নিজস্ব প্রতিবেদক
মুক্তি পেলেন সম্রাট, আছেন হাসপাতালেই
ক্যাসিনোকাণ্ডে আলোচিত বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা ইসমাইল হোসেন সম্রাট সব মামলায় জামিন পাওয়ার পর মুক্তি পেয়েছেন। এতদিন তিনি কারা তত্ত্বাবধায়নে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গতকাল বুধবার বিকালে সেখানেই তার মুক্তির আনুষ্ঠানিকতা সারা হয়।
কারাগার থেকে মুক্তি পেলেও চিকিৎসার জন্য এখনো তাকে হাসপাতালের ‘ডি’ ব্লকের সিসিইউতে ভর্তি রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার আবদুস সেলিম।
তিনি বলেন, ‘এখন থেকে উনি (সম্রাট) আমাদের অধীনে নেই; তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অধীনে।’
সম্রাটের বিরুদ্ধে চারটি মামলার মধ্যে তিনটিতে আগেই জামিন হয়েছিল। সর্বশেষ বুধবার অবৈধ সম্পদের মামলায় জামিন পেলে তার মুক্তির পথ খুলে যায়।
ঢাকার ৬ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান গতকাল বুধবার সম্রাটের আবেদনের শুনানি করে তার জামিন মঞ্জুর করেন। এর আগে একই বিচারক দুই দফা এ মামলায় জামিন নাকচ করেছিলেন।
এ মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য আসামিপক্ষ সময়ের আবেদন করলে বিচারক আগামী ৯ জুন নতুন তারিখ ধার্য করেন। সম্রাটের বিরুদ্ধে থাকা চার মামলার মধ্যে অস্ত্র ও অর্থ পাচারের দুই মামলায় গত ১০ এপ্রিল এবং পরদিন মাদক মামলায় তাকে জামিন দেয় আদালত। এছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালতের দেওয়া ছয় মাসের সাজাও অনেক আগেই শেষ হয়েছে।
২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম দুই কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগে সম্রাটের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, সম্রাট বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে জ্ঞাত আয়-বহির্ভূত এই বিপুল সম্পদ অর্জন করেছেন। তিনি মতিঝিল ও ফকিরাপুল এলাকায় ১৭টি ক্লাব নিয়ন্ত্রণ করতেন এবং সেগুলোতে লোক বসিয়ে মোটা অঙ্কের কমিশন নিতেন বলেও অভিযোগ আছে। অনেক সময় ক্লাবগুলোতে ক্যাসিনো ব্যবসা পরিচালনা করতেন।
মামলাটি তদন্ত করে ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম। এরপর গত ২২ মার্চ অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য মামলাটি ৬ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে পাঠানো হয়।
২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার মতিঝিলের ক্লাবপাড়ায় র্যাবের অভিযানে অবৈধ ক্যাসিনো চলার বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে আত্মগোপনে চলে যান ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট।
এরপর ৭ অক্টোবর কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে সম্রাট ও তার সহযোগী এনামুল হক আরমানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
রমনা থানার অস্ত্র মামলায় ওই বছর ৬ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এরপর ১২ নভেম্বর তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা করে দুদক।
আর অর্থ পাচারের মামলা হয় ২০২০ সালের ১২ সেপ্টেম্বর। গত ৯ ডিসেম্বর মাদক মামলায় সম্রাট ও সহযোগী আরমানের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে র্যাব।
"