প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ৩১ জানুয়ারি, ২০২৩

জার্মানির বিদ্যালয়গুলোতে তীব্র শিক্ষক সংকট

তীব্র শিক্ষক সংকটের কারণে জার্মানিতে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। ইউরোপের এ দেশটির বিদ্যালয়গুলো শিক্ষক সংকটসহ নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত। গবেষকরা বলছেন, এটি অব্যবস্থাপনা ও অপরিকল্পনার ফল।

রবিবার (২৯ জানুয়ারি) ডয়েচে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে চরম চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে জার্মানি। দেশটিতে কয়েক হাজার শিক্ষকের সংকট রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশের বাইরে থেকে শিক্ষক এনে শূন্যস্থান পূরণের পরিকল্পনা থাকলেও নানা আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় সেটি ঝুলে আছে।

শিক্ষক সংকট ছাড়াও বিদ্যালয় ভবনের বেহাল দশায় দেয়ালের প্লাস্টার খসে পড়ছে। টয়লেটের অবস্থাও ভাঙাচোরা। অনেক প্রতিষ্ঠানেই কম্পিউটারের সংকট রয়েছে এবং ওয়াইফাই সংযোগ নেই।

সম্প্রতি প্রকাশিত রবার্ট বোশ ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুসারে, অধিকাংশ স্কুলের কর্তৃপক্ষ শিক্ষাব্যবস্থায় সংকটের জন্য শিক্ষক ঘাটতিতে দায়ী করেছে।

রবার্ট বোশ ফাউন্ডেশনের গবেষক ডাগমার উলফ বলেন, ৩০ থেকে ৪০ হাজার শিক্ষকের পদ এখনো পূরণ করা হয়নি।

শিক্ষাব্যবস্থায় এই সংকট দীর্ঘদিনের। এমন পরিস্থিতি শেষ কবে হয়েছিল, সেটি মনে করা কঠিন। এ কথা বলেছেন জার্মান শিক্ষক সমিতির সভাপতি হেইঞ্জ-পিটার মেইডিঙ্গার। শিক্ষক ঘাটতির পেছনে বেশ কয়েকটি কারণও তুলে ধরেছেন তিনি। তিনি বলেন, জন্মহার বৃদ্ধির মধ্যেও গত ২০-৩০ বছরে প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকের সংখ্যা ব্যাপক হারে কমেছে। এখন তরুণদের চাকরির নিরাপত্তা আর দেওয়া হয় না।

এছাড়া প্রচুর সংখ্যক অভিবাসীর আগমনকেও কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন তিনি। হেইঞ্জ-পিটার মেইডিঙ্গার বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে দুই লাখের বেশি ইউক্রেনীয় শিশুর জার্মানিতে আগমন ঘটেছে। আর জার্মান আইন অনুযায়ী ৬ থেকে ১৬ বছর বয়সি শিশুদের স্কুলে যেতে হয়। এমন পরিস্থিতির জন্য বিদ্যালয়গুলো প্রস্তুত ছিল না।

জার্মান ইকোনমিক ইনস্টিটিউটের সমীক্ষা অনুসারে, ইউক্রেন থেকে বিপুল পরিমাণ শিশুর আগমন ঘটনায় অতিরিক্ত সাড়ে ১৩ হাজার শিক্ষকের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।

জার্মানির শিক্ষক ইউনিয়ন জিইডব্লিউর প্রধান ইলকা হফমান এ বিষয়ে বলেন, এ রকম এক উল্লেখযোগ্য ঘাটতি উঠতি বয়সি শিক্ষার্থীদের অর্জনে প্রভাব ফেলবে। এ বিপর্যয় গত কয়েক বছর ধরে তৈরি হচ্ছিল, এখন সেটা আমাদের আঘাত করছে।

ভবিষ্যতে জার্মানিতে শিক্ষক সংকট আরো প্রকট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ১৯৬০ সালে জন্মগ্রহণকারী শিক্ষকরা অবসরের বয়সে চলে এসেছেন। ফলে শিক্ষক সংকট আরো বাড়তে পারে। কয়েকজন গবেষকের ধারণা, আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ ৮০ হাজার পদ শূন্য হতে পারে।

সংকট নিরসনে দেশটির গবেষকরা কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। তারা বলছেন, ঘাটতি পূরণে অন্য বিষয়ে স্নাতক করেছেন এমন মানুষদেরও শিক্ষকতা পেশায় আনা যেতে পারে। কিছু স্কুল এরই মধ্যে এ চর্চা শুরু করলেও সেটি খুবই সীমিত। অন্য বিষয়ে পড়াশোনা করা কিংবা অন্য পেশায় কাজ করা মানুষদের জন্য শিক্ষক হিসেবে কাজ করাটাও সহজ নয়।

ক্যারিয়ার পরিবর্তন করে শিক্ষকতা পেশায় আগতরাও কাজটি যে সহজ নয় বিষয়টি স্বীকার করেছেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, অন্য পেশার মানুষদের শিক্ষক হিসেবে প্রস্তুত করার পাশাপাশি ভবিষ্যতে শিক্ষকের ঘাটতি কাটাতে অন্যান্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close