আন্তর্জাতিক ডেস্ক
লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
পাল্টে গেছে বিজেপি শিবিরের চিত্র
এক দিনের মধ্যেই বিজেপি শিবিরের ছবিটা অনেক পাল্টে গিয়েছে। গত শুক্রবার অনেক রাত পর্যন্ত জেগেছেন নেতারা। যে ২০টি রাজ্যে ভোট হয়েছে, সব জায়গা থেকে রিপোর্ট সংগ্রহ করেছেন। তার ভিত্তিতে এখন আর কোনো আসনের দাবি করছে না দল। কিন্তু গেরুয়া শিবিরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, প্রাথমিক লক্ষণ, আদৌ বিজেপির পক্ষে স্বস্তির নয়।
দলের এক নেতার ব্যাখ্যা, অধিকাংশ রাজ্যে গত লোকসভার থেকে কম ভোট পড়েছে। গত ভোটে মনমোহন সিং সরকারকে সরিয়ে নরেন্দ্র মোদিকে ক্ষমতায় আনার একটি তাগিদ ছিল জনতার মধ্যে। মোদি-ঝড় ছিল দেশজুড়ে। কিন্তু এবারে তেমন কোনো ঝড় কোথাও দেখা যাচ্ছে না। মোদিকে পরাস্ত করতে হবে, এমন ভাবনাও নেই। কিন্তু দেশজুড়ে মোদির পক্ষে জোরালো হাওয়া না থাকায় স্থানীয় বিষয়গুলো বড় হয়ে উঠেছে। স্থানীয় জাত-পাতের অঙ্কও বড় ফ্যাক্টর।
ভোট শুরুর অনেক আগে থেকেই বুথকে শক্ত করতে আক্রমণাত্মক ছিলেন নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহ। আরএসএসও মাঠে নেমে কাজ করেছে। কিন্তু প্রথম দফার ভোটের গতিপ্রকৃতি দেখে বিজেপি শিবিরে অনেকেই মনে করছেন, ভোটারদের বুথ পর্যন্ত নিয়ে যেতেও সর্বত্র সক্ষম হচ্ছে না বিজেপি ও সংঘের কর্মীরা। কিছুদিন আগে ঠিক এই পরিস্থিতিই তৈরি হয়েছিল মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান ও ছত্তীসগঢ়ের বিধানসভা নির্বাচনে। ‘বিজেপি ইনসাইডার’ বলে একটি টুইটার হ্যান্ডেল রয়েছে, যেটি সাধারণত বিজেপির অন্দরের খবর দেয় বলে দিল্লির অলিন্দে পরিচিত। তাদের অনুমান অনেক সময় মিলেও যায়। গতকাল শনিবার সকালে এই টুইটার থেকেই একটি টুইট করা হয়। যেখানে বলা হয়, দলের সাম্প্রতিকতম অভ্যন্তরীণ সমীক্ষা অনুযায়ী, দেশজুড়ে বিজেপি ১৫০ থেকে ১৬০টি আসনে নেমে আসবে। দলের সব থেকে বেশি লোকসান হবে উত্তরপ্রদেশ, বিহার ও মহারাষ্ট্রে।
কংগ্রেস ঠিক এই ভবিষ্যদ্বাণীটিই অনেক দিন ধরে করে আসছে। তাদের মতে, গত লোকসভা ভোটে বিজেপির একার জোরে পাওয়া ২৮২টি আসন থেকে এক ধাক্কায় শ’খানেক কমে গেলে এনডিএ’র শরিকদের নিয়েও সরকার গড়তে পারবেন না নরেন্দ্র মোদি। কোনো মতে সরকার গড়ার মতো পরিস্থিতিতে পৌঁছাতে পারলেও মোদিকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মেনে নেবে না এনডিএ শরিকরাই। তবে কংগ্রেস মনে করছে, বিজেপির সংখ্যা আরো কমবে।
আর সরকার গড়বে বিরোধীরা মিলেই।
বিজেপি মানছে, বিশেষ করে গত বৃহস্পতিবারের ভোটে মায়াবতী-অখিলেশদের জোট অনেকটাই বাজি মেরেছে। অতীতে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে মেরুকরণ কাজ করত, এবারে সেটিও করছে না। ফলে বিজেপিকেও এখন নতুন করে ভাবতে হচ্ছে, মেরুকরণের উগ্রতা আরো বাড়ানোর প্রয়োজন আছে কি-না। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ গতকাল শনিবার দিল্লিসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রামনবমীর যজ্ঞ করে শোভাযাত্রা করে।
ভোটে হিন্দুদের জয় হোক বলে ধ্বনি তুলেছে। পরের দফার নির্বাচনে বুথের ‘মাইক্রো-ম্যানেজমেন্ট’ নিয়েও নতুন কৌশল তৈরি করছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব।
"