাকলেও বাংলাদেশ তিনটি সূচকের মানদন্ডেই উন্নীত হয়েছে। তবে এ কথাও সত্য যে, আমাদের একটি ক্ষমতা ও যোগ্যতা আছে। আমরা আমাদের সাধ্য অনুুযায়ী চেষ্টা করি। সেখানে কোনো কার্পণ্য থাকে না। তবে আমরা আরো উন্নতি করতে চাই। জনগণের মেধা, শ্রম ও ইচ্ছাশক্তির ওপর আমাদের ভরসা আছে। সেই ইচ্ছাশক্তির ওপর ভরসা করেই আমরা এগিয়ে যাব। সফলতা আসবেই- এটাই প্রত্যাশা।’
"