দুলাল বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ

  ২৮ জানুয়ারি, ২০২৪

সেই মায়ের ঠাঁই বৃদ্ধাশ্রমে

যে মা দশ মাস দশ দিন গর্ভে ধারণ ও নিজের সুখ বিসর্জন দিয়ে সন্তানদের বড় করলেন, সেই মাকেই রাস্তায় ফেলে গেলেন সন্তানরা। গোপালগঞ্জে রাস্তায় ফেলে যাওয়া ৯৫ বছর বয়সি এমন এক বৃদ্ধা মায়ের অবশেষে ঠাঁই মিলেছে বৃদ্ধাশ্রমে। রাস্তায় পাওয়ার পর মা রাবিয়া বেগমকে আশ্রয় দেয় সদর থানা পুলিশ।

পুলিশ ধারণা করছে, রাবিয়া বেগম বয়সের ভারে নুয়ে পড়ায় সন্তানরা তাকে রাস্তায় ফেলে গেছে। রাস্তায় পড়ে থাকা বৃদ্ধা রাবিয়া বেগমের চোখ দুটো শুধুই জলে ভাসছিল। এমতাবস্থায় ডাক্তারি পরীক্ষা ও আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে গতকাল শনিবার সকালে রাবিয়া বেগমকে এসিল্যান্ডের নির্দেশ অনুযায়ী গাজীপুরের পূবাইল বৃদ্ধাশ্রমে পাঠানো হয়েছে।

বয়সের ভারে চলাফেরা করতে পারেন না তিনি। স্বামী মারা যাওয়ার পর তার বেঁচে থাকার শেষ আশ্রয় ছিল চার সন্তান। কিন্তু যাদের সারা জীবন আদর ও সোহাগ দিয়ে বড় করছেন আজ তাদের কাছেই তিনি হয়ে গেলেন বড় বোঝা। গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আনিচুর রহমান বলেন, দুদিন আগে জেলা শহরের থানাপাড়া মোড়ে রাবিয়া বেগমকে পড়ে থাকতে দেখেন ওই এলাকার রাব্বি সরদারসহ কয়েকজন যুবক।

তারা ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। পরে বৃদ্ধাকে পাঠানো হয় গোপালগঞ্জ সদরের এসিল্যান্ডের কাছে। রাবিয়া বেগমের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। এদিকে, বয়সের কারণে খুব বেশি কথা বলতে না পারা রাবিয়া বেগম নিজের নাম আর তার চার ছেলে-মেয়ে রয়েছে বলে জানান। এর বাইরে তিনি কিছুই বলতে পারেননি। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নিপা ব্যাপারী বলেন, শতবর্ষী এই বৃদ্ধার শারীরিক অবস্থা তেমন ভালো নয়।

তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন ও বুকে ব্যথা রয়েছে। স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর পুলিশ তাকে নিয়ে চলে যায়। সমাজসেবা অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী পরিচালক সুলতানা জাহিদ পারভীন বলেন, গাজীপুরের পূবাইল বৃদ্ধাশ্রমে পাঠানো হয়েছে। সেখানে ওই বৃদ্ধা হয়তো ভালো থাকবেন। গোপালগঞ্জ জেলা সুজনের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ অধিকারী বলেন, বৃদ্ধ বাবা-মাকে রাস্তায় ফেলে দেওয়া খুবই হৃদয় বিদারক। যা সমাজের চরম অবক্ষয় প্রমাণ করে। সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দোষীদের আইনের আওতায় আনা দরকার।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close