প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২৫ জানুয়ারি, ২০২৩

জাপানের সমাজব্যবস্থা অচল হয়ে পড়ছে

বেড়েছে গড় আয়ু কমেছে জন্মহার * তরুণদের মধ্যে সন্তান জন্মদানে অনীহা * অভিবাসন আইন শিথিল করার দাবি

জাপানে জন্মহার ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে। এখনই যদি ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয় তবে দেশটির সমাজব্যবস্থা অচল হয়ে পড়বে বলে সতর্ক করেছেন প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা।

বর্তমানে জাপানে জনসংখ্যা সাড়ে ১২ কোটির মতো। গত বছর সেখানে আট লাখের কম শিশুর জন্ম হয়েছে। অথচ ৭০-এর দশকেও দেশটিতে বছরে ২০ লাখের বেশি শিশুর জন্ম হতো।

বিশ্বের অনেক দেশই এখন জন্মহার হ্রাসের সংকটে ভুগছে। এমনকি জাপানের প্রতিবেশী দেশ চীনেও ২০২২ সালে জন্মহার হ্রাস পেয়েছে। কিন্তু জাপানের জন্য গত কয়েক দশক ধরে এটি বিশেষ সমস্যায় পরিণত হয়েছে। দেশটিতে মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। এদিকে, কমেছে জন্মহার। ফলে সমাজে বয়স্ক লোকের সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু তাদের সমর্থন দেওয়ার জন্য তরুণ কর্মীর সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে।

বিশ্ব ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ৬৫ বা তার বেশি বয়সের জনসংখ্যার দিক দিয়ে জাপান এখন বিশ্বে দুই নম্বরে রয়েছে। দেশটির মোট জনসংখ্যার ২৮ শতাংশের বয়স ৬৫ বছরের ওপরে। জাপানের থেকে সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে আছে মোনাকো।

সোমবার পার্লামেন্টে এক বক্তৃতায় কিশিদা বলেন, একটি সমাজ হিসেবে আমরা চলতে পারব কি না, তা নির্ধারিত হয়ে যাওয়ার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে জাপান। শিশু জন্ম এবং শিশু পালন-সংক্রান্ত নীতির প্রতি আমাদের মনোযোগ কেন্দ্রিভূত করা এখন এমন একটি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা ফেলে রাখা বা স্থগিত করার কোনো উপায় নেই।

তিনি শিশুবিষয়ক প্রকল্পগুলোতে সরকারি ব্যয় দ্বিগুণ করতে চান বলেও জানান। আগামী এপ্রিলের মধ্যে তিনি নতুন একটি সরকারি সংস্থা গঠন করতে চলেছেন, যারা এই বিষয় নিয়ে কাজ করবে।

জন্মহার বাড়াতে জাপান সরকার এ আগেও এ ধরনের নানা প্রকল্প গ্রহণ করেছে। কিন্তু সেগুলোর কোনোটি থেকেই সাফল্য আসেনি।

২০২০ সালে গবেষকরা জাপানের জনসংখ্যা নিয়ে একটি ভবিষ্যৎ হিসাব দেখিয়েছিলেন। সেখানে তারা বলেন, ২০১৭ সালে জাপানের জনসংখ্যা ১২ কোটি ৮০ লাখের চূড়া থেকে এ শতাব্দীর শেষ নাগাদ ৫ কোটি ৩০ লাখে নেমে যাবে।

জাপানে অভিবাসন আইন অত্যন্ত কঠোর। যদিও এখন কিছু কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া শুরু হয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভবিষ্যৎ সমাজকে বুড়িয়ে যাওয়া থেকে আটকাতে জাপানের উচিত তাদের অভিবাসন আইন আরো শিথিল করা।

জাপানে নানা কারণে জন্মহার হ্রাস পাচ্ছে। দেশটিতে জীবনযাত্রার ব্যয় অত্যন্ত বেশি, ফলে তরুণদের মধ্যে সন্তান জন্মদানে অনীহা বাড়ছে। তা ছাড়া অনেক নারী এখন শিক্ষাগ্রহণ করে কাজ করছেন। গর্ভনিরোধ ব্যবস্থাও এখন সহজপ্রাপ্য। ফলে নারীরা আগের তুলনায় কম সন্তান জন্ম দিচ্ছেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close