আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

বয়স্ক ও অসুস্থরাই সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে

নতুন করোনাভাইরাসে ৭০ হাজারের বেশি আক্রান্তের তথ্য নিয়ে প্রথমবারের মতো বিস্তারিত গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেছে চীন। গত সোমবার দেশটির রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিসিডিসি) গবেষকরা এই ফলাফল প্রকাশ করেছেন। ফলাফল অনুযায়ী আক্রান্ত ৮০ শতাংশের অসুখই সামান্য এবং বয়স্ক মানুষেরাই বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। এছাড়া গবেষণায় দেখা গেছে ভাইরাসটির উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে চিকিৎসাকর্মীরা।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান শহরের একটি বন্যপ্রাণীর বাজার থেকে ছড়িয়ে পড়ে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। একপর্যায়ে এই ভাইরাস নিয়ে বিশ্বজুড়ে জরুরি স্বাস্থ্য পরিস্থিতি (হেলথ ইমার্জেন্সি) ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এখন পর্যন্ত অন্তত ২৪টি দেশে শনাক্ত হয়েছে এই ভাইরাস।

ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব নিয়ে প্রকাশিত প্রথম বিস্তারিত গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, সামগ্রিকভাবে এতে মৃত্যুর হার ২ দশমিক ৩ শতাংশ। আর ভাইরাসটির উৎপত্তিস্থল হুবেই প্রদেশে এই হার ২ দশমিক ৯ শতাংশ। গত সোমবার চীনের জার্নাল অব এপিডেমিয়োলোজিতে প্রকাশিত হয় সিসিডিসির নতুন গবেষণা ফলাফল। এতে গত ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৭২ হাজার ৩১৪ আক্রান্ত, সন্দেহভাজন ও লক্ষণযুক্ত মানুষের তথ্য স্থান পায়।

গবেষণা ফলাফলে দেখা গেছে প্রায় ৮০ দশমিক ৯ শতাংশ সংক্রমণের ঘটনাই খুবই সামান্য এবং মারাত্মক আক্রান্ত ১৩ দশমিক ৮ শতাংশ এবং মাত্র ৪ দশমিক ৭ শতাংশের অবস্থা গুরুতর। এছাড়া মৃতের হার সবচেয়ে বেশি ৮০ বছর বা তার চেয়েও বেশি বয়সিদের। এই বয়সিদের মৃতের হার ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ।

গবেষণার তথ্যানুযায়ী, ৯ বছর পর্যন্ত বয়সিদের মধ্যে মৃতের ঘটনা নেই। আর ৩৯ বছর পর্যন্ত বয়সিদের মধ্যে মৃতের হার মাত্র দশমিক ২ শতাংশ। এরপরের বয়সিদের মধ্যে এই হার ক্রমান্বয়ে বেড়েছে। ৪০ এর কোঠায় বয়সিদের মৃতের হার দশমিক ৪ শতাংশ, ৫০ এর কোঠায় বয়সিদের ১ দশমিক ৩ শতাংশ, ৬০ এর কোঠায় বয়সিদের ৩ দশমিক ৬ শতাংশ এবং ৭০ এর কোঠায় বয়সিদের মৃতের হার ৮ শতাংশ।

চীনের গবেষণায় দেখা গেছে, হৃদযন্ত্র ও রক্তনালির অসুখে ভোগা ব্যক্তিরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে বেশি ঝুঁকিতে পড়েছেন। এরপরের ঝুঁকিতে রয়েছেন ডায়াবেটিস, শ্বাসকষ্ট ও হাইপারটেনশনে ভোগা মানুষ।

চিকিৎসাকর্মীদের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি প্রসঙ্গে গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মোট ৩ হাজার ১৯ জন স্বাস্থ্যকর্মী সংক্রমিত হয়েছেন। এর মধ্যে ১ হাজার ৭১৬ জন নিশ্চিতভাবে আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মারা গেছে পাঁচজন।

উল্লেখ্য, চীনের সরকারি তথ্যানুযায়ী গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত দেশটিতে এই ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১ হাজার ৮৬৮ জনে দাঁড়িয়েছে। গত সোমবার নতুন করে মারা যাওয়া ৯৮ জনের মধ্যে অন্তত ৯৩ জন হুবেই প্রদেশের। এছাড়া এদিন নতুন করে আক্রান্ত হওয়া ১৮৬৮ জনের মধ্যে বেশির ভাগই হুবেই প্রদেশের। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে ৭২ হাজার ৪৩৬ জনে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close