reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২

চবির গেটে তালা অবরুদ্ধ বিবেক

প্রবেশ এবং বেরুবার পথ একটিই। শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ২৮ হাজার। শিক্ষক ৮৭২ জন। প্রতিদিন প্রায় ২৯ হাজার আদমকে এই একটি দরোজা দিয়েই ভিতরে প্রবেশ করতে এবং বেরিয়ে আসতে হয়। দ্বিতীয় কোনো পথের ব্যবস্থা নেই। এটি একটি পাবলিক ইউনিভার্সিটি। নাম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। প্রায় ২৮ হাজার তরুণ-তরুণীর পদচারণায় মুখরিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি দরজা কেন জানি বড়বেশি বেমানান মনে হয়। মনে হয়, অবরুদ্ধ নগরীতে স্বপ্নের বোবাকান্না। এ কান্না তরুণ-তরুণীদের। যাদের এখন স্বপ্নের ভেলায় চড়ে পৃথিবী ভ্রমণ করার কথা- তারা তখন বাস করছে এক অবরুদ্ধ নগরীতে। যদিও এটি একটি বিশ্ববিদ্যালয়। বেরিয়ে যাওয়ার দরোজা একটিই। আর সে দরজায় যখন তালা পড়ে, তখন বিবেকটাও যেন অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে।

বলছিলাম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) কথা। তথ্য মতে, চবির গেটে বারবার তালা পড়ে। ছাত্র রাজনীতির অন্তর্কোন্দল, দুপক্ষের মারামারিসহ যেকোনো ঘটনায় চবির মূল গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন আন্দোলনকারীরা। ফলে ভেতরে যারা অবস্থান করেন, তাদের পোহাতে হয় দুর্ভোগ। ছাত্র-শিক্ষক ও স্টাফদের চলাচল বিঘিœত হয়। নিজস্ব যানবাহন চলাচল করতে পারে না। সবকিছুর সামনে যেন একটি অদৃশ্য পাহাড় এসে প্রতিবন্ধক হিসেবে দাঁড়িয়ে পড়ে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হন সবাই। বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা। আর এসব হওয়ার পেছনের কারণ কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা। তবে বর্তমান প্রশাসন বলেছে, আন্দোলনের নামে কেউ গেটে তালা মেরে অবরোধ করলে আর চুপ থাকবে না প্রশাসন। যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তথ্য মতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল গেটে গত ৯ মাসে বিভিন্ন ইস্যুতে তালা পড়েছে ১০ বারেরও বেশি। বারবার গেটে তালা দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত করাকে ভালোভাবে নিচ্ছেন না কেউই। না শিক্ষক, না ছাত্র। অধিকাংশের মতে, প্রশাসনের ব্যর্থতাই দিন দিন তীব্রতর হচ্ছে এই তালা মারার সংস্কৃতি। শিক্ষকরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল কাজ ক্লাস ও পরীক্ষা নেওয়া, গবেষণা করা, জ্ঞান সৃজন ও বিতরণ করা। এ কাজে যদি কোনো বাধার সৃষ্টি হয় তখন ক্ষতিটা শুধু শিক্ষার্থীদেরই হয় না, গোটা সমাজকে এর দায় বহন করতে হয়। আমরা জানি, কোনো বৃহৎ স্বার্থের জন্য ক্ষুদ্রতর স্বার্থকে বলি দিতে হয়। কিন্তু একটি স্বাধীন দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন, গবেষণা এবং জ্ঞান সৃজনের চেয়ে বৃহৎ স্বার্থ আর কী হতে পারে! সুতরাং আন্দোলনের নামে এ ধরনের অবরোধ কারো কাম্য হতে পারে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল গেটে তালা ঝুলিয়ে দিলে ক্যাম্পাস অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। বন্ধ হয় সব শিক্ষা কার্যক্রম। সর্বাগ্রে ক্ষতির শিকার হন শিক্ষার্থীরা।

অনেকের মতে, প্রশাসনের নতজানু নীতির কারণে সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। ছাত্রদের আচরণের সামনে তাদের কোনো বলিষ্ঠ ভূমিকা না থাকায় বারবার এ ঘটনার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। কিন্তু ২৮ হাজার শিক্ষার্থীর বেশিরভাগই এর একটা ইতিবাচক সমাধান চান। শিক্ষকদের মতামতও একই সূত্রে বাঁধা। আমরা মনে করি, দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হওয়াটা খুবই জরুরি। প্রশাসন বলছে, আমরাও কঠোর হচ্ছি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close