reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৮ ডিসেম্বর, ২০১৯

‘কৃষকের বাজার’কে সু-স্বাগতম

খাদ্যের সঙ্গে বিষ গ্রহণ করতে করতে মানুষ যখন বিষ মেশানো খাদ্যের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে, ঠিক সে মুহূর্তে এলো একটি সুসংবাদ। পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়, বিষমুক্ত শাকসবজির বাজার বসছে রাজধানী ঢাকায়। পুরো বাংলাদেশে না হলেও বলা যায়, প্রাথমিকভাবে এটি একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। কৃষি মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে সার ও কীটনাশকমুক্ত শাকসবজি ও দানাদার শস্যের জোগান দিতে রাজধানীতে যাত্রা করেছে ‘কৃষকের বাজার’। গত শুক্রবার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের সেচভবন প্রাঙ্গণে এ বাজারের যাত্রা শুরু। এখন থেকে প্রতি সপ্তাহের শুক্র ও শনিবার এই দুই দিন সকাল ৭টা থেকে বসবে এ বাজার।

তথ্য মতে, কৃষকের বাজারে যে কৃষকরা অংশগ্রহণ করেছেন, তাদের এক বছর ধরে প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রস্তুত করা হয়েছে। সম্পূর্ণরূপে কীটনাশকমুক্ত সবজি নিয়ে আসছেন বিক্রেতাপক্ষ। স্বল্পপরিসরে হলেও এটি অব্যাহত থাকবে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, স্বল্প পরিসরে শুরু হলেও ভবিষ্যতে এটি বৃহৎ পরিসরে ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে মন্ত্রণালয়ের। পরিকল্পনাটির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে আমরাও মনে করি, বিষমুক্ত খাদ্য নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে এটি হতে পারে একটি মাইলফলক। তবে কাজটি আপাতদৃষ্টিতে সহজ মনে হলেও ততটা সহজ নয়। বিশেষ করে আমাদের মতো দুর্নীতিসমৃদ্ধ একটি দেশে। তবে আমরা আশাবাদী। আর এই আশাবাদ নির্ভর করছে তাদের ওপর, যারা এ উদ্যোগের সঙ্গে একাত্ম হয়ে একটি কঠিন সমস্যা সমাধানে এগিয়ে এসেছেন। আমরা বিশ্বাস করতে চাই, এ কাজে যারা অংশগ্রহণ করেছেন এবং করবেন তারা এক কঠিন যুদ্ধের মুখোমুখি হয়েছেন। এ যুদ্ধ অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায় প্রতিষ্ঠার যুদ্ধ। জাতির অস্তিত্ব¡ রক্ষার যুদ্ধ। বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত এ যুদ্ধ অব্যাহত থাকবে। যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের কাছে আমাদের অঙ্গীকার, আপনারা কিছু সংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধের সূচনা করলেও আপনাদের সঙ্গে আছে গোটা দেশ, জাতি এবং এ দেশের ১৭ কোটি মানুষ। প্রয়োজনে সবাই আপনাদের পাশে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সহযোদ্ধা হবে।

তথ্যমতে, দানাজাতীয় খাদ্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান বেশ ভালো। উদ্বৃত্ত উৎপাদনে পৌঁছেছে দেশ। চলতি বছরে দেশ থেকে ৮০০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের শাকসবজি, দানা খাদ্য ও কৃষিপণ্য বিদেশে রফতানি হয়েছে। এখানে না বললেই নয় যে, ৮০০ মিলিয়ন ডলারের যে খাদ্যপণ্য বিদেশে রফতানি হয়েছে তার পুরোটাই ছিল বিষমুক্ত। কেননা বিষযুক্ত পণ্য বিদেশে রফতানি সম্ভব নয়। সুতরাং গর্বের সঙ্গে আমরা বলতে পারি, অনেক অসম্ভবকে আমরা সম্ভব করেছি। সেসব অসম্ভবের কাছে বর্তমানের অসম্ভব ততধিক শক্তিধর কিছু নয়। আমাদের ইচ্ছাশক্তিই এর পরাজয় ঘটাতে সক্ষম। এদিকে কৃষি খাতের রফতানি ক্রমাগত বাড়ছে। বাড়ছে বিষমুক্ত খাদ্যপণ্যের উৎপাদন। এরই ধারাবাহিকতার সঙ্গে কৃষকের বাজারের পরিকল্পনাকে যুক্ত করতে পারলে গোটা জাতিও একদিন বিষমুক্ত খাবারের স্বাদ গ্রহণ করতে পারবে বলেই আমরা বিশ্বাস করি। তবে একটি ব্যাপারে চোখ-কান খোলা রাখতে হবে। আমাদের এই বিশ্বাসের গভীরে যেন দুর্বৃত্তের অণুপ্রবেশ না ঘটে। এরা সংখ্যায় অল্প হলেও ক্ষমতা অনেক। নিয়তে ভুল না হলে আল্লাহ নিশ্চয়ই আমাদের এ পরিকল্পনা কবুল করবেন। আমিন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close