প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ০৯ মে, ২০২২

রংতুলিতে প্রবালের দুঃখ

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে জীবজগতের ক্ষতি হচ্ছে। প্রবাল প্রাচীরের মারাত্মক বিপর্যয় দেখিয়ে দিতে দুই শিল্পী অভিনব পদ্ধতিতে সমুদ্রের নিচের সেই বিপর্যয় সাধারণ মানুষের সামনে ফুটিয়ে তুলে, অনেকে বলেছেন তাদের এই কাজ সমুদ্র তলে প্রবালের দুঃখ চিত্রণ। দূর থেকে শিল্পী মার্গারেট ও ক্রিস্টিনে ভেয়ার্টহাইমের ইনস্টলেশন দেখলে খাঁটি প্রবাল প্রাচীর মনে হতে পারে। তাতে রংবেরঙের কোরাল, অ্যালজি ও ঝিনুক শোভা পাচ্ছে। কাছে এলে তবেই বোঝা যাবে সবই হাতে করা কাজ। বাডেন-বাডেন শহরের ফ্রিডার বুর্ডা মিউজিয়ামে সেই সৃষ্টিকর্ম শোভা পাচ্ছে। মার্গারেট বলেন, ‘আমরা এই সৃষ্টিকর্মকে যতটা সম্ভব জীবন্ত ও প্রাণবন্ত হিসেবে তুলে ধরতে চাই। বাডেন-বাডেনের কর্মীরা সত্যি সেই লক্ষ্য পূরণ করতে পেরেছে বলে মনে করি। এই জগৎ জীবনীশক্তিতে ভরপুর।’ ক্রিস্টিনে ভেয়ার্টহাইম মনে করেন যে চেষ্টাও করতে হয়নি। কর্মীরা এই সজ্জার জন্য প্রাণ উজাড় করে দিয়েছেন।’

‘ক্রকেট কোরাল রিফ’ নামের প্রদর্শনী প্রবাল প্রাচীরের রঙিন সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্য তুলে ধরে। সমুদ্রের নিচে অসাধারণ এই জগতের বিপদ বেড়েই চলেছে, এমনকি অস্তিত্বের সংকটও দেখা দিচ্ছে। সেই হুমকির প্রাথমিক চিহ্ন এরই মধ্যে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, যেমনটা অস্ট্রেলিয়ার ‘গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ’-এ টের পাওয়া যায়।

সমুদ্রের পানির তাপমাত্রা সামান্য বাড়লেই মারাত্মক প্রভাব দেখা যায়। প্রবালের সঙ্গে পারস্পরিক নির্ভরতার ভিত্তিতে যে অ্যালজি বা শৈবাল বাস করে, সেগুলো তখন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। সাদা চুনের মতো দেখতে কঙ্কাল থেকে যায়। দুই শিল্পী তাদের প্রদর্শনীতে সেই প্রবাল ব্লিচিংও তুলে ধরছেন এবং সবার প্রতি কাতর আবেদন জানাচ্ছেন। মার্গারেট ভেয়ার্টহাইম জানান, ‘গত প্রায় ২০ বছর ধরে বিশাল আকারে প্রবালের ব্লিচিং চলছে। বিশাল পরিমাণ কোরাল সাদা হয়ে যাচ্ছে। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে এমনটা ঘটছে, সমুদ্রের তাপমাত্রা বাড়ছে। প্রবাল ক্ষুদ্র এবং অত্যন্ত সংবেদনশীল জীব। সেগুলো এক ডিগ্রির বেশি উত্তাপ বৃদ্ধি সহ্য করতে পারে না।’

১৭ বছর ধরে দুই বোন একাধিক দেশ ঘুরে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করে চলেছেন। যেখানেই যাচ্ছেন, সেই অঞ্চলের মানুষকে প্রবাল দিয়ে তথাকথিত ‘স্যাটেলাইট রিফ’ ক্রচেট করতে আহ্বান জানাচ্ছেন। সান্ড্রা স্টাডলারের চারিপাশের নারীরাও প্রদর্শনীতে অবদান রাখতে চান। তিনি বলেন, ‘প্রকৃতি, প্রাণী ও প্রজাতি বিলুপ্তির প্রশ্নে আমি ও আমার কর্মীরা এক পায়ে খাড়া। আমাদের কাছেও বিষয়টির গুরুত্ব রয়েছে বলে শামিল হতে চাই।’ সব প্রবালের কিছু মৌলিক আকার রয়েছে। দুই শিল্পীর নির্দেশ অনুযায়ী সেগুলো তৈরি করা হয়। প্রকৃতির মতোই বিভিন্ন রং, সুতা ও সংযোগের মাধ্যমে নতুন সৃষ্টি গড়ে ওঠে। এক দিকে প্রকৃত প্রবাল প্রাচীরের সজীব চরিত্র, অন্যদিকে সেগুলোর অস্তিত্বের সংকট সম্পর্কে এভাবে সচেতন করে তোলার চেষ্টা চলে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close