নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২২ জানুয়ারি, ২০২৩

স্যানিটেশন সুবিধা বাড়ছে ২৫ পৌরসভায়

জেলা শহরের ২৫টি পৌরসভায় নিরাপদ ও টেকসই স্যানিটেশন ব্যবস্থা এবং সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য, জীবনযাত্রার মান ও পরিবেশব্যবস্থার উন্নয়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের উদ্যোগে ‘বাংলাদেশের ২৫টি শহরে অন্তর্ভুক্তিমূলক স্যানিটেশন’ শীর্ষক প্রকল্প গ্র্রহণ করা হয়েছে। এ জন্য প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ২১০ কোটি ৭০ লাখ ৭৪ হাজার টাকা।

২০২২ সালের অক্টোবরে শুরু হওয়া প্রকল্পটি শতভাগ বাস্তবায়ন হবে ২০২৭ সালের ৩০ জুন মেয়াদে। দেশের ৮ বিভাগের (ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেট, ময়মনসিংহ ও রংপুর) মনোনীত ২৫টি জেলা সদরের ২৫টি পৌরসভায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানিয়েছে, স্থানীয় সরকার বিভাগের উদ্যোগে নেওয়া প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। প্রাক্কলিত ব্যয়ের ২ হাজার ২১০ কোটি ৭০ লাখ ৭৪ হাজার টাকার মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল (জিওবি) থেকে জোগান দেওয়া হবে ৩২৮ কোটি ৪৯ লাখ ৪০ হাজার টাকা। এর বাইরে এশীয় পরিকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক (এআইআইবি) থেকে প্রকল্প ঋণবাবদ সহায়তা পাওয়া যাবে ১ হাজার ৮৮২ কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার টাকা।

কমিশন জানিয়েছে, বাংলাদেশের জেলা শহরের ২৫টি পৌরসভায় নিরাপদ ও টেকসই স্যানিটেশন সিস্টেম এবং সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য, জীবনযাত্রার মান ও পরিবেশব্যবস্থার উন্নয়নই প্রকল্প গ্রহণের মূল উদ্দেশ্য।

জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় ১২ হাজার ৩১২টি হাউসহোল্ড ল্যাট্রিন ও ১ হাজার ৩৫০টি কমিউনিটি ল্যাট্রিন, ১৩০টি পাবলিক টয়লেট ও ১৭৩টি ডি-ওয়াট সিস্টেম, ৩১ হাজার ৪৯৬টি পয়োবর্জ্য ধারক বা কন্টেইনমেন্ট সিস্টেম ও ২৭টি পয়োবর্জ্য বা ফেকাল সøাজ ড্রাইং সিস্টেম, ৩০টি কঠিন বর্জ্য বা সলিড ওয়েস্ট ব্যবস্থাপনা প্ল্যান্ট (সর্টিং, কম্পোস্টিং, ল্যান্ড ফিলিং, তরল বর্জ্য পরিশোধন বা লিচেট ট্রিটমেন্ট) ও ৩২টি কঠিন ও পয়োবর্জ্য পরিশোধনাগার নির্মাণ করা হবে। সম্পদে পরিবর্তন, পুনর্ব্যবহার ও রূপান্তরের লক্ষ্যে আধুনিক, উদ্ভাবন সমৃদ্ধ, যান্ত্রিক প্রযুক্তি, ৩৪৭ কিলোমিটার বিভিন্ন ধরনের আরসিসি ড্রেন, ৩০টি উৎপাদক নলকূপ, ১০০ কিলোমিটার পাইপ লাইন, ১০০টি ডিসøাজিং ট্রাক ও ৫০টি ডাম্প ট্রাক, ২৭০টি কঠিন বর্জ্য সংগ্রাহক ভ্যান ও ৮১০টি হ্যান্ড ট্রলি এবং ২৫টি এক্সকাভেটর সংগ্রহ করা হবে।

সূত্র আরো জানায়, প্রকল্পটি চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত নেই। তবে প্রকল্পটি প্রক্রিয়াকরণের লক্ষ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয় প্রোগ্রামিং কমিটির সুপারিশ গ্রহণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্ধারিত ছক পূরণ করে সারসংক্ষেপ কার্যক্রম বিভাগে পাঠানো হয়েছে। এ প্রকল্পের বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রীর নীতিগত অনুমোদন গ্রহণপূর্বক পিডিপিপি ইআরডিতে পাঠানো হয়েছে। পিডিপিপির ধারাবাহিকতায় প্রকল্পটি অনুমোদনের প্রক্রিয়া করা হয়েছে।

সরকারের অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার অধ্যায়-৯-এর অনুচ্ছেদণ্ড৯.৯.২ এ সবার জন্য নিরাপদ পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন নিশ্চিত করার বিষয়ে অগ্রাধিকার প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া আরবান ডেভেলপমেন্ট খাতে শহর এলাকায় ২০২৫ সালের মধ্যে স্যানিটেশন সুবিধা ১০০ শতাংশ এবং প্রতিদিন কঠিন বর্জ্য সংগ্রহে ৭৫ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রস্তাবিত প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের ১০টি অগ্রাধিকারভিত্তিক শহরে সমন্বিত স্যানিটেশন ও হাইজিন কার্যক্রম ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হবে বিধায় প্রকল্পটি সরকারের অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ।

একনেকে অনুমোদনের স্বপক্ষে পরিকল্পনা কমিশন প্রকল্পটি সম্পর্কে দেওয়া মতামতে বলেছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ২৫টি জেলা শহরের সদর পৌরসভায় নিরাপদ স্যানিটেশন বাস্তবায়ন এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের মাধ্যমে শহরগুলোর পরিবেশ সংরক্ষণ এবং বসবাসরত জনগণের স্বাস্থ্য ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করা সম্ভব হবে। এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাবিত ‘বাংলাদেশের ২৫টি শহরে অন্তর্ভুক্তিমূলক স্যানিটেশন প্রকল্প (জিওবি-এআইআইবি)’ শীর্ষক প্রকল্পটি ২ হাজার ২১০ কোটি ৭০ লাখ ৭৪ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে এবং ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৭ সালের জুন মেয়াদে বাস্তবায়নের নিমিত্ত একনেকের অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।

পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম সম্প্রতি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, প্রস্তাবিত প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের ১০টি অগ্রাধিকারভিত্তিক শহরে সমন্বিত স্যানিটেশন ও হাইজিন কার্যক্রম ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হবে বিধায় প্রকল্পটি সরকারের অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। এছাড়া প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ২৫টি জেলা শহরের সদর পৌরসভায় নিরাপদ স্যানিটেশন বাস্তবায়ন এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের মাধ্যমে শহরগুলোর পরিবেশ সংরক্ষণ এবং বসবাসরত জনগণের স্বাস্থ্য ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করা সম্ভব হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close