ভৈরব (কিশোরঞ্জ) প্রতিনিধি

  ০৯ মে, ২০২৪

ভৈরবে মাইকে ঘোষণা দিয়ে সংঘর্ষ, আহত শতাধিক

২৫ বাড়িঘর ও দোকান ভাঙচুর লুটপাট

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে পূর্ব বিরোধের জের ধরে মাইকে ঘোষণা দিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষে শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার ও মঙ্গলবার রাতে আগানগরের আনন্দ বাজার এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় ২৫টি বাড়িঘর-দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ মো. সফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলার আগানগর গ্রামের দক্ষিণ পাড়ার সরুল্লা বাড়ি, উত্তর পাড়ার আফিল উদ্দিন মিয়ার বাড়ি ও ব্যাপারি বাড়ির লোকজনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জিল্লুর রহমান স্কুল অ্যান্ড কলেজের ম্যানেজিং কমিটি ও বিদ্যালয়ের পাশের বাজারে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল। গত ২২ এপ্রিল ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অতিথি প্যানেলের নাম নিয়ে ঝগড়া হয়। গত মঙ্গলবার বিকেলে ড্রেজারের পাইপ চুরি নিয়ে দুপক্ষের লোকজনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এসময় উত্তরপাড়ার আফিল উদ্দিন মিয়ার বাড়ি ও ব্যাপারি বাড়ির লোকজন মাইকে ঘোষণা দিয়ে দা, বল্লম, লাঠিসোটা ও ইটপাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এতে দুপক্ষের ৫০ জন আহত হন।

এ ঘটনার জের ধরে গতকাল সকাল ৭টায় দুপক্ষ আবারও সংঘর্ষে জড়ায়। এসময় মমতাজ চেয়ারম্যান গ্রুপের লোকজন উত্তর পাড়া ও মধ্যপাড়ার ২০ থেকে ২৫ বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করে। দুই দফা সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত শতাধিক লোক আহত হয়েছেন। গুরুতর আহতের মধ্যে সোহরাফ মিয়া, মোবারক হোসেন, কাউসার মিয়া, জাহাঙ্গীর হোসেন, রাশিদ মিয়া, জীবন মিয়া ও মোরাদ মিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া বাকিরা ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।

সরুল্লা বাড়ির শুক্কুর মিয়া ও বাছির মিয়া বলেন, মঙ্গলবার রাতে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষ নিয়ে গণসংযোগে গেলে পথিমধ্যে আক্কাস মিয়া তার লোকজন নিয়ে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। পরে তারা স্থানীয় একটি মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে দ্বন্দ্বে জড়ায়। আজ সকালে (গতকাল) তারা আনন্দ বাজারে আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভাঙচুর করে। এর জের ধরে আবারও সংঘর্ষ হয়।

ব্যাপারি বাড়ির পক্ষে সাইফুল ইসলাম সুমন বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন নিয়ে পূর্ব থেকেই দ্বন্দ্ব ছিল। মঙ্গলবার রাতের ঘটনার রেশ ধরে শুক্কুর মিয়াসহ সারুল্লা বাড়ির লোকজন আজ (গতকাল) সকালে আনন্দবাজার দখল ও বাজারের পাশের আক্কাস মিয়ার বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এছাড়া মধ্যপাড়ায় বাড়িঘর, দোকানপাট ভাঙচুর ও লুটপাট করে’।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসক ডা. সোয়েব রহমান বলেন, আজ (গতকাল) ৪৮ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে ১ জনকে হাতপাতালে ভর্তি ও গুরুতর ৮ জনকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার রাতে ৩০ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে ৪ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ৫ জনকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়।

ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। দুপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close