প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২২

মৃত্যু দুঃখজনক কিন্তু বিশৃঙ্খলা অগ্রহণযোগ্য : রাইসি

পুলিশের হাতে আটক মাশা আমিনির মৃত্যু ইরানের সবাইকে ব্যথিত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। তবে ওই তরুণীর মৃত্যু ঘিরে ইরানে যে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না বলেও হুশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

মাথায় হিজাব না থাকায় গত ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী তেহরানে ইরানের নৈতিকতা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন মাশা আমিনি নামের ২২ বছরের এক তরুণী। গ্রেপ্তার করে হেফাজতে নিয়ে যাওয়ার দুই ঘণ্টার মধ্যে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চার দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় মাশার।

মাশা আমিনির মৃত্যুর পর ইরানজুড়ে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। চার দশক ধরে চলে আসা কঠোর ইসলামি শাসনের অবসান চাওয়া হচ্ছে এ আন্দোলন থেকে।

ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাইসি বলেছেন, মর্মান্তিক ওই ঘটনায় আমরা সবাই দুঃখিত। কিন্তু বিশৃঙ্খলা অগ্রহণযোগ্য। তবে রাইসি যখন এসব বক্তব্য দিচ্ছিলেন তখনো ইরানজুড়ে বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল।

তিনি বলেন, জনগণের নিরাপত্তা বিঘিœত হতে দেওয়া যাবে না। দাঙ্গার মাধ্যমে সমাজে শান্তি নষ্ট করতে দেওয়া যাবে না।

এদিকে দুই সপ্তাহের বিক্ষোভে ইরানের মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। শক্ত হাতে বিক্ষোভ দমন করে যাচ্ছে ইরানের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তারপরও সোশ্যাল মিডিয়াতে বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে বিক্ষোভ স্লোগান দেওয়া হচ্ছে স্বৈরশাসক নিপাত যাক।

ইরানের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, তবে নিকট ভবিষ্যতে ইসলামি শাসনের অবসানের কোনো লক্ষণ যাচ্ছে না। কারণ ১৯৭৯ সালে মার্কিন সমর্থিত মোহাম্মদ রেজা শাহের পতনের সময় তারা যেমন দুর্বলতা দেখিয়েছিল, এখনকার শাসকরা তেমন কোনো দুর্বলতা না দেখাতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

১৩ সেপ্টেম্বর ২২ বছর বয়সি মাশা আমিনির মৃত্যুর পর ইরানের অন্তত ৮০টি শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। ঠিকভাবে হিজাব না পরার অপরাধে মাশা আমিনিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

মাশা আমিনির মৃত্যুর পর যে বিক্ষোভ ইরানে ছড়িয়েছে তা ২০১৯ সালে পেট্রলের দাম বৃদ্ধির কারণে হওয়া বিক্ষোভের পর সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ।

ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসি মাশা আমিনির মৃত্যুর তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, কয়েক দিনের মধ্যে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়া যাবে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আল খামেনি এখনো বিক্ষোভের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বলছে বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশ ও সরকারপন্থি মিলিশিয়া সদস্যসহ ৪১ জন মারা গেছেন। তবে ইরানের মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো বলছে নিহতের সংখ্যা আরো বেশি। বিক্ষোভ দমনে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি সমর্থন জানিয়ে রাইসি বলেন, তারা দেশকে সুরক্ষিত করার জন্য জীবন উৎসর্গ করছে।

তবে দেশ ও দেশের বাইরে থেকে বহু ইরানি সেলিব্রিটি, ফুটবল খেলোয়াড় এবং শিল্পী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। ইরানের কট্টরপন্থি বিচার বিভাগ বলছে, এ কারণে তাদের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।

রাইসি বলেন, বিশৃঙ্খলায় জড়িত প্রত্যেককে জবাবদিহির আওতায় আনা হবে। বুধবার প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যায় বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দিচ্ছেন- মোল্লারা বেরিয়ে যাও!

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close